বাংলাদেশ-ভারত প্রতিবেশী একটি রাষ্ট্র। দীর্ঘদিন ধরেই এই দুই রাষ্ট্রের মধ্যে ভালো সম্পর্ক বিদ্যমান। তবে বাংলাদেশের থেকে ভারত সব দিক থেকে সুবিধা নিয়ে থাকে বেশি। সম্প্রতি হয়েছে আরো একটি সমাঝোতা সাক্ষর।ভারত বাংলাদেশের সিলেট, মৌলভীবাজার সড়ক ব্যবহার করে আসাম থেকে ত্রিপুরা, মনিপুর রাজ্যে জ্বালানি তেল ও তরল পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) নিয়ে যাবে। বন্যা ও ভূমিধসের কারণে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিধ্বস্ত হওয়ায় ভারতকে এই সুবিধা দিচ্ছে বাংলাদেশ।
এ বিষয়ে বুধবার ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশন লিমিটেড (IOCL) এবং বাংলাদেশ সরকারের সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে।
কোন শর্তে এবং কতদিনের জন্য ভারতীয় কোম্পানি বাংলাদেশের রাস্তা ব্যবহার করে জ্বালানি পরিবহন করতে পারবে তা এমওইউতে উল্লেখ করা হয়েছে।
জানা গেছে, জরুরী সময়ে দুই মাসের জন্য বাংলাদেশ হয়ে ভারত জ্বালানি পরিবহনের সুবিধা দেবে। জ্বালানি বহনকারী ভারতীয় যানবাহনের জন্য ভারতীয় ভিসা, অভিবাসন, কাস্টমস এবং রুট পারমিট সুবিধা নিশ্চিত করা হবে। ভারতীয় যানবাহন প্রতি কিলোমিটার প্রতি টন জ্বালানি পরিবহনে ১.৮৫ পয়সা টোল দিতে হবে। চট্টগ্রাম, আশুগঞ্জ বন্দর থেকে আসাম, ত্রিপুরায় পণ্য বহনকারী (ট্রান্সশিপমেন্ট) ট্রাকগুলোকে একই পরিমাণ টোল দিতে হয়।
ভারতীয় জ্বালানি যানবাহন চলাচলের সুবিধার্থে মৌলভীবাজার-শমসেরনগর-চাতলাপুর সড়কের ধলাই সেতু পুনর্বাসন এবং তামাবিল-সিলেট-ফেঞ্চুগঞ্জ-রাজনগর-ব্রাহ্মণবাজার-শমসেরনগর-চাতলাপুর সড়ক সংস্কারের নির্দেশ দিয়েছে সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়। মঙ্গলবার সওজকে পাঠানো মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের খরচে এই সংস্কার কাজ করা হবে।
এমওইউ অনুযায়ী, জ্বালানি তেল, এলপিজি যানবাহন মেঘালয়ের ডাউকি থেকে বাংলাদেশের সিলেটের তামাবিল হয়ে প্রবেশ করবে। সিলেট থেকে চাতলাপুর চেকপোস্ট হয়ে মৌলভীবাজারের শমশেরনগর যাবেন ত্রিপুরার কৈলাশহর। জ্বালানি পরিবহন শেষে একই রুট দিয়ে ভারতে ফিরে যাবে।
বন্যা ও ভূমিধসের কারণে আসামে সড়ক ও রেলপথ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দেশের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানি IOCL রাজধানী গুহাটি থেকে রাজ্যের ডিমহাসো জেলা, বারাক উপত্যকা হয়ে ত্রিপুরা, মনিপুরে জ্বালানি তেল ও গ্যাস পাঠায়। রেলপথ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় গোহাটি থেকে ত্রিপুরা, মণিপুর, মিজোরাম হয়ে মেঘালয়ে জ্বালানি পাঠাতে হয়। এতে পরিবহন খরচ বেড়েছে। দ্বিগুণ সময় লাগে। দূরত্ব বেড়ে ১৭৩ কিমি.
২২ মে, ভারত বিপজ্জনক পাহাড়ি পথ এড়িয়ে বাংলাদেশের মাধ্যমে জ্বালানি সরবরাহের সুবিধার জন্য অনুরোধ করে। ২০১৬সালের সেপ্টেম্বরে বন্যার পর ভারত আসাম থেকে বাংলাদেশ হয়ে ত্রিপুরায় জ্বালানি তেল পাঠায়।
আসামের বেতকুচি জ্বালানি ডিপো থেকে ত্রিপুরার ধর্মনগর ডিপোর দূরত্ব ৩৭৬ কিমি। এর মধ্যে ১৩৭ কিলোমিটার সড়ক বাংলাদেশের অংশে পড়ছে। ১৫ টন জ্বালানি তেল বহনকারী একটি ভারতীয় ট্যাঙ্কার এই রুট ব্যবহার করার জন্য বাংলাদেশকে ৩,৮০০ টাকা টোল দিতে হবে। ভারতীয় যানবাহন খালি ফেরার সময়ও একই পরিমাণ টোল দিতে হয়।
প্রসঙ্গত, এ দিকে এই বিষয় নিয়ে এখন স্যোশাল মিডিয়ায় হয়েছে বেশ সমালোচিত। অনেকেই এ নিয়ে করছেন নানা ধরনের সব মন্তব্যে।