বাংলাদেশে সম্প্রতি হয়ে গেছে বড় ধরনের একটি ঝড়। সিত্রাঙ নামের এই ঝরে বাংলাদেশে তেমন কোনো ক্ষতি না হলেও ঘটে গেছে বেশ কিছু ঘটনা। তার মধ্যে একটি অবাক করা ঘটনা ঘটেছে সেইন্ট মার্টিন এ।সেন্ট মার্টিনের চেরাদ্বীপে হটাৎই ভেসে আসে মানুষ ছাড়া একটি জাহাজ। আর সেই জাহাজটি ঘিরে উঠেছিল বেশ শোরগোল।
টিপবে এবার জানা গেলো এর নেপথ্যের ঘটনা। কক্সবাজারের সেন্ট মার্টিনের চেরাদ্বীপে আটকা পড়া ভলগেট জাহাজটি মালয়েশিয়া থেকে পাথর নিয়ে এসেছে। বাংলাদেশ নৌবাহিনীর একটি চলমান প্রকল্পের জন্য ৯,৬০০ টন পাথর নিয়ে বার্জটি ১৮ অক্টোবর কুতুবদিয়ায় আসে। পাথরটি পরিষ্কারের পর গত বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে মালয়েশিয়ার লুমুত পারকের উদ্দেশ্যে রওনা হয়।
সিঙ্গাপুর পতাকাযুক্ত বার্জ (এমআর ৩৩২২) গ্লোরি-৩ নামে একটি শক্তিশালী টাগবোট দ্বারা টানা হয়েছিল। ঝড়ের কারণে টাগবোটের সঙ্গে বাধার দড়ি ছিঁড়ে গেছে। পরে বার্জটি ভেসে গিয়ে চেরাদ্বীপের চারণভূমিতে আটকে যায়। কাছেই রয়েছে টাগবোট গ্লোরি-৩।
কক্সবাজার জেলার পেকুয়া উপজেলার মগনামা এলাকায় ‘বানৌজা শেখ হাসিনা’ নৌ ঘাঁটি প্রকল্পের কাজ চলছে বলে জানা গেছে। ওই প্রকল্পের জন্য বার্জটি মালয়েশিয়ার লুমুট থেকে পাথর পরিবহন করছে। এর আগে এই প্রকল্পের জন্য পাথর এনেছিল। পাথর অপসারণের পর নৌ-বাণিজ্য বিভাগ, চট্টগ্রাম বন্দর ও চট্টগ্রাম কাস্টমসের অনাপত্তিপত্র নিয়ে তারা মালয়েশিয়ার উদ্দেশে রওনা হন।
বার্জের স্থানীয় শিপিং এজেন্ট, জার ওয়ার্ল্ড শিপিং লাইনের মালিক, শাহ আলম বলেন, মালামাল খালাস শেষে গত বৃহস্পতিবার টাগবোটটি বার্জ নিয়ে মালয়েশিয়ার উদ্দেশে রওনা হয়। এরপর আমাদের সঙ্গে আর কোনো যোগাযোগ হয়নি। নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ড বার্জটিকে সমুদ্রে নামাতে কাজ করছে।
নৌপরিবহন অধিদপ্তরের প্রিন্সিপাল অফিসার ক্যাপ্টেন গিয়াস উদ্দিন আহমেদ আমাদের টাইমসকে বলেন, ‘২০০৮ সালে চীনের তৈরি সিঙ্গাপুরের পতাকাবাহী বার্জটি বৈরী আবহাওয়ার কবলে পড়ে। এটি টাগবোট থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে চেরাদ্বীপে আটকে যায়। কাছেই টাগবোট। তবে জোয়ার বেশি না হলে চর থেকে নামতে অসুবিধা হবে। মালিক চর থেকে নামানোর ব্যবস্থা করবেন।
তিনি বলেন, ভারী পণ্য পরিবহনে বাল্ক জাহাজের পরিবর্তে এ ধরনের বার্জ ব্যবহার করা হয়। এর কোনো ইঞ্জিন বা পাখা নেই। তাই এটি পরিচালনার জন্য জনবলের প্রয়োজন হয় না। বার্জটি ৯৬.৫৯ মিটার দীর্ঘ, ২৭.৪৩ মিটার চওড়া এবং ৬.১০ মিটার গভীর। শক্তিশালী টাগবোটগুলি এটিকে তার গন্তব্যে টেনে নিয়ে যায়। বার্জে কোন ধারক বা বাল্ক পণ্য নেই। এটি একটি ইস্পাত বার্জ হিসাবে সিঙ্গাপুরের জাহাজের নিবন্ধকের সাথে নিবন্ধিত।
এ দিকে জাহাজটি ফেরত নেওয়া নিয়ে এখনো জানা হয়নি কোনো সদুত্তর। তবে রহস্যময় এই জাহাজটি দেখতে প্রতিদিনই ভিড় করছে হাজারো মানুষ।