লক্ষ্মীপুর-৩ (সদর) আসনের উপনির্বাচনে ৫৭ সেকেন্ডে ৪৩টি ব্যালটে সিল মেরে আলোচনায় আসা সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আজাদ হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বর্তমানে সে সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ থানার হেফাজতে রয়েছে। শুক্রবার সকালে তাকে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) তুলে নিয়ে যায় বলে পরিবারের অভিযোগ।
চন্দ্রগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তহিদুল ইসলাম শনিবার বিকেলে গনমাধ্যমকে বলেন, আজাদ হোসেন এখন থানায় রয়েছেন। বিস্তারিত পরে দেওয়া হবে।
লক্ষ্মীপুর-৩ আসনের উপনির্বাচন গত ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনের সময় একটি কেন্দ্রে একাধিক ব্যালট পেপারে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আজাদ হোসেনের নৌকা প্রতীকে স্ট্যাম্প দেওয়ার একটি ভিডিও ফাঁস হয়। ৫৭ সেকেন্ডের ভিডিওতে আজাদকে ভোটকেন্দ্রে বসে ব্যালট পেপারে নৌকা প্রতীকে স্ট্যাম্প দিতে দেখা যায়। তার গলায় ঝুলছে নৌকা প্রতীকের কার্ড। এ সময় তাকে ৪৩টি ব্যালটে নৌকা প্রতীকে সিল মারতে দেখা যায়।
এ ঘটনায় দেশজুড়ে সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এমন অবস্থায় গত মঙ্গলবার উপনির্বাচনের ফলাফলের গেজেট প্রকাশ স্থগিত রেখে অনিয়মের অভিযোগ তদন্ত করার সিদ্ধান্তের কথা জানায় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গত বুধবার লক্ষ্মীপুর জেলা নির্বাচন কার্যালয়ে ওই কেন্দ্রে ভোট নেওয়া কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ও প্রার্থীদের পোলিং এজেন্টদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করে ইসির তদন্ত কমিটি। আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
আজাদের বড় ভাই আলমগীর হোসেন জানান, ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর থেকে পরিবারের সদস্যরা আজাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন না। গতকাল শুক্রবার সকালে আজাদ হোসেনকে ডিবির পরিচয়ে চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এম মাসুদুর রহমানের চন্দ্রগঞ্জের বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায়। গতকাল সারাদিন তারা তাকে খুঁজে পায়নি। আজ শনিবার খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন আজাদ এখন চন্দ্রগঞ্জ থানায়।
আজাদ হোসেন লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দিঘলী ইউনিয়নের দক্ষিণ খাগুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে নৌকার এজেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তিনি চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ছিলেন। গত ৮ অক্টোবর দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে তাকে বহিষ্কার করে জেলা ছাত্রলীগ।
লক্ষ্মীপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শাহজাহান কামাল ৩০ সেপ্টেম্বর মারা যান। নির্বাচন কমিশন ৩ অক্টোবর আসনটি শূন্য ঘোষণা করে। ৪ অক্টোবর উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়।