প্রায় দুই মাস হতে চললো জ্বালানী তেলের দাম বেড়েছে বাংলাদেশে যার কারনে গোটা অর্থনীতিতে তার প্রভাব পড়েছে। বেড়েছে সকল ধরনের পন্যদ্রব্যের দাম সেই সাথে যানবাহনে মানুষের যাতায়াতে বেড়েছে ভাড়া। তবে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার কারনে তার প্রভাব পড়েছে মানুষের জীবন যাপনে। কারনে তাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় সকল জিনিসের দাম বেড়ে যাওয়ার কারনে, তাদের অন্য খাতে খরচের লাগাম টেনে ধরতে হচ্ছে কমেছে সঞ্চয়ের পরিমান। কারন দেশের মানুষের আয় বাড়েনি। দ্রব্যমূল্যের যে দাম সেটার সাথে এখন যুক্ত করতে হচ্ছে বেড়ে যাওয়া পরিবহন ব্যয়। দেশের মানুষ সরকারকে এক দফায় এতটা দাম বাড়ানোর বিষয়টিকে ভালোভাবে নেয়নি। এদিকে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বিষয়টি নিয়ে ভিন্ন ধরনের মন্তব্য করেছেন। তিনি অবশ্য তার কথার মাধ্যমে বিষয়টিকে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন।
অর্থমন্ত্রী হলেও নিজের কাজ নিজে করেন না বলে জানিয়েছেন আ হ ম মুস্তফা কামাল। দেশে সম্প্রতি জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে সব বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেন না বলেও জানান তিনি।
শনিবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের বাংলাদেশকে ‘স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণ’ সম্পর্কিত চূড়ান্ত সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকায় স্মারক অনুষ্ঠানের প্রি-ইভেন্ট প্রেস ব্রিফিংয়ে আসেন অর্থমন্ত্রী। তিনি ভার্চুয়ালি যোগ দেন। এতে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা।
আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে নভেম্বরের শুরুতে দেশে লিটার প্রতি ডিজেলের দাম ১৫ টাকা বাড়িয়ে করা হয় ৮০ টাকা। এর চাপ পড়েছে সাধারণ মানুষের খরচায়।
ডিজেলের দাম বাড়ানো ঠিক হয়েছে কিনা- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘অর্থমন্ত্রী হিসেবে আমি নিজের কাজ নিজে করি না। আমি আপনাদের (গণমাধ্যম) কাছ থেকে সাহায্য-সহযোগিতা নিয়ে, আপনাদের মতামত নিয়ে কাজ করি।’
জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, ‘এটি নিয়ে আমাদের সরকারের সংশ্লিষ্ট যারা কাজ করেন তারা বিষয়টি দেখবেন। আমি অর্থমন্ত্রী হলেও সব বিষয়ে আমি হস্তক্ষেপ করি না, সব বিষয় দেখি না। আমার যে অংশটুকু সেটুকু নিয়ে আমি নিয়োজিত থাকি। যারা এ বিষয়ে দেখেন তাদের কাছে প্রশ্ন করুন।’
ব্রিফিংয়ে বক্তব্য দেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন।
এ সময় অর্থমন্ত্রী রেমিটেন্স নিয়ে কথা বলেন। তিনি জানান, চলতি অর্থবছরে ২৬ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্সের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে প্রণোদনা বাড়ানো হয়েছে। রেমিটেন্সের লক্ষ্য অর্জন করতে গেলে ইনসেনটিভ আরেকটু বাড়িয়ে দেওয়ার দরকার ছিল। সেজন্য রেমিটেন্স যোদ্ধাদের বর্ধিত খরচ যোগান দিতে প্রণোদনা ২ শতাংশ থেকে ২.৫ শতাংশ করা হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, রেমিটেন্স বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক এলাকায় কত বড় ভূমিকা রাখে সেটি অর্থনীতিবিদরা বুঝবেন এবং তারা আমার সঙ্গে একমত পোষণ করবেন যে, এটি অসাধারণ ভালো কাজ হয়েছে। আমরা এটাকে সঠিক চ্যানেলে আনার চেষ্টা করছি। আমরা রেমিটেন্স পাচ্ছিলাম না, কারণ সেটা ইনফরমাল চ্যানেলে (হুন্ডি) চলে যাচ্ছিল। সেই চ্যানেলটাকে অনুৎসাহিত করব এবং ফরমাল চ্যানেলেই (ব্যাংকিং) পুরোটা অর্জন করতে চাই। সেজন্যই প্রণোদনা ২ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২.৫ শতাংশ করা হয়েছে। আজ (শনিবার) থেকে এটি কার্যকর। আশা করি, এই অর্থবছরে রেমিটেন্স ২৬ বিলিয়ন অর্জন হবে।
দেশে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রবাসীদের রেমিটেন্সের প্রবাহের যে মাত্রা সেটায় সন্তোষ প্রকাশ করেছে সরকার। এই খাতটিতে সরকার প্রনোদনা দেওয়ার মাধ্যমে প্রবাসীদের রেমিটেন্সের প্রবাহকে সমুন্নত রাখা এবং সেই সাথে বাড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে চলেছে যেটাকে ইতিবাচক হিসেবে দেখা হচ্ছে। দেশের উন্নয়ন তরান্বিত করতে বৈদেশিক রেমিটেন্সের প্রবাহ গুরুত্বপূর্ন ভুমিকা রেখে চলেছে। সরকার এই লক্ষ্যে বিদেশে কর্মী পাঠানোর জন্য ঐকান্তিকভাবে কাজ কর চলেছে।