মার্কিন নিষেধাজ্ঞা বাংলাদেশে এই শব্দটি বেশ আলোচিত এবং পরিচিত। বিশেষ করে বাংলাদেশের এলিট ফোর্স র্যাবের উপর নিষেধাজ্ঞা দেয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। আর সেই থেকেই এ নিয়ে আলোচনা সমালোচনা যেন থামছেই না।এ দিকে নতুন করে আবারো নিষেধাজ্ঞা নিয়ে মুখ খুলেছেন দেশের বর্তমান পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার।
ভুল তথ্যের ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্র র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে বলে দাবি করেছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। তিনি বলেন, ১০ ডিসেম্বর, ২০২১, যুক্তরাষ্ট্র মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে বাংলাদেশের অন্যতম সফল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী র্যাবকে নিষিদ্ধ করে।
মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
র্যাবের নিষেধাজ্ঞার ইস্যুসহ বিভিন্ন বিষয়ে গত এক বছরে অন্তত ১৫-২০টি গুরুত্বপূর্ণ উচ্চ পর্যায়ে বৈঠক হয়েছে জানিয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, মহামারীর কারণে ২০২১ সালের ডিসেম্বরের আগে ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা থাকায় সরাসরি (যুক্তরাষ্ট্র) সফর হয়নি।
শাহরিয়ার আলম বলেন, আমরা ২০২১ সালের ডিসেম্বরের পরে যোগাযোগ করব। তারা (বিএনপি) ভেবেছিল আগামী ডিসেম্বরের (২০২২) মধ্যে তারা আরেকটি নিষেধাজ্ঞা পেতে পারে। এটা উপলব্ধি করে.. আমরা তো আওয়ামী লীগ, জনগণের কাছে থাকি। আমরা জানি আমাদের শক্তি কোথায় আছে। একই সাথে আমরা আমাদের সীমাবদ্ধতা জানি। সব মিলিয়ে আমরা শুধু মার্কিন প্রশাসনই নই, এসব বিষয়ে যাদের আগ্রহ আছে তারা যেন কোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না করে (কোন উদ্যোগ) না। আমরা আমাদের গঠনমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে এটা জানাতে পেরেছি। বিএনপির সেই পরিকল্পনা মাটিতে পড়ে মারা যায়।
১০ ডিসেম্বরের পরে তাদের নেতারা কোথায় লুকাবেন সেই পরিকল্পনা বিএনপি করেছিল বলেও দাবি করেন প্রতিমন্ত্রী।
এ সময় শাহরিয়ার আলম একটি চিঠি দেখিয়ে বলেন, আজ একটি চিঠির কপি নিয়ে এসেছি। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ২০২০ সালের ১৮ জানুয়ারি জাপানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের কাছে একটি চিঠি লেখেন। আগামীকাল হয়তো তারা (বিএনপি) সংবাদ সম্মেলন করে বলবে এই চিঠিটি সত্য নয়।
ওই চিঠিতে মির্জা ফখরুল নিজেকে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দলের মহাসচিব হিসেবে উল্লেখ করেছেন বলেও দাবি করেন শাহরিয়ার আলম। তিনি বলেন, বিএনপি জাপানের প্রধানমন্ত্রীর কাছে সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল দাবি করছে। জাপানের চোখ, কান ও মাথা আছে। এখানে তাদের একজন প্রতিনিধি আছে। একজন রাষ্ট্রদূত আছেন। তারা ভালো করেই জানে যে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ও প্রাচীন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ, বিএনপি নয়।
ওই চিঠিতে বিএনপি দাবি করে, দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান সামরিক অভ্যুত্থানে নিহত হয়েছেন। তবে চিঠিতে তিনি যে সামরিক আইনের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেন তার উল্লেখ করা হয়নি। ষড়যন্ত্রের কারণে ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি পরাজিত হয়েছিল বলে চিঠিতে উল্লেখ রয়েছে বলেও দাবি করেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, গণজোয়ারের কারণে ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জয়লাভ করে।
প্রসঙ্গত, ২০২১ এরপর অবশ্য বাংলাদেশকে আর কোনো নিষেধাজ্ঞা দেয়নি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তবে বহাল থাকা নিষেধাজ্ঞা এখনো প্রত্যাহার করেনি দেশটি। এ ছাড়াও মাঝে শোনা গিয়েছিলো নতুন করে আবারো নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে দেশটি। তবে এ নিয়ে পরে আর তেমন কিছু শোনা যায়নি।