বিয়ের পর থেকে যৌতুকের দাবি নিয়ে স্ত্রীকে সবসময়ই নির্যাতন চালিয়ে যেতেন প্রয়াত স্ত্রী মনোয়ারা বেগম। প্রয়াত মনোয়ারার স্বামী শুধু নিজেই নন, পরিবারের অন্য সদস্যদেরকেও সাথে নিয়ে তার স্ত্রীকে নির্যাতন করতেন। এক সময়ে নির্যাতন মাত্রা বারিয়ে দেন এবং তার প্রাণনাশ করেন পরিবারের সবাইকে সঙ্গে নিয়ে।
ময়মনসিংহে চাচিকে প্রাণনাশের ২৭ বছর পর যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি সাইফুল ইসলাম ওরফে সাইফুলকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। তিনি ফুলবাড়িয়া উপজেলার হুরবাড়ি এলাকার প্রয়াত মিজান মিয়ার ছেলে। রোববার বিকেলে র্যাব-১৪ কার্যালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। শনিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে ঢাকা মহানগরীর দারুস সালাম থানা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। র্যাব-১৪ এর কোম্পানি ক্যাপ্টেন মেজর আখের মুহাম্মদ জয় জানান, ফুলবাড়িয়া উপজেলার হুরবাড়ি গ্রামের মো. আব্দুল আউয়াল মানোয়ারা আক্তারকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকে যৌতুকের দাবিতে মানোয়ারাকে নির্যাতন করত স্বামী। বিয়ের দুই বছর পর অন্তঃসত্ত্বা হন মানোয়ারা বেগম। ১৯৯৪ সালের ১১ ডিসেম্বর রাতে আব্দুল আউয়াল, তার দুই বোন শামছুন্নাহার, হাফেজা খাতুন ও আউয়ালের ভাতিজা সাইফুল ইসলাম যৌতুকের দাবিতে মানোয়ারাকে পিটিয়ে প্রয়াত করে। তিনি আরও বলেন, প্রাণনাশেরকাণ্ডে ধামাচাপা দিতে মানোয়ারার মুখে বিষ মেশানো হয়েছে এবং একে আত্মহনন বলে অপপ্রচার করা হয়েছে। এ ঘটনার পর প্রয়াত মানোয়ারের ভাই মোঃ শহিদুল্লাহ বাদী হয়ে একটি প্রাণনাশের মামলা দায়ের করেন। ২০০৪ সালের জানুয়ারিতে ওই মামলায় সাইফুলকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত। তবে প্রাণনাশের পর তিনি পলাতক ছিলেন।
উল্লেখ্য, শশুড় বাড়ি থেকে যৌতুক না পেয়ে স্ত্রীকে অমানুষিক অত্যাচার করতেন স্বামী নিজেই। এমনকি পরিবারে অন্যান্য সদস্যরাও এই ঘটনার সাথে সরাসরি ভাবে জরিত থাকতেন। স্ত্রী সন্তান সম্ভাবা হওয়া স্বত্বেও তার ওপর এই নির্যাতনের মাত্রা কোনভাবেই কম করা হয়নি। এক পর্যায়ে সন্তানসম্ভাবা স্ত্রীকে পরিবারের সবাই মিলে প্রাণনাশ করেন। এই ঘটনায় ভাতিজাও জরিত ছিল এবং তার আইনি সাজাও হয়েছিল।