বরগুনায় রিফাত শরীফের ( Rifat Sharif ) ঘটনায় মামলা দায়ের হওয়া ফাঁ”সির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি ( Ayesha Siddique Minni ) জামিনের জন্য উচ্চ আদালতে একটি আবেদন করেছেন। রিফাত শরীফের ( Rifat Sharif ) ঘটনায় রিফাতের স্ত্রী মিন্নিকে ( Minnie ) আসামি করে মামলা দায়েরের পর অনেক নাটকীয়তা পেরিয়ে শেষ পর্যন্ত মিন্নিকে ( Minnie ) আদালত প্রধান আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে। এই ঘটনায় অন্যদের বিরুদ্ধে মামলা হলেও মিন্নি ছিলেন হাজতের বাইরে।
বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলামে ( May )র নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে গত ( Past ) সপ্তাহে করা মিন্নির জামিন আবেদনের শুনানি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সোমবার ( Monday ) (৩০ মে ( May )) অ্যাডভোকেট মো. শাহিনুজ্জামান ( Md. Shahinuzzaman ) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গত ( Past ) ১৯ জানুয়ারি ( January ) বরগুনায় রিফাত শরীফ হ/’ত্যা মাম’লায় ফাঁ”সির দণ্ডপ্রাপ্ত আয়েশা সিদ্দিক মিন্নি খালাসের আবেদন করেন।
৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২০ তারিখে বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ মোঃ আসাদুজ্জামান এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। আদালত ১০ জন প্রাপ্তবয়স্ক আসামির মধ্যে ৭ জনকে মৃ’/ত্যুদ’ণ্ডাদেশ দেন আদালত। এছাড়া ৬ আসামিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়। বাকি ৪ জনকে খালাস দেওয়া হয়।
পরে নিয়ম অনুযায়ী একই বছরের ৪ অক্টোবর ছয় আসামির মৃ’/ত্যুদ’ণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে পৌঁছায়। এছাড়া মিন্নিসহ অন্য আসামিরাও ৬ অক্টোবর আপিল করেন।
আইনজীবীরা জানান, ফৌজদারি মামলায় আদালত আসামিদের মৃ/’ত্যুদ”ণ্ড দিলে সা’জা কার্যকরের জন্য হাইকোর্টের অনুমোদনের প্রয়োজন হয়। তাই সংশ্লিষ্ট বিচারিক আদালত ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৭৪ ধারা মোতাবেক মামলার সব নথি হাইকোর্টে পাঠায়। যা ডেথ রেফারেন্স নামে পরিচিত। নথি পাওয়ার পর হাইকোর্টের ডেথ রেফারেন্স শাখা পরীক্ষা করে মা”মলার পেপার বুক তৈরি করে। পেপারবুক প্রস্তুত হয়ে গেলে, মামলাটি শুনানির জন্য প্রস্তুত বলে ধরে নেওয়া হয়।
তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রধান বিচারপতির নির্দেশে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পেপারবুক তৈরি করা হয়।
আসা”মিদের মৃ”ত্যুদ/ণ্ড দেওয়া হয়। রাকিবুল হাসান রিফাত ওরফে রিফাত ফরাজী, আল কাইয়ুম ওরফে রাব্বি আকন, মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত, রেজোয়ান আলী খান হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয়, মোঃ হাসান ও আয়েশা সিদ্দিক মিন্নি।
খালাস পেয়েছেন— মো. মুসা (পলাতক), রাফিউল ইসলাম রাব্বি, মো. সাগর এবং কামরুল ইসলাম সাইমুন।
নয়ন বন্ড ও রিফাত ফরাজীর সহযোগীরা বরগুনা সরকারি কলেজ রোডের ক্যালিক্স একাডেমির সামনে রিফাত শরীফকে তার স্ত্রী মিন্নির সামনে ২৬ জুন, ২০১৯ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কু’/পিয়ে আহ’ত করে। আশ’/’ঙ্কাজনক অবস্থায় রিফাতকে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রিফাতের প্রয়ান ঘটে।
এরপর রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বা’দী হয়ে সাব্বির আহমেদ ওরফে নয়ন বন্ডকে প্রধান আসা’মি করে বরগুনা থানায় ১২/৫ জন ও পাঁচ/ছয় জনের বিরুদ্ধে হ’/’ত্যা মামলা দায়ের করেন। রিফাতের বাবা মিন্নিকে প্রথমে প্রধান সাক্ষী করেন।
পরে গত ২ জুলাই জেলা সদরের বুড়িরচর ইউনিয়নের পুরাকাটা ফেরি ঘাট এলাকায় পুলিশের সঙ্গে বন্দু’কযু/’দ্ধে নয়ন বন্ড (২৫) নিথর হন।
হ/’ত্যার ২০ দিন পর ওই বছরের ১৭ জুলাই মিনিকে তার বাবার বাড়ি থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বরগুনা থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। জিজ্ঞাসাবাদের পর ওই হ’/ত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ায় রাতেই মিন্নিকে গ্রে”প্তার করে পুলিশ।
পরে একই বছরের ২৯ আগস্ট মিন্নিকে জামিন দেন হাইকোর্ট। গত ১ সেপ্টেম্বর ২৪ জনকে অভিযুক্ত করে প্রাপ্তবয়স্ক ও নাবালক বিভক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়। এর মধ্যে ১০ জন প্রাপ্তবয়স্ক এবং ১৪ জন নাবালক। ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি ১০ জন প্রাপ্তবয়স্ক আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। সাক্ষ্য ও যুক্তি-তর্ক শেষে ৩০ সেপ্টেম্বর রায় ঘোষণা করা হয়।
অন্যদিকে, ২০২০ সালের ২৭ অক্টোবর বিচার শেষে ১৪ নাবালকের মামলার রায় ঘোষণা করেন বরগুনা জেলা নারী ও শি/’শু আদালতের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান রায়ে ছয়জনকে ১০ বছর, চারজনকে পাঁচ বছর এবং একজনকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। বাকি তিনজনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।
রিফাত শরীফের ঘটনায় প্রথমদিকে মিন্নিকে তেমন গুরুত্ব দেয়া হয়নি মামলায়। কিন্তু, এরপর পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে আসে বেশ কিছু চাঞ্চ’ল্যকর তথ্য। আর সেই তথ্যের ভিত্তিতে মিন্নির অন্তর্ভুক্ত থাকার ঘটনাটা বেরিয়ে আসে। মিন্নির প্রথম স্বামী নয়ন বন্ডকে ডিভোর্স না দিয়ে মিন্নি রিফাত শরীফকে বিয়ে করে যার কারণে এই ঘটনার সুত্রপাত হয়, তদন্তে বেরিয়ে আসে এমন তথ্য।