আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহন করছে নির্বাচন কমিশন। সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ সকল দলের অংশগ্রহনে গ্রহনযোগ্য নির্বাচন করতে বদ্ধপরিকর নির্বাচন কমিশন। যার ধারাবাহিকতায় রাজনৈতিক দলসহ সুধী সমাজের সঙ্গে সংলাপ করেছে নির্বাচন কমিশন। তবে কোনো দল নির্বাচনে অংশহগ্রহন না করলে কমিশনের কিছুর করার নেই সংবিধান অনুযায়ী সঠিক সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে বাধ্য নির্বাচন কমিশন বলে জানান (ইসি) মো. আলমগীর। কোনো দল এলেও নির্বাচন হবে, না এলেও হবে মন্তব্য করে যা বললেন (ইসি) মো. আলমগীর।
নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আলমগীর বলেছেন, সময়মতো সংসদ নির্বাচন না হলে ইসিকে সংবিধান লঙ্ঘনের জন্য দায়ী হতে হবে। তাই কোনো একটা দল না এলেও নির্বাচন করতে হবে। রাজনৈতিক সংলাপে বেশিরভাগ দল ইভিএমের পক্ষে ছিল বলেও দাবি করেন তিনি।
বৃহস্পতিবার নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। বিএনপি না এলেও নির্বাচন হবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কারো নাম বলব না। আমরা বলব, কোনো দল আসুক বা না আসুক নির্বাচন হবে।
তিনি আরও বলেন, কোনো দলকে নির্বাচনে আনা বা না আনার দায়িত্ব ইসির নয়। সংবিধানের কোথাও তাদের এই দায়িত্ব দেওয়া হয়নি।
ইভিএমে ভোটের সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক ইসি সচিব আলমগীর বলেন, “আমরা ৩৯টি দলের কথাকে মূল্যায়ন করেছি। আমাদের চোখে সবাই সমান। তারা যা বলেছে তার রেকর্ড আমাদের কাছে আছে। সেগুলোর ভিত্তিতেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সেখানে দেখা গেছে, বেশির ভাগ দলই ইভিএমের পক্ষে ছিল, তাই কারো কথাকে আমরা উপেক্ষা করেছি- এই বক্তব্য গ্রহণযোগ্য নয়।
ইভিএমের কারণে যদি আরও কয়েকটি দল নির্বাচনে না আসে, তাহলে এই সিদ্ধান্ত হবে আত্মঘাতী, এমন প্রশ্নের জবাবে আলমগীর বলেন, সংবিধান বলছে যারা আগ্রহী তাদের নির্বাচন করবে নির্বাচন কমিশন। সব রাজনৈতিক দলকে নিয়ে নির্বাচন করতে হবে, এ কথা কিন্তু বলা হয়নি। একটি দলের সামর্থ্য নাও থাকতে পারে। আমাদের দিনক্ষণ গুনে কিন্তু নির্বাচন করতে হবে। কোনো দলের বা একাধিক দলের অভ্যন্তরীণ সমস্যা থাকতে পারে। অপেক্ষা করেন, এখনও তো এক বছর সময় আছে, আসতেও পারে।
সংসদ নির্বাচনে ইভিএম কোথায় ব্যবহার করা যাবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সিটিতে কিছু মানুষের মতামত রয়েছে। কারণ এখানে শিক্ষিত লোক বেশি, প্রশিক্ষণ শহরে দেওয়া হয়েছে, সিটিসহ অন্যান্য নির্বাচন হয়েছে শহরে। তাই নগরীতে ইভিএম দেওয়ার মত আছে। অনেকে বলেছেন, গ্রামে না দিলে তারা জানতে পারবে না। এগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ফাইনাল হবে তপশিলের সময়।
তিনি বলেন, বর্তমানে ৭০ থেকে ৮০টি আসনে ইভিএমে ভোট গ্রহণের ক্ষমতা রয়েছে। তখন কতটা হবে বলা যাবে। দেখা গেল মেশিনের ধারণক্ষমতা আছে বা নেই, তখন ৭০-৮০ হতে পারে, আবার ৫০ হতে পারে। কিন্তু ১৫০-এর বেশি হবে না। সর্বনিম্ন ৭০-৮০ ধরে রাখুন। কোনো কারণে নতুন মেশিন কিনতে না পারলে বা ফান্ড না পেলেও তো কিনতে পারব না। ১৫০টি আসনের জন্য আনুমানিক দেড় থেকে দুই লাখ আরও ইভিএম কিনতে হবে।বিদেশি কোম্পানি কত দাম চায়, প্রশিক্ষণের বিষয় আছে, ওই সময় ডলারের দাম কত থাকবে, এসব বিষয় নিয়ে প্রকল্প নেওয়া হবে।
আস্থার সংকট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন আস্থা অর্জন করেছে তা বলা যাবে না। কোনো বিচারক দু’পক্ষে রায় দিতে পারবেন না।। ইসিও আইন মেনে ন্যায়বিচার করবে। উভয় দলকে খুশি করার ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের নেই।
নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েনের বিষয়ে তিনি বলেন, ইভিএমের প্রযুক্তিগত সহায়তা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় তারা স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করবে। এর বাইরে অন্য কোনো ভূমিকা রাখার সুযোগ নেই। যেখানে প্রয়োজন, ডাকলেই আসবে। এত লোকবল তো তাদের নেই। পুলিশ, বিজিবি, আনসারের মতো প্রতিটি কেন্দ্রে তাদের রাখা সম্ভব নয়। উত্তেজিত জনতা নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে সেনাবাহিনীর সহায়তা চাওয়া হয়। এটাই নিয়ম। আইন তাই বলে।
প্রসঙ্গত, সংবিধানের বাহিরে কিছু করার ক্ষমতা নেই নির্বাচন কমিশনের বলে মন্তব্য করেন (ইসি) মো. আলমগীর। নিয়মের বাহিরে যাওয়া সম্ভব নয় নিময় মেনেই কাজ করবে নির্বাচন কমিশন কোনো্ দলের হয়ে কমিশনের কাজ করার সুযোগ নেই।