Thursday , November 14 2024
Breaking News
Home / Countrywide / সংসদ সদস্যপুত্রের হাতে বেধড়ক মার খেয়ে শেষ পর্যন্ত মুখ খুললো পুলিশ

সংসদ সদস্যপুত্রের হাতে বেধড়ক মার খেয়ে শেষ পর্যন্ত মুখ খুললো পুলিশ

সম্প্রতি একটি ঘটনা বেশ সারা ফেলেছে সারা দেশে। আর এ ঘটনাটি মূলত ঘেটেছে রাজধানী ঢাকায়। রাত তখন সাড়ে দশটা। গুলশান-২ কূট’নৈতিক নিরাপত্তা বিভাগের কার্যালয়ের গেট মো. বনানী থেকে আসা একটি জিপ ট্রাফিক পুলিশের গাড়িকে ‘ধা”ক্কা’ দেয়। গেটের সামনে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যরা এগিয়ে আসেন। গাড়িটি জব্দ করা হয়। তখন গাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেন এক যুবক, যিনি গাড়ি চালাচ্ছিলেন। ‘ত’র্কা’ত’র্কির এ’কপর্যায়ে পুলিশ সদস্যদের ‘মা’র’ধ’র শুরু করেন ওই যু’বক। এ সময় পুলিশ সদস্যরাও তার ওপর ‘হা’ম’লা চালায়’। শনিবার রাতে’ রাজ’ধানীর অভিজা’ত এলাকা গুল’শানের ব্যস্ত’ সড়কে’ এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পুলিশকে ”মা;র’ধ’র’কারী যুবকের নাম ইন্তেশার চৌধুরী। তিনি ভোলা-৩ আসনের সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরীর ছোট ছেলে। পুলিশের গুলশান বিভাগের সদস্যদের মতে, এটি একটি ভুল বোঝাবুঝি ছিল। ঘটনাস্থলেই তা নি’ষ্প’ত্তি করা হয়।

তবে তদন্তে বেরিয়ে এসেছে অন্য চিত্র। পুলিশ সদস্যরা প্রথমে ইন্তে’শার’কে মা’র”ধ’রে’র অভিযোগে গ্রেপ্তার করে। এ সময় গাড়িতে তার সঙ্গে ছিলেন এক বান্ধবী। প্রথমে তাদের কূ’টনৈ”তিক নিরাপত্তা বিভাগের অফি’সের ভেতরে কমিউ’নিটি ব্যাংক বু’থে রাখা হয়। সেখান থেকে গুলশা’ন থানায় বার্তা পাঠিয়ে ঘটনাটি জানায় পুলিশ। বিষয়টি থানা থেকে গুলশা’নের ওই এলা’কার দায়িত্বে থাকা উপ-পরিদর্শক (এসআই) বশিরু’ল ইসলা’মকে জানানো হয়। তিনি গিয়ে ইন্তে’শারকে গুলশান থানায় নিয়ে যান।

পুলিশের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, পরিচয় জানার আগেই পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা মামলার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু পরিচয় জানার পর তারা সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে। তবে ইন্তেশারকে রাতভর গুলশান থানায় রাখা হয়েছে। মধ্যরাতে তার বান্ধবীকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

সংশ্লিষ্ট পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ইন্তেশার চৌধুরী ঢাকা মেট্রো-জি ২১৫৭৩০ নম্বরের গাড়িটি বেপরোয়া গতিতে চালাচ্ছিলেন। তার গাড়ি নিয়*ন্ত্রণ হারিয়ে ট্রাফিক পুলিশের গাড়িকে ধা*ক্কা দেয়।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ইন্তেশার চৌধুরীকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্তের পর ঘটনার বর্ণনা দিয়ে গুলশান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়। পরে এমপি নুরুন্নবী চৌধুরীর গাড়িচালক আরিফের হেফাজতে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। রোববার সকাল ৭টা ৫০ মিনিটের দিকে মুচলেকা নিয়ে গুলশান থানা ত্যাগ করেন ইন্তেসার চৌধুরী।

চালক আরিফের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি গুলশান থানায় যাওয়ার কথা অস্বীকার করেন। আরিফ জানান, তিনি এমপির ব্যক্তিগত গাড়িচালক নন, বাসায় কাজ করেন। তবে আরিফ তার প্রাইভেটকারের চালক বলে নিশ্চিত করেছেন সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরী।

এ প্রসঙ্গে সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরী গতকাল বলেন, ঘটনাটি ছোট। এটা সংবাদ যোগ্য নয়। ছোট ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গত শনিবার সম্মেলন নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম, বিস্তারিত জানতে পারিনি।

একজন সংসদ সদস্যের ছেলে পুলিশ সদস্যদের মা*র*ধ*র করেছেন, তথ্যটি জানার পর নিশ্চিত হতে এই প্রতিবেদক গতকাল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মুঠোফোনে যোগাযোগ করেন পুলিশের গুলশান বিভাগের উপকমিশনার মোহা. আ. আহাদের সঙ্গে। তখন তিনি বলেন, ঘটনাটি সত্য নয়। পরে দুপুরের দিকে তাঁর কার্যালয়ে গিয়ে আবার কথা হয়। তখন উপকমিশনার বলেন, পুলিশের সঙ্গে ভুল–বোঝাবুঝি হয়েছিল। রাতেই তা ঠিকঠাক হয়ে গেছে।

প্রসঙ্গত, এ দিকে এই ঘটনা নিয়ে এখন চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে সবখানে। এই ঘটনার অবসান ঘটাতে পুলিশ ভুলবুঝাবুজির কথা বললেও আসলে যে কী নিয়ে ভুল–বোঝাবুঝি হয়েছে, তা বলতে চাননি তিনি।

About Rasel Khalifa

Check Also

উপদেষ্টা পরিষদেই বৈষম্য

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে আঞ্চলিক বৈষম্যের অভিযোগ উঠেছে। ২৪ সদস্যের এই পরিষদে ১৩ জনই চট্টগ্রাম …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *