টানা ৩ মেয়াদে দেশের সরকারের দায়িত্ব পালন করছেন আওয়ামীলীগ দল। এই দলের সাধারন সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ওবায়দুল কাদের। তিনি ছাত্র জীবন থেকে রাজনীতির সাথে যুক্ত। বর্তমান সময়ে তিনি এই দলের হয়ে বাংলাদেশ সরকারের সড়ক পরিবহন এবং সেতুমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। সম্প্রতি তিনি সড়ক আইন এবং সড়কের নানা কর্মকান্ড নিয়ে বেশ কিছু কথা তুলে ধরলনে।
দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে অনেক কিছু অ্যাডজাস্ট করতে হয় বলে মন্তব্য করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, পরিষ্কারভাবে একটি সত্য কথা বলতে চাই—এখানে অনেক সমস্যা আছে, যখন চেয়ারে বসবেন অনেক কিছু মোকাবিলা করতে হয়। এটা একটা চ্যালেঞ্জিং জব। এখানে আমরা কিছু কিছু বিষয় অ্যাডজাস্ট করি। শনিবার (২৭ নভেম্বর) জাতীয় সংসদে পাসের জন্য প্রস্তাবিত মহাসড়ক বিল ২০২১-এর জনমত যাচাই প্রস্তাবের পর সংসদ সদস্যদের বক্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন। এর আগে জনমত যাচাইয়ের প্রস্তাবের ওপর আলোচনাকালে বিএনপির সংরক্ষিত আসনের এমপি রুমিন ফারহানা তার বক্তব্যে পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের চাপে সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮-এর সংশোধন করে শাস্তি কমানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন। তিনি এই সংশোধনীর উদ্যোগকে ছাত্রদের সংঙ্গে প্র/তা/রণা বলেও অভিযোগ করেন।
ওই দাবির জবাব দিতে গিয়ে কাদের বলেন, কিন্তু সংসদে যেটা বলা হয়েছে তা মোটেও ঠিক নয়। আপনি আইনটির সংশোধিত রূপটি এখনও দেখেননি। এটা সংসদে আসেনি। ওয়েবসাইটে আছে। আইন শাখা এটা ইতোমধ্যে ভেটিং করেছে। তারপরও আমাদের ওয়েবসাইটে রেখেছি। মতামত নিচ্ছি। তিনজন মন্ত্রীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তারা খুব সুন্দরভাবে দায়িত্ব পালন করেছে। স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করে একটি সংশোধিত রূপ দাঁড় করিয়েছে। আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই— এই আইনে সাজার শৈথিল্য বা কঠোরতা কোনভাবেই শিথিল করা হয়নি। কোন সাজা কমানো হয়নি। আইনের যে কঠোরতা, আইনের যে স্পিরিট অরিজিনাল আইনে যা ছিল সেটাই আছে। সেটাই থাকবে। শুধু ভাষাগত ও প্রতিশব্দের বিষয় এবং প্রতিবেশী অন্যান্য দেশের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আইনটিকে আমরা যুগোপযোগী করেছি। এছাড়া অন্য কিছু এখানে নেই। এখানে সাজা কমিয়ে কাটছাঁট করে কারও সঙ্গে প্রতারণা করিনি। জনবান্ধব শেখ হাসিনার সরকার জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে না। এই সরকার জনস্বার্থেই কাজ করে।
সড়কে দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বলেন, সড়কের দুর্ঘটনা বন্ধ শুধু সরকারের কাজ নয়। সকলের সহযোগিতা দরকার। সাধারণরা আইন মানলেও আপনি ভিআইপি হয়ে রং সাইডে যেতে চান—সেখানে কী সড়কের শৃঙ্খলা থাকবে? মা শিশুকে কোলে নিয়ে হামাগুড়ি দিয়ে আইল্যান্ড ক্রস করছে। মোবাইল ফোন কানে দিয়ে রাস্তা পার হচ্ছে— দুর্ঘটনা হবে না? এ জন্য কী শুধু চালকরা দায়ী? বেপরোয়া ড্রাইভিং অবশ্যই দায়ী, আমি সেটা অস্বীকার করছি না। কিন্তু আমরা জনগণ যারা রাস্তা ব্যবহার করি তারা সচেতন নই। শুধু চালক নয় পথচারীরাও বেপরোয়া হয়ে যায়। তিনি বলেন, সড়ক নিরাপত্তার জন্য বিলটি আনা হয়েছে, রাস্তায় শৃঙ্খলার জন্য বিল আনা হয়েছে। ডিসিপ্লিন সড়কে দরকার, পরিবহনেও দরকার।
দেশ জুড়ে সড়কে দূর্ঘটনা এক নিত্যেদিনের ঘটনায় পরিনত হয়েছে। অনিয়মের জের ধরে প্রতিনিয়ত এই দূর্ঘটনা ঘটছে। ২০১৮ সালে সড়কে দূর্ঘটনা প্রতিরোধে আইন সংশোধনের জন্য রাজপথে নামে শিক্ষার্থীরা। অবশেষে সরকার নতুন আইন প্রনয় করে। এবং সম্প্রতি নতুন প্রনয়নের কার্যক্রম শুরু করেছে সরকার। তবে সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে যাত্রী এবং পরিবহন চালক সকলকেই সর্তকতা অবলম্বন করা জরুরি।