বছরের শেষে অনুষ্ঠিত হবে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। আর এই নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের প্রায় সকল রাজনৈতিক দলগুলো তাদের কৌশল নিয়ে মাঠে নামার জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ নিবে না এমনটাই জানিয়ে দিয়েছেন দলটির নেতাকর্মীরা। এদিকে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন যাতে সুস্ঠুভাবে এবং কোনো ধরনের অনিয়ম বহির্ভূত কিছু না ঘটে সেই লক্ষ্যে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন হতে চলেছে আগামি মাসের মাঝামাঝি সময়ে। নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের বিষয়ে রাস্ট্রপতি আবদুল হামিদ দেশের সকল রাজনৈতিক দলগুলোর প্রধানদের সাথে সংলাপ শুরু করেছেন। এই সংলাপের আলোচ্য বিষয় হলো নতুন নির্বাচন কমিশন কীভাবে গঠন করা হবে তার মতামত নেওয়া।
এদিকে নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতির ডাকা সংলাপে অংশ না নিতে ড. কামাল হোসেনকে অনুরোধ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন গণফোরামের (একাংশ) সভাপতি মোস্তফা মহসিন মন্টু। তিনি বলেন, ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ হয়েছে। আমরা তাকে এই সংলাপে না যেতে অনুরোধ করেছি।
শনিবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান মন্টু।
গত ৩ ডিসেম্বর জাতীয় সম্মেলনের মাধ্যমে মন্টুকে সভাপতি ও সুব্রত চৌধুরীকে সাধারণ সম্পাদক করে গণফোরামের এই অংশ নতুন কমিটি গঠন করে। সেখানে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে রাখা হয় মূল দলের সভাপতি কামাল হোসেনকে।
মন্টু বলেন, আমরা তার বরাবর একটি চিঠিও দিয়েছি। সেই চিঠিতে গণফোরামের ঐতিহ্য এবং সুনাম অক্ষুন্ন রাখার স্বার্থে ড. কামাল হোসেনকে এবং গণফোরামের পক্ষে এই সংলাপে অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত থাকার জন্য সবিনয়ে অনুরোধ জানিয়েছি।
চিঠিতে কামাল হোসেনকে গণফোরামের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে সম্বোধন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে চিঠিটি পড়ে শোনান গণফোরামের এই অংশের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী।
চিঠিতে বলা হয়, ‘এ দেশের মানুষ বিশ্বাস করে, রাষ্ট্রপতির এই সংলাপ কার্য্ত একটি নাটকীয় আনুষ্ঠানিকতা মাত্র। চলমান সংলাপ দেশবাসীর কাছে পূর্বের মতোই চাতুর্য্পূর্ণ সংলাপ হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। কাজেই উক্ত সংলাপে গণফোরামের নামে অংশগ্রহন করা অপ্রত্যাশিত এবং বর্তমান সরকারের অপশাসন ও জনগনের ভোটাধিকার হরণের রাজচালাকীর সহযোগী হিসাবে গণ্য করা হবে।’
গণফোরামের একাংশের নির্বাহী পরিষদের সভায় সংলাপে না যাওয়ার যে সিদ্ধান্ত হয়েছে, সে বিষয়টিও চিঠিতে কামাল হোসেনকে জানানো হয়।
প্রসঙ্গত, নতুন ইসি গঠনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। তবে বিএনপিসহ কয়েকটি দল তা বর্জন করেছে। গণফোরামও রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপের আমন্ত্রণ পেয়েছে। আগামীকাল রোববার তাদের বঙ্গভবনে যেতে চিঠি দেওয়া হয়েছে কামাল হোসেনকে। তবে দলটিতে ভাঙনের ফলে মন্টুর নেতৃত্বাধীন অংশের নিবন্ধন নেই।
তবে দেশের অন্যতম রাজনৈতিক দল বিএনপি রাস্ট্রপতির সাথে সংলাপের বিষয়ে সাড়া দিবে না এমন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়েছে। তারা এই সরকারকে একটি রাতের আধাঁরে ভোট কারচুপি করা সরকার হিসেবে আখ্যা দিয়ে বলেছে। বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে বিএনপি এই নির্বাচনে অংশ নিবে না। তারা জানিয়েছে এই সংলাপে যাওয়ার কোনো মানেই হয় না। সরকার সংলাপের নামে ভেল্কিবাজী দেখাচ্ছে। এটা শ্রেফ লোক দেখানো সংলাপ। সংলাপ হবে মতামত শুনবে কিন্তু নির্বাচন কমিশন তাদের মতো করে গঠন করবে।