Thursday , November 14 2024
Breaking News
Home / International / সফর শেষে বাংলাদেশের মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে জাতিসংঘে রিপোর্ট প্রদান করলেন ব্যাচেলেট, কি আছে সেই রিপোর্টে

সফর শেষে বাংলাদেশের মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে জাতিসংঘে রিপোর্ট প্রদান করলেন ব্যাচেলেট, কি আছে সেই রিপোর্টে

সম্প্রতি বাংলাদেশ সফরে এসেছিলেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনরা মিশেল ব্যাচেলেট।তিনি মুলত বাংলাদেশের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয় নিয়ে যাচাই করতে এসেছিলেন। এ দিকে সফর শেষে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেটের রিপোর্ট প্রতিবেদন অনুযায়ী, জাতিসংঘ মানবাধিকার বা অন্যান্য বিষয়ে বাংলাদেশ সম্পর্কে কোনো উদ্বেগ প্রকাশ করেনি।

জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিসের প্রধান হিসেবে মিশেলের চার বছরের মেয়াদ শেষ হবে ৩১ আগস্ট। এ উপলক্ষে ২৫ আগস্ট জেনেভায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে চিলির সাবেক প্রেসিডেন্ট ব্যাচেলেট বিভিন্ন দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি তুলে ধরেন।

মিশেল উল্লেখ করেছেন যে তার আমলে বিশ্ব মৌলিকভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। বৈশ্বিক কো’ভি’ড মহামারীর ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব এবং ইউক্রেনের যুদ্ধের কারণে বিশ্বের দেশগুলিতে তীব্র খাদ্য, জ্বালানি ও আর্থিক সংকট- এই তিনটি বিষয় আজ বিশ্বের প্রধান ইস্যু।

মানবাধিকার লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে মিশেলের প্রতিবেদনে কঙ্গো প্রজাতন্ত্রে নারীদের যৌন নির্যাতনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

জলবায়ু পরিবর্তন এবং অবৈধ খনির কারণে বিভিন্ন ঝুঁকিতে থাকা পেরুর আদিবাসীদের অধিকার নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। আফ্রিকার বুরকিনা ফাসোতে বাস্তুচ্যুত মানুষের অসহায়ত্বেরও উল্লেখ করা হয়েছে।

২০১৭ সালে ভেনিজুয়েলায় এক প্রতিবাদ সমাবেশে এক যুবকের মৃত্যুর উল্লেখ করার পাশাপাশি বসনিয়ায় ২৭ বছর আগে নিখোঁজ হওয়া এক যুবকের গল্পও উঠে আসে।

তিনি উল্লেখ করেছেন যে প্রায় ১৭০ টি রাজ্য তাদের আইন বা অনুশীলনে স্থগিতাদেশ বাতিল বা পরিবর্তন করে, অথবা ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে মৃত্যুদণ্ড স্থগিত করে মৃত্যুদণ্ড রহিত করার ক্ষেত্রে অগ্রগতি হয়েছে। সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক, চাঁদ, কাজাখস্তান, সিয়েরা লিওন এবং পাপুয়া নিউ গিনি মৃত্যুদণ্ড সম্পূর্ণভাবে বাতিল করার পদক্ষেপ নিয়েছে।

তিনি প্রায় বিস্মৃত ইয়েমেন, সিরিয়া, আফ্রিকার সাহেল অঞ্চল এবং হাইতির মানবাধিকারের প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের প্রতিবেদনের বড় অংশে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়, শেখ হাসিনার সরকার মিয়ানমারে মানবতাবিরোধী অপরাধ ও মানবিক বিপর্যয়ের কারণে প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে। প্রতিবেদনে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য দেশটির জান্তা সরকারকে চাপ দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে, তাদের ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য দায়ী করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে ইউক্রেনে যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট মানবিক বিপর্যয়ের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। ইউক্রেনে হামলা বন্ধ করার জন্য রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে আহ্বান জানিয়ে উভয় পক্ষকে সর্বদা এবং সব পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন এবং আন্তর্জাতিক মানবিক আইনকে সম্মান করার আহ্বান জানানো হয়।

পরিশেষে, তিনি সাংবাদিকদের ধন্যবাদ জানান, যারা জেনেভা এবং সারা বিশ্বে তাদের প্রয়োজনীয় কাজ করছেন। কারণ জাতিসংঘ কোনো বিষয়ে আওয়াজ তুললে সাংবাদিকরা তা বিশ্ব মিডিয়ায় প্রচার করে।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে গেল কয়েক বছর ধরেই হচ্ছে নানা ধরনের আলোচনা সমালোচনা। আর এই কারনেই মুলত বিশ্বে বাংলাদেশকে নিয়ে হচ্ছে এত বেশি চর্চা। এ দিকে মিশেল ব্যাচেলেটের দেয়া রিপোর্ট অনুযায়ী বাংলাদেশে মানবাধিকার নিয়ে নেই কোন ধরনের উদ্বেগ।

About Rasel Khalifa

Check Also

হাসিনার ট্রাভেল ডকুমেন্টে কী লিখেছে ভারত

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, যিনি টানা চারবার ক্ষমতায় ছিলেন, বর্তমানে ভারতীয় মাটিতে রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়েছেন। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *