Thursday , November 14 2024
Breaking News
Home / Countrywide / সব উপর আল্লাহর ইচ্ছা, ইনশাল্লাহ আমি ঠিক আছি, সফরে যাচ্ছি, মারাও তো যেতে পারি : মোমেন

সব উপর আল্লাহর ইচ্ছা, ইনশাল্লাহ আমি ঠিক আছি, সফরে যাচ্ছি, মারাও তো যেতে পারি : মোমেন

সম্প্রতি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ভারত প্রসঙ্গে বক্তব্য দেওয়াকে কেন্দ্র করে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয় দলসহ বিভিন্ন মহলে। যদিও পরে তিনি এই বক্তব্যের ব্যাখ্যা দেন কিন্তু বিষয়টি নিয়ে দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ অসন্তোস প্রকাশ করেন। অনেক তার পদ ত্যাগের দাবি করলেও বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী দেখছেন বলে জানান দলের সাধারন সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এমন বিতর্কের কারনে প্রধানমন্ত্রীর সাথে ভারত সফর করার থাকলেও শেষ পর্যন্ত বাদ পড়েন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন, আশায় ‘পুরোপুরি ফিট’ মোমেন এ প্রসঙ্গে যা বললেন তিনি।

জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে বৃহস্পতিবার রাতে প্রধানমন্ত্রীর যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়বেন প্রধানমন্ত্রী। ভারত সফরের মতো এবারও বাদ পড়ে যাচ্ছেন কি না, এমন প্রশ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সব উপর আল্লাহর ইচ্ছা। ইনশাল্লাহ আমি ঠিক আছি। সফরে যাচ্ছি। সব ঠিক আছে। তারপরও সব ঠিক থাকার পরও তো না যেতে পারি। মারাও তো যেতে পারি!’

ভারত সফরের আগে ‘হঠাৎ অসুস্থ’ হয়ে পড়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফর থেকে বাদ পড়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন জানিয়েছেন, তিনি এখন পুরোপুরি সুস্থ।

দেশে ফেরার মাত্র সাতদিন পর জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্র যাচ্ছেন শেখ হাসিনা। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এই সফরে থাকবেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, তার যাওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের আগের দিন ৪ সেপ্টেম্বর মন্ত্রী বলেন, তিনি যাচ্ছেন। পরে দেখা গেল সফরসঙ্গী হিসেবে তার নাম ছিল না। এরপর তার অসুস্থতা এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাও নেন।

প্রধানমন্ত্রীর যুক্তরাষ্ট্র সফরের আগের দিন বুধবার মন্ত্রীর কাছে সাংবাদিকদের প্রশ্ন ছিল, তিনি এবার সরকারপ্রধানের সঙ্গী হবেন নাকি ভারত সফরের মতোই বাদ পড়ছেন।

জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘সব উপর আল্লাহর ইচ্ছা। ইনশাআল্লাহ আমি ঠিক আছি। সব ঠিক আছে। তারপরও সব ঠিক থাকার পরও তো না যেতে পারি। মারাও তো যেতে পারি!’

তার শারীরিক অবস্থা এখন কেমন জানতে চাইলে তিনি বলেন, শতভাগ ফিট । তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ।

জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে বৃহস্পতিবার রাতে প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সব উপর আল্লাহর ইচ্ছা। ইনশাল্লাহ আমি ঠিক আছি। সফরে যাচ্ছি।’

শেখ হাসিনার ভারত সফর থেকে বাদ পড়ার পেছনে তার সাম্প্রতিক কিছু উক্তি কারণ কি না, এমন প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, ‘ওগুলো ভিত্তিহীন, বাড়তি কথা।’

মোমেন কেন আলোচিত

গত ১২ আগস্ট মন্ত্রী বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ব্যাখ্যা করে সিলেটে সাংবাদিকদের বলেন, “বৈশ্বিক মন্দায় অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের মানুষ বেহেশতে আছে। বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কায় পরিণত হবে; একপক্ষ আতঙ্ক ছড়ানোর জন্য এভাবে কথা বলছে।”

মন্ত্রীর বক্তব্য নিয়ে তীব্র সমালোচনা ও ট্রোলের মধ্যে ১৪ আগস্ট সাংবাদিকদের তিনি বলেন, আমি সত্যিকার অর্থে স্বর্গ বলিনি (আক্ষরিক অর্থে) কথার কথা। কিন্তু আপনারা তো সবাই মিলে আমারে খায়া ফেললেন।

গত ১৮ আগস্ট চট্টগ্রামে জন্মাষ্টমীর অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমি ভারতে গিয়ে বলেছি, শেখ হাসিনাকে টিকিয়ে রাখতে হবে। শেখ হাসিনা আমাদের আদর্শ। তাকে টিকিয়ে রাখতে পারলে আমাদের দেশ উন্নয়নের দিকে যাবে এবং সত্যিকারের সাম্প্রদায়িকতামুক্ত, অসাম্প্রদায়িক একটা দেশ হবে। শেখ হাসিনার সরকার টিকিয়ে রাখার জন্য যা যা করা দরকার, আমি ভারতবর্ষের সরকারকে সেটা করতে অনুরোধ করেছি।’

তার এই বক্তব্য ব্যাপক সমালোচনা হলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরই দেন বিরূপ প্রতিক্রিয়া।

ঢাকায় জন্মাষ্টমীর অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে ক্ষমতাসীন দলের দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা বলেন, ‘এটা যে বলেছেন সেটা তার ব্যক্তিগত মতামত হতে পারে। এটা আমাদের সরকারের বক্তব্য নয়, দলের বক্তব্যও নয়। এএই বক্তব্যের কারণে ভারতও লজ্জা পাবে।’

কীভাবে আমরা এই কথা বলি! বন্ধু বন্ধু আছে। অহেতুক কথা বলে এটি নষ্ট করবেন না’- আরও বলেন বিস্মিত আওয়ামী লীগ নেতা।

এদিকে বিষয়টি নিয়ে আবারও গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। গোপালগঞ্জে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের কাছে তার আগের বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকলে ভারতেরও মঙ্গল।

সেদিন তিনি বলেন, ‘আমি ভারত সরকারকে বললাম, আপনার মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন যে শেখ হাসিনা থাকায় স্থিতিশীলতা এসেছে। এই স্থিতিশীলতা আসায় আমাদের দেশেরও মঙ্গল হচ্ছে, আপনার দেশেরও মঙ্গল হচ্ছে। আপনার দেশেও ব্যবসা-বাণিজ্য ভালো হচ্ছে। সুতরাং স্থিতিশীলতা সবচেয়ে ইম্পর্টেন্ট। রাজনৈতিক এবং রাষ্ট্রীয় স্থিতিশীলতা খুব দরকার। তাতে আপনার দেশেরও মঙ্গল হবে, আমাদের দেশেরও মঙ্গল হবে।’

মন্ত্রীর এসব বক্তব্যের পর আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির নেতারা সরকারকে আক্রমণ করে বলছেন, মন্ত্রী সত্য কথা বলেছেন। তাদের দাবি, ভারতের অনুগ্রহে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে।

সপররাষ্ট্রমন্ত্রীর সরকারের জন্য বিব্রতকর বক্তব্য থামছিলই না। মিয়ানমারের গোলা বাংলাদেশ সীমান্তে পড়ার বিষয়ে শনিবার তিনি বলেন, ‘মিয়ানমার থেকে ছোড়া গোলা বাংলাদেশে জঙ্গল এলাকায় পড়েছে। সেগুলো বিস্ফোরিত না হওয়ায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। এটি গুড নিউজ।’

প্রসঙ্গত, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর একের পর এক বক্তব্যে যেন বিতর্কের শেষ হচ্ছে না। এমন পরিস্থিতি তাকে যুক্তরাষ্ট সফরে নেওয়া হবে কিনা প্রশ্ন উঠা কি স্বাভাবিক নয়।

About Babu

Check Also

উপদেষ্টা পরিষদেই বৈষম্য

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে আঞ্চলিক বৈষম্যের অভিযোগ উঠেছে। ২৪ সদস্যের এই পরিষদে ১৩ জনই চট্টগ্রাম …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *