নতুন বাজেটে নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্তদের উপেক্ষিত করে বাজেট করা হয়েছে। কারন নিত্যপ্রয়োজনীয় অনেক জিনিসের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে যা নিম্ন আয়ের মানুষের নাগালের বাহিরে চলে যাবে। তাছাড়া বিশ্বব্যাপি ছুুুড়িয়ে পড়া রোগের কারনে অনেকের উপার্জন কমেছে কিন্তু পন্যের দাম কমেনি এতে মধ্যবিত্তেরও হিমশিম খেতে হচ্ছে। বাজেট প্রত্যাশিত অনুযায়ী হয়নি বলে মন্তব্য করলেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে শ্রমিক ও কৃষকের স্বার্থ উপেক্ষিত হয়েছে, করপোরেট ব্যবসায়ীরা পাবেন সব সুবিধা আর অর্থমন্ত্রীর ক্লায়েন্টদের স্বার্থই রক্ষা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বাজেটের ৪২ ভাগ ব্যয় করা হবে জনপ্রশাসন, আমলাতন্ত্র, সামরিক ও পুলিশ বাহিনীতে। চোখ বন্ধ করে বিভিন্ন দেশ থেকে যে ধার করেছেন, তার সে ধার বাবদ যাবে ১৬ ভাগ। এর সবই শ্রমিক-কৃষকদের টাকা থেকে যাবে। কিন্তু কর্পোরেট ব্যবসায়ীরা তাদের পকেট থেকে ঋণ শোধ করবে না বরং তারা সব সুবিধা পাবে। তাই এই বাজেট কৃষক শ্রমিকদের বাঁচার পথ দেখাতে পারেনি।
শুক্রবার রাজধানীর পল্টন কর্নারে গণতান্ত্রিক গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফোরাম আয়োজিত শ্রমিক সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন ডা. জাফরুল্লাহহ।
রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, বাজেটে শ্রমিক-কৃষকের কথা না বলায়, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কথা না থাকায় আন্দোলন অব্যাহত রাখুন। কারণ কৃষক-শ্রমিকদের মুক্তি না হলে দেশের মুক্তি হবে না। কৃষক ও শ্রমিকদের জন্য বাজেটে বরাদ্দ কোথায়? উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের ঠিকই বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বেতন বৃদ্ধি চাইলে আমও যাবে ছালাও যাবে, শ্রমিকদের আম-ছালা যাবে কিন্তু আপনার মসনদ থাকবে তো?
তিনি বলেন, পদ্মা সেতুর জন্য অবশ্যই অভিনন্দন জানাতে হবে তবে খোলা মনে, কিন্তু খোলা মনে অভিনন্দন জানাতে পারছি না। ১০ হাজার কোটি টাকার সেতু হয়েছে ৪০ হাজার কোটি টাকায়। হতে পারে, খরচ বেড়েছে, জীবনযাত্রার সবকিছুরই দাম বেড়েছে। কিন্তু দয়া করে হিসাবটা দিন।
তিনি প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, আপনার ছেলে জয় আমেরিকায় থাকে। বাংলাদেশ থেকে প্রতিমাসে কত টাকা বেতন ভাতা পান, দেশের মানুষ তার হিসাবটা জানতে চায়।
তিনি আরও বলেন, শ্রমিকদের শুধু ২০ হাজার টাকা বেতন দিলে হবে না। বিনা বেতনে তাদের সন্তানদের পড়াতে হবে এবং যাতায়াতের ব্যবস্থা করতে হবে। শ্রমিকদের রেশন দিন, যে রেশন আপনি মিলিটারিকে দিচ্ছেন, যে রেশন দিচ্ছেন পুলিশ-গোয়েন্দা বাহিনীকে।
গণতান্ত্রিক গার্মেন্টস শ্রমিক ফোরামের সভাপতি আব্দুল আলীম স্বপনের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, ভাসানী আনসারী পরিষদের মহাসচিব শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, ভাসানী আনুষারী পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য আক্তার হোসেন, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মিন্টু মিয়া প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, যে বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে এতে দেশের শ্রমিক ও কৃষদের কথা না চিন্তা করে দেশের ব্যবসায়ী ও আমলাদের সুবিধা প্রদানের জন্য করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। সরকার দেশের শ্রমিক, কষৃকসহ নিম্ন শ্রেনীর পেশার মানুষের কথা ভাবে না।