বুয়েটের মেধাবী ছাত্র ফারদিন নূর পরশের নিথর হওয়ার ঘটনার পর দেশজুড়ে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হয় এবং গণমাধ্যমে তার বিষয়টি একটি পরিকল্পিত হ”/ত্যাকাণ্ড হিসেবেই খবর প্রকাশ করতে থাকে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে এবং নিগূঢ় তদন্তের মাধ্যমে গত বুধবার অর্থাৎ ১৪ ই ডিসেম্বর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ফারদিনের ঘটনার কারণ হিসেবে জানায়, ফারদিনকে হ”/ত্যা করা হয়নি, তিনি আত্মহনন করেছেন। এদিকে র্যাবের ছায়া তদন্ত অনুযায়ী, তাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে ফারদিন আত্মহনন করেছেন।
ফারদিনের বাবা নুরুদ্দিন রানা ও তার সহপাঠীরা তাৎক্ষণিকভাবে র্যাব-পুলিশের দাবির সঙ্গে একমত হতে পারেননি। তাই বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে থাকা তথ্য-প্রমাণ দেখতে বুয়েটের একদল শিক্ষার্থী গোয়েন্দা কার্যালয়ে যান। তথ্যপ্রমাণ দেখে ফারদিনের সহপাঠীরা ডিবির বক্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করেন।
তবে আত্মহননের বিষয়টি এখনো মেনে নিতে পারছেন না ফারদিনের বাবা। এ অবস্থায় জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। সংশ্লিষ্টদের প্রশ্ন, হ”/ত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ফারদিনের বান্ধবী বুশরাকে কেন গ্রেপ্তার করা হলো?
এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান হারুন অর রশিদ বলেন, ফারদিন নিখোঁজ ও তার নিথর দেহ উদ্ধারের পর বুশরার সঙ্গে দুই দফায় কথা হয়েছে। কিন্তু তার কাছ থেকে কিছুই পাওয়া যায়নি। বিষয়টি ফারদিনের বাবাকে জানানো হয়েছে। কিন্তু তিনি বুশরাকেই আসামি করে মামলা করবেন বলে গোঁ ধরেন। এ ঘটনায় পুলিশ বাদীর লিখিত অভিযোগ গ্রহণ করে বুশরাকে গ্রে”প্তার করে।
তিনি বলেন, ঘটনার পর বুশরাকে আমরা কখনো দোষী হিসেবে দেখিনি। আমি কেবল তার কাছ থেকে ফারদিনের হ”তাশার কথা জানতে পেরেছি। এ কারণে আমরা দ্বিতীয় দফা রি”মান্ডের আবেদন করিনি। এখন শিগগিরই এ মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হবে। একই তথ্য দিয়ে রামপুরা থানার ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, বাদীর পীড়াপীড়ির কারণে বুশরার বিরুদ্ধে মামলা নেওয়া হয়েছিল।
ডিবি প্রধান আরও বলেন, ওই রাতে ফারদিন বাবুবাজার সেতু ও সুলতানা কামাল সেতুতে যান। কিন্তু গত দুই বছরেও তিনি এসব এলাকায় যাননি। দুই বছরে ৫২২টি নম্বরে ফোনে কথা বলেছেন ফারদিন।
গত ৪ নভেম্বর রাতে বুয়েটের ছাত্র ফারদিন তার বান্ধবী বুশরাকে রাজধানীর রামপুরা এলাকায় বাসায় যাওয়ার জন্য এগিয়ে দেন। এরপর থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। এরপর ৭ নভেম্বর সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদী থেকে তার নিথর দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ফারদিনের নিথর দেহ শীতলক্ষ্যা নদীতে পাওয়ার ফারদিনের বাবা বাদী হয়ে ফারদিনের বান্ধবী বুশরাসহ আরও বেশ কয়েকজনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করেন। এরপর ফারদিনের ঘটনার আসল রহস্য উদ্ঘাটন করতে তদন্তে নামে গোয়েন্দারা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা ফারদিন আত্মহনন করেছেন, এমন তথ্য জানালেন।