বিশ্বের বিভিন্ন দেশ অর্থনৈতিকভাবে বেশ মন্দ অবস্থা পার করছ। তার ছোঁয়া বাংলাদেশের মতো একটি ছোট্ট দেশেও লেগেছে। তবে সরকারের সুদুরপ্রসারী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে অর্থনীতিকে চাঙ্গা রাখার জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে। বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া রোগের কারনে সৃষ্ট সংকট এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য সরকার বেশকিছু কঠোর পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন। এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে সকল ধরনের যানবাহন ক্রয় করার সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে সরকার। পুরোপুরি বন্ধ থাকবে বিভিন্ন ধরনের যানবাহন ক্রয়।
রোববার অর্থ বিভাগের বাজেট সেকশন-১ থেকে উপসচিব মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
এতে বলা হয়, বর্তমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে ২০২২-২৩ অর্থবছরের সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত, সংবিধিবদ্ধ, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানি ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটে কতিপয় খাতে বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যয়ে সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সিদ্ধান্তের মধ্যে রয়েছে- নতুন/প্রতিস্থাপন হিসাবে সব ধরনের যানবাহন (মোটর গাড়ি, নৌযান, বিমান) কেনা বন্ধ থাকবে। শুধুমাত্র জরুরী ও অত্যাবশ্যকীয় ক্ষেত্রগুলি বিবেচনা করে, বিনোদন, ভ্রমণ খরচ, অন্যান্য হস্তশিল্প, কম্পিউটার এবং আনুষাঙ্গিক, বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম এবং আসবাবপত্রের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থের সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ ব্যয় করা যেতে পারে।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারি-বেসরকারি সব খাতে ব্যয় কমানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। এ ক্ষেত্রে সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য নির্বাহী আদেশে কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বেসরকারি খাতকেও তা মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া প্রকল্প অনুমোদনের ক্ষেত্রে পরিকল্পনামন্ত্রীর ক্ষমতা খর্ব করা হয়েছে। গত মে মাসে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভায় প্রধানমন্ত্রী এসব নির্দেশনা দেন।
উল্লেখ্য, দেশটির সামষ্টিক অর্থনীতি গত ১৪ বছরে সবচেয়ে বেশি চাপে পড়েছে। বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া রোগের সংকট পুরোপুরি কাটিয়ে ওঠার আগেই চাপের চতুর্থ পর্ব শুরু হয়। রাজস্ব ঘাটতির পাশাপাশি যোগ হয়েছে বৈশ্বিক সংকট।
বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেল ও পণ্যের দাম বৃদ্ধি পরিস্থিতিকে জটিল করে তুলেছে, বিশেষ করে ইউক্রেন-রাশিয়ার মধ্য সৃষ্ট সংকটের কারণে। ফলে ক্রমবর্ধমান আমদানি ব্যয়, রপ্তানি ও প্রবাসী আয় ঘাটতি বাংলাদেশের বৈদেশিক বাণিজ্যের ভারসাম্য রক্ষায় বড় ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করছে। টাকার বিপরীতে মার্কিন ডলারের মূল্যবৃদ্ধিসহ নানা কারণে দ্রব্যমূল্য অসহনীয় হয়ে উঠছে।
প্রথমবারের মতো খোলা বাজারে মার্কিন ডলারের দাম ১০০ টাকা ছাড়িয়েছে। ভবিষ্যতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে বলে মনে করা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে সরকারি-বেসরকারি সব খাতে ব্যয় কমানোর নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের মানুষকে কৃষির উপর গুরুত্ব আরোপের জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অর্থনীতিতে মন্দা অবস্থা বিরাজ করছে, তার ছোঁয়া যাতে বাংলাদেশের উপর না পড়ে সেজন্য নিজস্ব সম্পদ ব্যবহারের উপর গুরুত্ব আরোপ করছে সরকার। ইতিমধ্যে সরকার বেশকিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে যাতে করে দেশের অর্থনীতিতে কোনরকম মন্দা বা ধস না আসে সে লক্ষ্যে।