কোটি টাকা আত্মসাত ও জালিয়াতির মামলায় হাজি সেলিমকে আটক করে পুলিশ। তদন্ত ও বিচার কার্য বিশ্লেষণ করে আদালত তাকে দশ বছরের সাজা প্রদান করে। তবে বর্তমানে তিনি মুক্তির আশা করছেন। কারণ হাজী সেলিমকে সচিবালয় থেকে নিমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আগামী সংসদের অধিবেশনে যোগ দেওয়ার জন্য।
কারাবাসের কারণে আপনার আমন্ত্রণপত্র হোম অফিসে পাঠানো হয়েছে। এক সংবাদ সূত্র জানায়, ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি হাজী সেলিম দু-একদিনের মধ্যে মন্ত্রণালয় থেকে আমন্ত্রণপত্র পাবেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১৬ আগস্ট সংসদ সচিবালয় থেকে হাজি সেলিমকে আমন্ত্রণ জানিয়ে একটি চিঠি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পৌঁছে দেওয়া হয়।
কারা কর্মকর্তা গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, চিঠিটি হাজী সেলিমের কাছে পাঠানো হবে। সংসদ অধিবেশনে যোগ দিতে চাইলে প্যারোলের জন্য কারা কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করবেন। কারা কর্তৃপক্ষ এই অনুরোধ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে। স্বরাষ্ট্র দপ্তর অনুমোদন দিলে তাকে প্যারোলে সংসদে পাঠানো হবে। পুরো বিষয়টি সরকারের ওপর নির্ভর করবে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, শর্তসাপেক্ষে মুক্তির আবেদন করার পর কোনো কারাবন্দী সংসদ সদস্যের সংসদ অধিবেশনে উপস্থিতির প্রমাণ আছে কি না তা খতিয়ে দেখা হবে। এ বিষয়ে বিচার মন্ত্রণালয়ের মতামত চাওয়া হবে। সবার মতামতের ভিত্তিতে সরকার সিদ্ধান্ত নেবে। একাদশ জাতীয় সংসদের ১৯তম অধিবেশন ২৮ আগস্ট বিকেল ৫টায় ডাকা হয়েছে।
সূত্র জানায়, ২০১৫ সালের শুরুর দিকে টাঙ্গাইল-৪ আসনের সংসদ সদস্য আবদুল লতিফ সিদ্দিকী বন্দি অবস্থায় সংসদ অধিবেশনে যোগ দিতে প্যারোলের আবেদন করেন। তিনি আবেদনে উল্লেখ করেন, কারাগারে থাকা অবস্থায় রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদ সংসদ অধিবেশনে যোগ দেন। তবে সংসদ অধিবেশনে যোগ দিতে আবদুল লতিফের প্যারোলের আবেদনের অনুমোদনের কোনো তথ্য নেই।
হাজী সেলিমের বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মাহবুবুল ইসলাম এক সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, হাজী সেলিম বর্তমানে অসুস্থ হয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের কারা সেলে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।এক প্রশ্নের জবাবে এই কারা কর্মকর্তা বলেন, হাজী সেলিম নিজে প্যারোলের আবেদন করতে পারে, তার পরিবারও পারে।
২০০৭ সালের দিকে প্রথম হাজী সেলিমের বাসায় তল্লাশি চালায় দুদক। এরপরে একের পর এক বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য। বিভিন্ন ধরনের দুর্নীতিতে জড়িত থাকার প্রমাণ মেলে তার বাড়িতে। এরপর হাজী সেলিমের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা করা হয়। ওই মামলায় আদালত তাকে প্রায় ১৩ বছরের সাজা দেন। তবে কোনোভাবেই মামলা থেকে মুক্তি পেয়ে যায় হাজী সেলিম। তবে পিছু ছাড়েনি দুদক। এর পরে তার বিরুদ্ধে আপিল করে তারা । বর্তমানে সেই মামলায় তিনি কারাগারে বন্দি রয়েছেন।