গতকাল সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) ভোর প্রায় ৪ টার দিকে ভয়াবহ ভূমিকম্পের আঘাতে কেঁপে ওঠে তুরস্ক এবং সিরিয়ার অধিকাংশ এলাকা। এই ঘটনায় ঠিক কত মানুষের প্রাণ হানি ঘটেছে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। গতকাল থেকেই রীতিমতো উদ্ধার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে দেশ দুটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তবে এদিকে এবারম এই ভূমিকম্পের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিলেন খানিকটা উদ্ভ্রান্তের মতো চোখমুখ নিয়ে উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ার আজমারিন গ্রামের বাসিন্দা ওসমান আবদেল হামিদ।
সোমবার ভোর। ঘড়ির কাঁটায় সময় ৪টা। সবাই ঘুমে বিভোর। সেই মুহূর্তে ভয়াবহ আকারে কেঁপে ওঠে তুরস্ক এবং সিরিয়ার অধিকাংশ এলাকা।
রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৭.৮। তখন আমরা গভীর ঘুমে মগ্ন। হঠাৎ প্রবল ঝাকুনি শুরু হয়। আমার স্ত্রী ও সন্তান লাফিয়ে উঠল। দিগ্বিদিক হয়ে ওরা দৌড়াতে লাগলো। আমি সদর দরজা খুললাম। আর তখনই আমাদের চারতলা বিল্ডিং ধসে পড়ে। এটি গল্পে শোনা কেয়ামতের নমুনা। কেয়ামত এই মত দেখায়.
আবদেল হামিদ বলেন, চারতলা ভবনে অন্য পরিবারের কেউ বেঁচে নেই। তারা নিজেরা এবং পুরো পরিবার ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়ে। কিন্তু তার এক ছেলে কোনোরকমে পালিয়ে চিৎকার করে প্রতিবেশীদের জড়ো করে। কয়েক ঘণ্টার চেষ্টায় আবদেল হামিদের পুরো পরিবারকে জীবিত উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধারের পর আবদেল হামিদকে স্থানীয় দারকুশ শহরের একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তুরস্কের সীমান্ত থেকে কয়েক মাইল দূরে এই হা’সপাতালে দিন যত বাড়তে থাকে ততই আহত ও’ ‘মৃ’তে”র সংখ্যা বাড়তে থাকে। হ’তা’হ’তদে’র’ একটি বড় সংখ্যক শিশু।
সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) স্থানীয় সময় ভোর ৪:১৭ মিনিটে তুরস্কের সিরিয়া সীমান্তের গাজিয়ানটেপ প্রদেশের কাহরামানমারাস শহরে ৭.৮ মাত্রার ভূমিকম্প ‘আ’ঘা’ত হানে। আর এর ঢেউ লাগে প্রতিবেশী সিরিয়ায়ও।
প্রথমটির ৯ ঘণ্টা পর তুরস্কে ৭.৫ মাত্রার আরেকটি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। সোমবার স্থানীয় সময় দুপুর ১টা ২৪ মিনিটে দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে এটি আঘাত হানে। বিধ্বস্ত হয়েছে আরও কয়েকটি বাড়ি। সিরিয়ার বাইরে লেবানন, ইজরায়েল ও সাইপ্রাসেও প্রথম ভূমিকম্প অনুভূত হয়।
এদিকে দেশটির এক সংবাদ মাধ্যমের আলোকে সর্বশেষ জানা গেছে, তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভয়াবহ এই ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত ৩ হাজারের অধিক মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এবার আহত হয়েছেন অনেকেই।