আগামী সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলো মধ্যে ব্যাপক আলোচনা চলচ্ছে। তবে নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে দেশের বড় দুটি রাজনৈতিক দল আওয়ামীলীগ ও বিএনপি ভিন্ন অবস্থান নিয়েছেন। আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে সংবিধানের বাহিরে নির্বাচন সম্ভব নয় কিন্তু বিএনপি নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে। এ সমস্যার সমাধান রাজ পথেই হবে এমন সিদ্ধান্তই জানিয়েছে জানিয়েছে দুটি দলের নেতারা। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা পদে শিশু-পাগলের তালিকা চেয়ে এ প্রসঙ্গে নিয়ে যে কথা বললেন।
এরশাদ সরকারের পতনের পর তিন জোটের রূপরেখা অনুযায়ী তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করে বিএনপি। এ সময় দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেন, শিশু ও পাগল ছাড়া কেউ নিরপেক্ষ নয়।
এখন সেই বিএনপিই তত্ত্বাবধায়ক সরকার চাইছে। এ জন্য ১৪ দলের সমন্বয়ক ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমু দলের কাছে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা পদের জন্য শিশু ও পাগলদের তালিকা চেয়েছেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ৪৭তম শাহাদত বার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ সাম্যবাদী দলের (এমএল) আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বৈঠকে শেখ হাসিনা ভোট ব্যবস্থার উন্নয়নে সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে ১৫ই আগস্ট সংগঠিত হওয়ায় দেশবাসী অসুবিধা ভোগ করছে বলে মন্তব্য করেন আমির হোসেন আমু। তিনি আরও উল্লেখ করেন, যারা বঙ্গবন্ধুকে হ/’ত্যা করে এদেশে, তারা এসেই জাতীয় চার মূলনীতি ছুড়ে ফেলে দিয়েছিলেন।
এই দেশে গণতন্ত্রের কবর রচনা জিয়ার হাতে শুরু হয়েছিল মন্তব্য করে আমু বলেন, ভোটের নামে হ্যাঁ-না যেদিন শুরু হলো, সেদিন থেকেই ভোটের কারচুপি এবং শ্লোগান উঠেছিল ‘এক হোন্ডা দুই গুণ্ডা’ ‘এক স্টেনগান ভোট ঠাণ্ডা’। তখন একটা হোন্ডায় দুইজন স্টে/নগান নিয়ে ভোট সেন্টারে গিয়ে ভোট হা/ইজ্যাক করে হ্যাঁ-না ভোট শুরু হয়েছিল।
জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতায় আসেন; শান্তিপূর্ণভাবে নয়। এটা যদি সাংবিধানিক বৈধতা নিতে হয় তাহলে সংসদে দুই-তৃতীয়াংশ দল তার ছিল না। জিয়া সেদিন থেকেই অবৈধ ক্ষমতাকে বৈধ করতে ভোটে কারচুপি শুরু করেন বলে মন্তব্য করেন আমুর।
তিনি বলেন, আজকে যারা বড় বড় কথা বলছেন, ভোট ব্যবস্থা নিয়ে কথা বলছেন, নির্বাচন কমিশনের সামনে না গিয়ে বাইরে যারা বিবৃতি দিচ্ছেন, তারা নিজেদের চেহারাগুলো আয়নায় দেখেন। যারা ১২ দিনের ভোট কারচুপি ও ছিনতাই করেছিল তারা আজ বড় কথা বলছে।
এ সময় শিশু ও পাগলদের তালিকা চান আওয়ামী লীগের এ জ্যেষ্ঠ নেতা।
দেশে গু/ম ও খু/ন প্রসঙ্গে আমু বলেন, ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় আসার পর যে নারকীয় হ/’ত্যাকাণ্ড ও নারী নির্যাতন করেছে তা শুধু বাংলাদেশেই সীমাবদ্ধ ছিল না। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সংসদে উত্থাপিত হয়েছিল। যারা এসব করেছিল- তারাই আজকে বিশ্বের বিভিন্ন সংস্থার কাছে যাচ্ছে।অথচ সেদিন তাদের সংগঠিত বর্বর ভাবমূর্তি এদেশকে কলুষিত করেছে।
সংবিধানের ভিত্তিতে দেশ পরিচালিত হচ্ছে দাবি করে আমু বলেন, সংবিধানবিরোধী কাজ করার ক্ষমতা সরকারের নেই। যা করতে হবে সংবিধান অনুযায়ীই করতে হবে। কোনো দলের পক্ষপাতিত্ব করে সংবিধানকে পাশ কাটিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। তার মানে এই নয় যে কোনো দল নির্বাচন না করলে নির্বাচন হবে না। এমনও তো হতে পারে যে সেই দলকে বেশি আনুকূল্য দিতে গিয়ে অন্যান্য দল উঠে যাচ্ছে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেছেন, তারা বঙ্গবন্ধুর রক্তকে ভয় পায়, সে কারণেই তারা ষ/ড়যন্ত্র করছে। এজন্য ১৫ আগস্টে তিনটি পরিবারের উপর হা/মলা করে, বঙ্গবন্ধু, শেখ মনি ও সেরনিয়াবাতের পরিবারে হা/মলা করে। সেদিন আর অন্য কোনো নেতার ওপর হা/মলা হয়নি। খালেদা জিয়া বলেছিলেন, শতবছর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসতে পারবে না, সেজন্য ২১ আগস্ট ঘটিয়েছে মা-ছেলে। এই ষ/ড়যন্ত্র এখনও শেষ হয় নি। সেই ষড়যন্ত্রে একটা পরিবারই দায়ী সেটা- জিয়া পরিবার। দেশে খু/ন-গু/ম-অগ্নি/সংযোগের জন্যও দায়ী এ পরিবার।
বাংলাদেশ সাম্যবাদী দলের (এমএল) সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়ার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক ডা. শহিদুল্লাহ, ওয়ার্কাস পার্টির পলিট ব্যুরোর সদস্য আনিসুর রহমান মল্লিক।
প্রসঙ্গত, নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে যারা এখন কথা বলছে তাদের চিন্তা করা উচিত তারা করেছিল। কারোর জন্য নতুন করে নিয়ম তৈরী করা হবে না সংবিধানের ভিরতে থেকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমু।