নীলফামারীর ডিমলায় এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা তার সহকর্মীসহ তিন সন্তানসহ নিখোঁজ হয়েছেন। বুধবার সন্ধ্যায় ওই শিক্ষিকার স্বামী মাহির উদ্দিন ডিমলা থানায় অভিযোগ করেন। তবে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত ওই শিক্ষক, শিক্ষিকাসহ তাঁর সন্তানদের কোনো হদিস মেলেনি।
অভিযুক্ত শিক্ষক সহিদুল ইসলাম (৪০) ডিমলা উপজেলার গয়াবাড়ি ইউনিয়নের পশ্চিম খড়িবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা। স্ত্রীসহ তার তিন সন্তান রয়েছে। রসলিয়া আক্তার (৩৫) নামে ওই শিক্ষিকা একই গ্রামের বাসিন্দা। তারা দুজনই খড়িবাড়ি এলাকার শহীদ স্মৃতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।
অভিযোগের সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওই শিক্ষিকা স্বামীর বাড়ি ছেড়ে তিন সন্তানসহ শিক্ষক সঙ্গে চলে যান। পরিবারের লোকজন অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাদের কোনো সন্ধান পায়নি। পরে স্ত্রী নিখোঁজের বিষয়ে তার স্বামী থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।
শিক্ষিকার স্বামী বলেন, ‘শিক্ষকের স্ত্রী-সন্তান থাকার পরও আমার তিন সন্তানসহ স্ত্রীকে ফুসলিয়ে নিয়ে গেছে। আমি আমার স্ত্রী ও সন্তানদের সুস্থ অবস্থায় ফিরে পেতে চাই। শিক্ষক নামের ওই অমানুষের কঠিন বিচার চাই।’ তিনি জানান, ওই শিক্ষক এর আগেও প্রথম স্ত্রী ও সন্তান রেখে দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন।
শিক্ষকের প্রথম স্ত্রী বলেন, “বিয়ের পর থেকে আমার স্বামীর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ এসেছে। বিয়ের পর থেকে সব কিছু সহ্য করে আসছি। বিয়ের ২০ বছর পর ২০২০ সালে দ্বিতীয়বার বিয়ে করেন তিনি। আমার ও পরিবারের অনুরোধে দ্বিতীয় স্ত্রীর বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে। এখন তার সহকর্মী ওই শিক্ষিকাকে তিন মাস আগে তৃতীয় বিয়ে করেছে বলে জানতে পেরেছি।’
শহীদ মেমোরিয়াল স্কুলের প্রধান শিক্ষক মঈন উদ্দিন বলেন, ঘটনা শুনে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছেন। বর্তমানে ওই দুই শিক্ষক বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত।
এ বিষয়ে জানতে শিক্ষক-শিক্ষিকাকে একাধিকবার ফোন করা হলে মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) সাজ্জাদুজ্জামান জানান, উপজেলা শিক্ষা কমিটির বৈঠকে দুই সহকারী শিক্ষকের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ডিমলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেবাশীষ রায় বলেন, এ ঘটনায় থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। শিক্ষিকা ও তার সন্তানদের উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।