বাংলাদেশের তেলের দাম বাড়ার পর যে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে তা অবসানের লক্ষ্যে তিন দিনের মধ্যে রাশিয়ার পরিশোধিত তেল ঢুকবে বাংলাদেশের ইস্টার্ন রিফাইনারিতে। খালাসের অপেক্ষায় আছে চট্টগ্রাম বন্দরে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর আমদানির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন। এদিকে, ডলার সাশ্রয়ে শিপিং কপোরেশনের তিনটি অয়েল ট্যাংকারের মাধ্যমেও তেল আনার চেষ্টা চলছে।
বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান সচিবালয়ে এক মতবিনিময় সভায় বলেন, ‘বিশ্বের যে দেশে তেলের দাম কম পাওয়া যাবে সেখান থেকেই আমদানি করা হবে বলে।’
এদিকে, জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে দুইভাবে লাভবান হবে বাংলাদেশ। কম মূল্যে জ্বালানি তেল পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চাপ কমবে ডলারের ওপর। কাটবে দেশে চলমান সংকটও। তবে পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কে যেন কোনো প্রভাব না পড়ে সেদিকেও খেয়াল রাখার আহ্বান সংশ্লিষ্টদের।
বেশ কয়েকদিন ধরেই আলোচনায় রাশিয়া থেকে সাশ্রয়ী মূল্যে জ্বালানি তেল আমদানির বিষয়টি। শুরুতে অপরিশোধিত তেল বিক্রির প্রস্তাব দিলেও দেশটি এখন পরিশোধিত তেল সরবরাহে আগ্রহী। এরই মধ্যে বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে তেলের নমুনা।
তবে পুরো বিষয়টিই এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে। আর দেশটি থেকে জ্বালানি তেল আমদানি নিয়ে মূল্য পরিশোধসহ নানা বিষয়ে রয়েছে বিভিন্ন জটিলতা। আর এসব নিয়ে শিগগিরই রাশিয়ার সঙ্গে বৈঠক হবে বলে জানাচ্ছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন-বিপিসি সূত্র।
এ ব্যাপারে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ বদরুল ইমাম বলেন, রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল আমদানির আগে বিবেচনায় রাখতে পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টিও। সরাসরি রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করতে হলে পরিশোধিত তেল আনার পক্ষেই মতামত দিচ্ছেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা।
তবে রাশিয়া থেকে তেল আমদানির ক্ষেত্রে আরেক চ্যালেঞ্জ হচ্ছে মুল্য পরিশোধ। আর এক্ষেত্রে ভালো বিকল্প হতে পারে দ্বিপাক্ষিক মুদ্রা বিনিময়, এমনটাই মনে করেন অর্থনীতিবিদ মুস্তাফিজুর রহমান।
সবপক্ষের সঙ্গে ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে রাশিয়ার তেল আমদানি করতে পারলে দুইভাবে লাভবান হতে পারে বাংলাদেশ। একটি হলো কম মূল্যে জ্বালানি পাওয়া, অন্যটি ডলারের ওপর চাপ কমানো- এমনটাই ভাবছেন সংশ্লিষ্টরা।
উল্লেখ্য, বর্তমানে বাংলাদেশে জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়ার কারনে বেশ অস্বস্তিতে পড়েছে সাধারন মানুষ এবং হঠাৎ করে এমন অস্বাভাবিক মুল্যবৃদ্ধি পাওয়ার কারন হিসেবে অনেকে নানা যুক্তি দিচ্ছে তবে সাধরন মানুষ তা মানতে নারাজ