দেখতে দেখতেই দরজায় কড়া নাড়ছেসনাতন ধর্মাবলম্বীদের সব চেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। আর এই উৎসবে অন্যান্যদের মতো নিজেকে সাজাতে বাবার কাছে নতুন জামা চেয়েছিলেন বিষ্ণু। অন্যদিকে বিষ্ণু জন্য টাকাও জমিয়ে রেখেছিলেন তার বাবা-মা। কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস, কাপড় কেনার জন্য টাকা তার সৎকারে খরচ হলো।
পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার করতোয়া নদীতে নৌকাডুবিতে বিষ্ণুর মৃত্যু (৩) হয়েছে। বিষ্ণুর বাড়ি পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার শালডাঙ্গা ইউনিয়নের হাতিডুবা ছাত্রশিকারপুর গ্রামে। তার পিতার নাম রবিন চন্দ্র। রোববার পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার করতোয়া নদীতে নৌকা দুর্ঘটনায় মায়ের সঙ্গে বিষ্ণুর মৃত্যু হয়। শুধু স্ত্রী-সন্তান নয়, রবিন হারিয়েছেন আরও দুই আত্মীয়কে।
বিলাপ করতে করতে ভাটা শ্রমিক রবিন বলছিলেন, বাচ্চাগুলোর নতুন কাপড়চোপড় কেনার জন্য টাকা জোগাড় করেছিলাম। সেই টাকা এখন স্ত্রী–সন্তানের সৎকারে খরচ হবে ভাবিনি। আমার সব শেষ হয়ে গেল।
জানা যায়, গতকাল দুপুর ১২টার দিকে রবিনের স্ত্রী ও সন্তান বাসা থেকে বের হয়। বেলা একটার দিকে তারা আউলিয়া ঘাটে পৌঁছান। পথে কিছুটা বিলম্ব হয়। উদ্দেশ্য বদেশ্বরী মন্দিরের মহালয়া অনুষ্ঠানে তাড়াতাড়ি উপস্থিত হওয়া। ভীড়ের মধ্যে তারা তড়িঘড়ি করে নৌকায় উঠে তারা। কিছুদূর যাওয়ার পর নৌকা দুলতে থাকে। শুরু হয় চিৎকার-চেঁচামেচি। একপর্যায়ে নৌকা ডুবে যায়। নৌকায় থাকা ৭০ থেকে ৮০ জন যাত্রীর সবাই ডুবে যায়। কেউ কেউ সাঁতরে তীরে চলে গেলেও ২৪ জনের মৃত্যু হয়। রবিনের পরিবারে চারজন সদস্য।
এদিকে সংবাদ মাধ্যমকে এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফরিদুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় তার উনিয়নে ৭ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এতে গোটা এলাকাজুড়ে বইছে শোকের কালো ছায়া।