হোটেল কক্ষ্যে এক সাথে কিছু ঘনিষ্ট মুহুর্ত কাটানোর লক্ষ্যে গিয়েছিলেন দুই প্রেমিক-প্রেমিকা। যখন ঘনিষ্ট মুহুর্তে একসাথে দুইজন ঠিক সেই মুহুর্তে হঠাৎ করেই প্রেমিক, প্রেমিকার সামনে খাটের উপরে মূখ থুবরে পরেন। ঘটনার পরপরই প্রেমিক অজ্ঞান হয়ে যায়। প্রেমিকের এই দৃশ্য দেখে প্রেমিকা রীতিমত ভয় পেয়ে যায়।
ভারতের মহারাষ্ট্রের নাগপুরে বান্ধবীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কের সময় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ২৮ বছর বয়সী এক ব্যক্তির প্রয়ান হয়েছে। রবিবার নাগপুরের সাউনার এলাকার একটি হোটেলে এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে টাইমস অব ইন্ডিয়া। প্রয়াত যুবকের নাম অজয় পারতেকী বলে জানা গেছে। বান্ধবীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কের সময় তিনি প্রয়াত হন। পারতেকি প্রাথমিকভাবে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ওই যুবক ও তার বান্ধবী কোনো ওষুধ খাচ্ছেন বলে কোনো প্রমাণ পায়নি পুলিশ। মহারাষ্ট্র পুলিশ জানিয়েছে, অজয় পারতেকি গত কয়েকদিন ধরে জ্বরে ভুগছিলেন, তার পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন। পেশায় চালক হলেও ওয়েল্ডিং টেকনিশিয়ানের কাজও করতেন। গত তিন বছর ধরে মধ্যপ্রদেশের চিন্দওয়ারায় ২৩ বছর বয়সী এক নার্সের সঙ্গে পারতেকির প্রেমের সম্পর্ক ছিল। দুজনের পরিবারের সদস্যরা তাদের প্রেম সম্পর্কে অবগত ছিলেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেস\\ বুকে দুজনের পরিচয় হয়। প্রেমিকার মাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন পারতেকি। কিছুদিনের মধ্যে বিয়ে করার পরিকল্পনাও ছিল তাদের।
পুলিশ বলছে, রোববার স্থানীয় সময় বিকেল ৪টার দিকে নাগপুরের সাউনার একটি হোটেলে ওই প্রেমিক-প্রেমিকারা যান। পরে প্রেমিকার সঙ্গে অন্তরঙ্গ মুহূর্ত কাটাতে গিয়ে বিছানায় পড়ে যান তিনি। ওই তরুণী হোটেল কর্তৃপক্ষকে জানান, তার প্রেমিক অসুস্থ হয়ে পড়েছে। পরে তাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে পৌঁছালে চিকিৎসক পারতেকীকে প্রয়াত ঘোষণা করেন। সানোয়ার থানার সহকারী পুলিশ পরিদর্শক (এপিআই) সাতোয়ার পাতিল বলেছেন, মেয়েটি তাকে বলেছিল যে, সময় কাটানোর জন্য এসেছিলাম, কিছু করার আগেই মারা গেছে সে, অন্তরঙ্গ মুহূর্তে ব্যস্ত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। প্রয়াত যুবকের কাছে কোনো নিষিদ্ধ দ্রব্য পাওয়া যায়নি। এমনকি তার কাছে নিষিদ্ধ দ্রব্যের কোনো প্যাকেট বা প্যাকেটও ছিল না। এছাড়া তার সামনে কিছু খেতে পারছেন না বলে জানান ওই তরুণী। পুলিশ কর্মকর্তা জানান, প্রয়াত যুবকের ভিসেরা ও রক্ত রাসায়নিক পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তে চিকিৎসকরা প্রাথমিকভাবে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে সম্ভাব্য হার্ট অ্যাটাকে ওই যুবকের প্রয়ান হয়েছে। এ ঘটনায় সানোয়ার থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।
ভারতের প্রখ্যাত হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ আনন্দ সঞ্চেতি বলেন, শারীরিক মিলনের সময় হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে প্রয়াত হওয়া বিরল ঘটনা। তবে এ ধরনের ঘটনা অসম্ভব নয়। করোনারি ধমনী রোগ ২০ বছরের বেশি বয়সী যুবকদের মধ্যে মারাত্মক হতে পারে যদি তাদের নির্ণয় করা না হয়। আমরা এখন তরুণদের হৃদয়ে ব্লক খুঁজে পাচ্ছি। যদি কেউ এই রোগের চিকিৎসা না নেয়, তবে কঠোর পরিশ্রমের সময় যেমন: শারীরিক মিলন, এটা মারাত্মক হতে পারে। পারতেকির ক্ষেত্রে উল্লেখ করে, তিনি ২৫ বছর বয়সে হার্ট টেস্টের পরামর্শ দিয়েছিলেন। বিষয়টি ব্যাখ্যা করে, সঞ্চেতি বলেছিলেন যে শারীরিক পরিশ্রমের সময়, হৃদপিণ্ডের পেশীগুলিতে উচ্চ রক্ত এবং অক্সিজেন প্রবাহের প্রয়োজন হয়। যা শরীর থেকে সরবরাহ না করলে মারাত্মক হয়ে উঠতে পারে। তিনি বলেন, যারা হাইপারট্রফিক কার্ডিওমায়োপ্যাথি (হৃদপিণ্ডের পেশী ঘন হওয়া) রোগে ভুগছেন তারাও শারীরিক সম্পর্কের সময়ে প্রয়াত হতে পারেন।
উল্লেখ্য, হোটেল রুমে প্রেমিক, প্রেমিকার ঘনিষ্ট মুহুর্তে হঠাৎ করেই প্রেমিকার সামনেই প্রেমিক হোটেলের খাটের ওপরে মুখ থুবরে পড়ে অজ্ঞান হয়ে যায়। প্রেমিকের এই দৃশ্য দেখে প্রেমিকা রীতিমত ভয় পেয়ে যায়। সেই সময়ে প্রেমিকা তার প্রেমিককে হোটেল কতৃপক্ষ্যের সহায়তায় হাসপাতালে নিয়ে যায়।হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে প্রয়াত ঘোষনা করে।