বাংলাদেশের আলোচিত নারী উদ্যোক্তা রোবাইয়াত ফাতিমা তনির স্বামী শাহাদাৎ হোসাইন বর্তমানে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ব্যাংককের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন এবং তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে। তবে এর মধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার স্বামীর মৃত্যুর গুজব ছড়িয়ে পড়েছে। আবার অনেকেই দাবি করছেন, তনি তার ব্যবসার প্রচারণার জন্য স্বামীর অসুস্থতা নিয়ে ‘নাটক’ করছেন। এই বিতর্কের মধ্যেই তনি তার নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পোস্ট দিয়েছেন, যেখানে তিনি উল্লেখ করেছেন, এই গুজবগুলো তাকে ভীষণভাবে বিরক্ত ও মর্মাহত করছে।
তনি তার স্ট্যাটাসে বলেন, “কিছু ভিউ ব্যবসায়ীর অত্যাচারে আমি বিরক্ত এবং মর্মাহত। এখন ব্যাংককে সকাল ৬টা বাজে, আমি আইসিইউ রুমের সামনে বসে এই পোস্টটি লিখছি। দয়া করে আমার এবং আমার স্বামীকে নিয়ে কোনো প্রকার মিথ্যা সংবাদ প্রচার করবেন না।” তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, ‘তনির বুড়া স্বামী মারা গেছে’, ‘টাকার জন্য চিকিৎসা হচ্ছে না তনির স্বামীর’, ‘ব্যাবসায়ীক পলিসি’, ‘মৃত্যুর খবর গোপন করছে’— ভিউয়ের আশায় এসব মনগড়া খবর ছড়াবেন না।
তিনি তার স্বামীর উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বাংলাদেশ থেকে ব্যাংককে নিয়ে যাওয়ার কথা উল্লেখ করেন। তনি বলেন, “বাংলাদেশে তার চিকিৎসা আশানুরূপ না হওয়ায় আমি অনেক ঝুঁকি নিয়ে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে আল্লাহর রহমতে তাকে ব্যাংককে আনতে পেরেছি। আমার স্বামী এখন লাইফ সাপোর্টে এবং আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি তাকে সুস্থ করে তোলার। তবে সবকিছুই আল্লাহর ইচ্ছায় নির্ভর করছে।”
তনি আরও বলেন, “আমি একজন আত্মবিশ্বাসী নারী এবং আল্লাহর উপর আমার সম্পূর্ণ বিশ্বাস রয়েছে। যুদ্ধ করে আমি অভ্যস্ত, তবে এটা আমার জীবনের সবচেয়ে কঠিন যুদ্ধ।” তিনি বিশ্বাস করেন, আল্লাহ চাইলে তার স্বামী সুস্থ হয়ে উঠবেন।
যারা তার বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছেন, তাদের উদ্দেশ্যে তনি বলেন, “কিছু লোকের ভিউ দরকার, আমার না! আমি নিজের যোগ্যতায় ব্যবসা করি, ভিউয়ের জন্য না। মানুষ আমার পণ্যের গুণগত মান এবং সেরা দামের কারণে কেনাকাটা করে, আমার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে না।” তনি তার প্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভরশীল অনেক কর্মীর কথা উল্লেখ করে বলেন, তার স্টাফরা তার অনুপস্থিতিতেও প্রতিষ্ঠানটি সফলভাবে পরিচালনা করছে। তিনি সমালোচকদের উৎসাহ দেওয়ার আহ্বান জানান এবং অহেতুক গুজব না ছড়ানোর অনুরোধ করেন।
তনির পোস্টের শেষে তিনি আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেন, যেন তার স্বামীকে সুস্থ করেন এবং গুজব ছড়ানো লোকদের হেদায়েত দান করেন।
এছাড়াও, তনি আগের একটি স্ট্যাটাসে উল্লেখ করেন, “আমি জীবনের সবচেয়ে কঠিন সময় পার করছি এবং কোনোভাবেই আমার স্বামীকে হারাতে চাই না। অনেক কষ্ট করে তাকে সিঙ্গাপুর থেকে বাংলাদেশে এবং তারপর ব্যাংককে এনেছি। এখন সবকিছু আল্লাহর ইচ্ছার উপর নির্ভর করছে। সবাই দোয়া করবেন।”
প্রসঙ্গত, শাহাদাৎ হোসাইন তনির দ্বিতীয় স্বামী। এর আগে তনি তার প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদে যান এবং পরবর্তীতে শাহাদাৎকে ভালোবেসে বিয়ে করেন। তাদের বয়সের ব্যবধান নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনা হলেও তনি তার ভালোবাসার সম্পর্ককে গুরুত্ব দিয়েছেন এবং সব সমালোচনা দৃঢ়ভাবে মোকাবিলা করেছেন।