মাশরাফি বিন মর্তুজা খেলার মাঠে যেমন দলনেতা হিসেবে সেরা ঠিক তেমনি এমপি হিসেবে অনেকের মুখেই ফাটাকেষ্ট নামে বহুল পরিচিত এবং জনপ্রিয়। প্রায় সময়ই দেখা যায় এমপি সাহেব সরাসরি নিজেই দেখাশোনা করেন নিজের জেলার বিভিন্ন কর্মকাণ্ড। এ যেন সিনেমার মতই তাইতো জনগণ তাকে ভালোবেসে ফাটাকেষ্ট বলে নাম দিয়েছেন। সম্প্রতি হাসপাতালে অনিয়ম নিয়ে তার হঠাৎ প্রবেশ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়। সেই ঘটনা নিয়েই এবার সংবাদ সম্মেলনে তিনি বললেন। ক্ষমা করে দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন সেই ১০ জন চিকিৎসককে।
শনিবার (১৮ ডিসেম্বর) সদর হাসপাতাল আকস্মিক পরিদর্শনকালে ওই চিকিৎসকদের যথা সময়ে হাসপাতালে উপস্থিত না হওয়াসহ হাসপাতালের নানা অনিয়ম নড়াইল এক্সপ্রেসের নজরে আসে।
পরে মাশরাফী তার উদ্যোগে পরিচালিত হাসপাতালের পরিচ্ছন্ন কাজ তদারক করতে রোববার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুরের পরে সদর হাসপাতালে যান। এসময় কর্তৃপক্ষ ভবিষ্যতে অধিক দায়িত্ব ও নিষ্ঠাবান হবার কথা দেওয়ায় মাশরাফী সকলকে ক্ষমা করে দায়িত্ব সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেন।
সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেওয়া নড়াইল সদর হাসপাতালের বাথরুমসহ সর্বত্র নোংরা, অপরিচ্ছন্ন পরিবেশের জন্য কর্তৃপক্ষ লোকবল সংকটের দোহাই দিলে মাশরাফী স্বয়ং হাসপাতাল পরিচ্ছন্নের উদ্যোগ নেন। এরই অংশ হিসেবে তিনি হাসপাতাল পরিষ্কার পরিচ্ছন্নে লোক নিয়োগ করেন।
এ বিষয়ে তদারকির জন্য তিনি রোববার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে হাসপাতালে যান। এ সময় মাশরাফী সেখানে বাথরুমসহ বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে দেখেন। এ সম্পর্কে রোগীদের সঙ্গে কথা বলেন। পরে সিভিল সার্জনসহ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক এক সভায় যোগ দিলে সেখানে কর্তৃপক্ষ নিজেদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে অরও যত্নবান হওয়ার কথা দেন। পরে মাশরাফী তাদের ক্ষমা করে দেন।
পরে তিনি নির্মাণাধীন ২৫০ শয্যা হাসপাতাল ঘুরে দেখেন। এসময় সাংবাদিকদের ব্রিফকালে মাশরাফী সদর হাসপাতালের লোকবল সংকটসহ স্বাস্থ্যখাতের বিদ্যমান নানা সমস্যা সমাধানে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার কথা জানান।
মাশরাফীর মহানুভবতায় সন্তোষ প্রকাশ করে সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আ ফ ম মুশিউর রহমান বাবু বলেন, এর মধ্যদিয়ে হাসপাতালের চিকিৎসকসহ সকলে নিজেদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে অধিক নিষ্ঠাবান হবেন।
প্রশংসায় পঞ্চমুখ নেতা মাশরাফি বিন মুর্তজা। যেন অন্যায়-অনিয়ম দেখলেই রুখে দাঁড়ান স্বয়ং নিজে। এবারের মতো তিনি ক্ষমা করে দিয়েছেন সেই ১০ চিকিৎসককে, কিন্তু সেটা শর্তসাপেক্ষে। এখন দেখার বিষয় ডাক্তার এবং কর্মচারীরা তাদের কথা কতটুকু রাখে। আর যদি না রাখে তাহলে পরবর্তীতে এমপি মাশরাফি তাদের বিরুদ্ধে কি পদক্ষেপ নেয়।