Thursday , November 14 2024
Breaking News
Home / Countrywide / সদ্য নিহত হওয়া বুয়েটের মেধাবী ছাত্র ফারদিনকে নিয়ে এবার মুখ খুললো তার বন্ধু, জানালো অজানা অনেক কথা

সদ্য নিহত হওয়া বুয়েটের মেধাবী ছাত্র ফারদিনকে নিয়ে এবার মুখ খুললো তার বন্ধু, জানালো অজানা অনেক কথা

আবারো উত্তাল সারা বাংলাদেশ। এবারেও সেই বুয়েট। এবার বুয়েটের মেধাবী ছাত্র ফারদিন হয়েছেন নিহত। আর এই ঘটনা নিয়ে এখন সারা দেশে চলছে নানা ধরনের আলোচনা সমালোচনা। জানা গেছে বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র পরশ গত শনিবার (৫ নভেম্বর) থেকে নিখোঁজ ছিল। ওই দিনই তার বাবা কাজী নূর উদ্দিন বাদী হয়ে রাজধানীর রামপুরা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। নিখোঁজের দুই দিন পর গত সোমবার (৭ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৬টার দিকে নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ফারদিন নূরের নিথর দেহ উদ্ধার করে নৌ পুলিশ।

এদিকে পরশার মৃত্যু নিয়ে দেশজুড়ে আলোচনায় ব্যস্ত প্রশাসন। মেধাবী ছাত্রের এমন অস্বাভাবিক ‘মৃ’ত্যু’ কেউ মেনে নিতে পারে না। ফারদিনের মৃ’ত্যু’তে’ তার পরিবার, বন্ধুবান্ধব ও শুভানুধ্যায়ীরা শোক প্রকাশ করেছেন। ফারদিনের ‘মৃ’ত্যু’ সংবাদে সবাই গভীরভাবে শোকাহত।

সোশ্যাল মিডিয়ায় ফারদিন পাশের ঘনিষ্ঠ অনেকেই দুঃখ প্রকাশ করেছেন। বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) ফারদিনের এক শুভাকাঙ্ক্ষী ও বন্ধু ফারদিনের স্মরণে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন। তার নাম সাজ্জাদ হোসেন। সাজ্জাদ রুয়েটের ছাত্র। পরশের সঙ্গে তার দীর্ঘদিনের বন্ধুত্ব ছিল। সাজ্জাদের স্ট্যাটাসে ফারদিনকে নিয়ে কিছু আবেগঘন কথা রয়েছে। ফারদিনের অনেক অজানা কথা আছে।

সাজ্জাদ হোসেন তার স্ট্যাটাসে ফারদিনকে অন্যদের থেকে আলাদাভাবে উল্লেখ করে লিখেছেন, ‘ফারদিন পার্শ্ব সবসময়ই একজন মেধাবী ছাত্র। পরশা ছোটবেলা থেকেই আলাদা ছিল। বই ভর্তি একটা বুকশেলফ ছিল তার। পরশ একটা বই দু-তিনবার পড়তেন। বাড়ির খবরের কাগজও বেশ কয়েকবার পড়া হয়েছে। পরশ গণিত এবং পদার্থবিদ্যায় অন্যরকম আনন্দ নিয়েছিল। সিভিল স্টুডেন্ট হিসেবে পরশ ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে একটি কোর্স করেছিলেন। গণিতে তার প্রতিভা ছিল অনন্য। পড়ার সময় ক্যালকুলেটর লাগবে না। ‘

ফারদিন পারসের বিনয় সম্পর্কে সাজ্জাদ লিখেছেন, ‘পারস খুবই বিনয়ী মানুষ ছিলেন। সেই অল্প বয়সে পরশাকে তার ছোট ভাইদের সাথে দুবার চিৎকার করতে দেখেছি। কখনো জোরে কথা বলার রেকর্ড নেই তার। রিকশাচালকদের ভাড়া দেওয়ার পর তিনি সবসময় বলতেন, ‘ধন্যবাদ’। তিনি নির্দোষ ছিলেন। সবসময় শেখার চেষ্টা করত। তিনি একজন মনোযোগী শ্রোতা ছিলেন।

সাজ্জাদ তার স্ট্যাটাসে আরও বলেন, ‘নারীদের প্রতি পরশের সম্মান ছিল অনুকরণীয়। পাশের মহিলার কারণে কেউ যেন কষ্ট না পায়। তিনি বই পড়েন, বিতর্ক করেন, সমাজসেবা করেন এবং তার মতো মানুষের সাথে বন্ধুত্ব করেন। ‘

ফারদিন পরশের পরিবার সম্পর্কে সাজ্জাদ লিখেছেন, ‘পরশের পরিবার একটি সাধারণ উত্তেজনাপূর্ণ পরিবার। তবে খুবই ভদ্র ও শিক্ষিত পরিবার। যে পরিবারে ঘরে খাবার না থাকলেও বইয়ের অভাব হয় না। তার পরিবারের কারো সাথে খারাপ ব্যবহার করার কোনো রেকর্ড নেই। পারিবারিক শত্রুতা নেই। পরশের কাজ ছিল শুধু বিতর্ক, টিউশনি, পড়াশুনা, ল্যাপটপে দু-একটা খেলা আর খাওয়া। তার কোনো শত্রু থাকতে পারে না বলেও সাজ্জাদ উল্লেখ করেন।

প্রসঙ্গত, চলতি মাসের গত ৪ তারিখে রাত ১১ তার দিকে নিখোঁজ হয়ে যায় ফারদিন। আর সেই থেকেই খোঁজ চলতে থাকে তার। অনেক খোজ খুঁজি করেও পাওয়া যায়নি ফারদিনের কোনো সংবাদ। এরপর নিখোঁজের ঠিক তিন পর অর্থাৎ ৭ই নভেম্বর ফারদিনকে উদ্ধার করা হয় নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদী থেকে। এরপর থেকেই শুরু হয় শোকের মাতম। ৯ই নভেম্বর ফারদিনের বাবা বাদী হয়ে রামপুরা থানায় করেন একটি মামলা। আর সেই থেকেই এই ঘটনা একের পর এক পাচ্ছে নতুন মোড়।

About Rasel Khalifa

Check Also

উপদেষ্টা পরিষদেই বৈষম্য

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে আঞ্চলিক বৈষম্যের অভিযোগ উঠেছে। ২৪ সদস্যের এই পরিষদে ১৩ জনই চট্টগ্রাম …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *