সন্ত্রাস দমনে বাংলাদেশের অবস্থান নিয়ে ভিন্ন ইঙ্গিত দিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

সম্প্রতি দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী স/ন্ত্রাসবাদ ও জ/ঙ্গিবাদ দমনে ব্যাপক তৎপর। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যে অস্তিরতার সৃষ্টি হয়েছিল সেটির বিরদ্ধে ব্যাপক সাফল্য এনেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিশেষ করে র‌্যাব। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দক্ষ ও সফলভাবে অভিযানের কারনে আজ স/ন্ত্রাস ও জ/ঙ্গিবাদ দমন করা সম্ভব হয়েছে। স/ন্ত্রাস দমনে জিরো টলারেন্স নীতি নিয়েছে বাংলাদেশ বলে মন্তব্য করে যা বললেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সরকার স/ন্ত্রাস দমনে জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়ন করছে। বুধবার জাতিসংঘ সদর দফতরে গাম্বিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সেয়াকা সোনকো এবং জাতিসংঘের কাউন্টার-টেররিজম আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ভ্লাদিমির ভোরানকভের সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল একথা বলেন।

তৃতীয় জাতিসংঘ পুলিশ সামিটের সাইডলাইনে আয়োজিত এসব বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে অংশগ্রহণ করেন বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক ড. বেনজীর আহমেদ। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ, বাংলাদেশ পুলিশ সদরদপ্তর ও জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশনের কর্মকর্তারা এসময় উপস্থিত ছিলেন।

গাম্বিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে দুই মন্ত্রী জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন, স/ন্ত্রাস দমন, দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি ক্ষেত্রে দুই দেশের মধ্যে চলমান ও ভবিষ্যত সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করেন।

গাম্বিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের সাফল্য, অনুকরণীয় ভূমিকা ও অবদানের প্রশংসা করেন। তিনি একজন গাম্বিয়ান শান্তিরক্ষী; বিশেষ করে পুলিশ বাহিনীর প্রশিক্ষণ ও সক্ষমতা বাড়াতে তিনি বাংলাদেশের সহযোগিতা চান। তিনি বাংলাদেশকে শান্তিরক্ষী মোতায়েনের আগে গাম্বিয়ার প্রশিক্ষণে সহযোগিতা করার অনুরোধ জানান। এ ব্যাপারে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষায় বাংলাদেশ পুলিশের অবদানের কথা তুলে ধরেন বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক। আইজিপি বেনজীর আহমেদ গাম্বিয়ান প্রতিনিধি দলকে গাম্বিয়ান পুলিশ বাহিনীকে প্রশিক্ষণ সহায়তা প্রদানের বিষয়ে বাংলাদেশ পুলিশের সক্ষমতা সম্পর্কে অবহিত করেন।

বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিশেষ করে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে মা/মলা করার জন্য গাম্বিয়াকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, মানবিক কারণে বাংলাদেশ সাময়িকভাবে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে, এই আশ্রয়কে দীর্ঘায়িত করা অসম্ভব। তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

গাম্বিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে মানবিক আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের সরকার ও জনগণের প্রশংসা করেন। তারা রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন ত্বরান্বিত করতে পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা করেন।

এদিকে জাতিসংঘের স/ন্ত্রাস দমন বিভাগের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেলের (ইউএসজি) সঙ্গে বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত বিভিন্ন স/ন্ত্রাস-বিরোধী উদ্যোগ ও নীতি তুলে ধরেন। ভবিষ্যতে পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে জাতিসংঘের এই কার্যালয়ের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার বিষয়ে আলোচনা হয়।

জাতিসংঘের এই কর্মকর্তা স/ন্ত্রাসবাদ ও স/হিংস চরমপন্থা মোকাবেলায় বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত উদ্যোগের প্রশংসা করেন। বৈশ্বিক স/ন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় বাংলাদেশকে জাতিসংঘের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবেও বর্ণনা করেন তিনি।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু বেঞ্চ পরিদর্শন এবং জাতিসংঘ উদ্যানে বৃক্ষরোপণ করেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ আবদুল মুহিত এবং বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক ড. বেনজীর আহমেদ।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী স/ন্ত্রাসবাদ দমনে ব্যাপক তৎপর ছিলেন যার ফলশ্রুতিতে এমন সাফল্য অর্জন হয়েছে বলে মন্তব্য করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, এ বিষয় নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ভবিষ্যতেও কাজ করবে।