কিশোরগঞ্জ জেলার কটিয়াদী উপজেলায় একটি ওয়াজ মাহফিলে উপস্থিত হন বিএনপি’র সাবেক সংসদ সদস্য এবং বর্তমান বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত নেতা মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান রঞ্জন। জানা গেছে তিনি মঞ্চে দাঁড়িয়ে একজন বক্তার বক্তব্যকে ভুল ধরে সমালোচনা করতে থাকেন। এরপর সেখানে হট্টগোল শুরু হয় এবং একপর্যায়ে তার দিকে জুতা নিক্ষেপ করে উপস্থিত লোকেরা। এই ঘটনার পর তিনি তার কথা ভূল ছিল এমনটি জানিয়ে ক্ষমা চান সাবেক এই এমপি।
মেজর অব. আখতার নামে ফেসবুক আইডি থেকে রোববার রাতে লাইভে এসে তিনি বলেন, আমি এই মুহূর্তে চট্টগ্রামে হযরত আমানত শাহ (রহ.) মাজার থেকে বলছি। সকালে চট্টগ্রামে এসে সারাদিন কাজ করেছি, এখন রাতে মাজারে এসে মাজার জিয়ারত করেছি। আজ সারাদিন অনেকেই অনেক কথা বলেছেন – আপনাদের কথা আমি শিরোধার্য মাথা পেতে নিলাম। যদি আমার কোন ভুলভ্রান্তি বা বক্তব্য আপনাদের মনে পীড়ার কারণ হয় বা কষ্ট দিয়ে থাকে, এতে আপনারা আমাকে যে গালিগালাজ করেছেন তার জন্য আমার কোনো অভিযোগ নাই। আপনারা আপনাদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করেছেন যার কারনে আমার কোনো দূ:খ নাই, সবকিছু মাথাপেতে নিয়েছি। আমার কথায় আপনারা কষ্ট পেয়ে থাকলে আমি আপনাদের সবার কাছে আন্তরিকভাবে ক্ষমাপ্রার্থী। আমি আশা করি এই বিষয়ে কারো কিছু বলার থাকলে আমাকে ফোন করবেন, যেখানেই ডাকবেন আমি এসে আপনাদের সবার সাথে কথা বলবো। আমার বক্তব্য সঠিক না ভুল আপনারা বিচার করবেন। আমি আমার বক্তব্য আপনাদের সামনে তুলে ধরার সুযোগ চাই।
উল্লেখ্য, ২৯ অক্টোবর ২০২২ শনিবার দিবাগত রাতে সহশ্রাম ধুলদিয়া ইউনিয়ন ইমাম ওলামা পরিষদের উদ্যোগে গচিহাটা কলেজ মাঠে প্রথম বার্ষিকী তাফসিরুল কুরআন মাহফিলের আয়োজন করা হয়। জামিয়া আশরাফিয়া মাদ্রাসার শায়খুল হাদিস মাওলানা মুফতি আরিফ বিন হাবীব, জামিয়া আশরাফিয়া মাদরাসার মুহতামিম মাহফিল ঢাকার লালবাগে বিশেষ বক্তা হিসেবে ওয়াজ প্রদান করেন। সমসাময়িক কিছু ইসলামী ইবাদত নিয়ে আলোচনা করেছেন। সেখানে তিনি বলেন, আমরা যেসব বিষয় পালন করি অনেক কিছুই কোরআন-হাদিসে নেই। তাই ইসলামকে সঠিকভাবে পালন করতে হবে।
তার বক্তব্যের পর মঞ্চে বসা বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান রঞ্জন মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে বলেন, ‘হুজুর যা বলছেন তা খুবই ভুল। এই বক্তব্য নিয়েই সমস্যা দেখা দিয়েছে।
এসময় ওয়াজে যোগ দেওয়া মুসল্লিরা তাকে মাইক ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য বারবার অনুরোধ করেন। কিন্তু সেই অনুরোধের তোয়াক্কা না করেই, তিনি তার ইচ্ছামত বক্তব্য দিতে থাকেন। এক পর্যায়ে উপস্থিত জনতাকে ধমক দিয়ে তাদেরকে চুপ থাকার জন্য বলেন। এরপর সেখানকার পরিস্থিতি ভিন্ন দিকে চলে যায় এবং উপস্থিত জনতারা আরো বেশি উত্তেজিত হয়ে পড়ে এবং সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূরের দিকে একের পর এক জুতা ছুড়তে শুরু করেন। এ ঘটনার পর থেকে আয়োজক কমিটি তাকে মঞ্চ থেকে সরিয়ে নিয়ে যায়।