গতকালের লঞ্চ দুর্ঘটনা কাঁপিয়ে তুলেছে বাংলাদেশের বুক। কতটা হৃদয়বিদারক দৃশ্য ছিল সেটা আসলে নিজ চোখে না দেখলে বোঝা যাবে না। লঞ্চের ইঞ্জিন বিস্ফোরণ হয়ে সমস্ত লঞ্চ একটা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে, সাথে কেড়ে নিয়েছে অনেকগুলো প্রাণ। তবে একটা ইঞ্জিন ব্লাস্টের থেকে কিভাবে সমস্ত লঞ্চ পুড়ে যায় এ নিয়েও রয়েছে নানান বিতর্ক। বিভিন্ন লোকে বিভিন্ন মন্তব্য করলেও লঞ্চ মালিকের কাছ থেকে পাওয়া গেল চাঞ্চল্যক কিছু তথ্য। তার মতে এটা কোন দুর্ঘটনা ছিল না, ছিল একটা নাশকতা। সাথে যুক্তিও দেখিয়েছেন তিনি।
সুগন্ধা নদীতে অভিযান-১০ লঞ্চে আগুনের ঘটনাকে শতভাগ নাশকতা বলে দাবি করেছেন নৌযানটির মালিক মো. হামজালাল শেখ। গতকাল শুক্রবার বিকেলে তিনি সমকালকে জানান, এই লঞ্চের তিনটি তলা। মাত্র দেড় মিনিটের মধ্যে তিনটি তলায়ই আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এতে স্পষ্ট প্রমাণিত হয়, স্বার্থান্বেষী কোনো গোষ্ঠী ওই লঞ্চে ছিল। পরিকল্পিতভাবে তারা এই নাশকতা করেছে।
এ ক্ষেত্রে কাউকে সন্দেহ করছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি অবশ্য কারও নাম উল্লেখ করেননি। হামজালাল বলেন, আমার উন্নতি যারা দেখতে চায় না, তারাই এই কাণ্ড ঘটিয়েছে। ইঞ্জিনে আগুন লাগলে ইঞ্জিনরুম পুড়ে যাওয়ার কথা। আগুন ওপরে বা সামনে যাওয়ার কথা নয়। লঞ্চের দ্বিতীয় তলার মাঝখান থেকে এই দুর্ঘটনা ঘটানো হয়েছে। হামজালাল বলেন, সব আগুন নিভে যাওয়ার পরও তেল থাকার কারণে ইঞ্জিনরুমের আগুন আরও দুই ঘণ্টা জ্বলে। তিনি বলেন, ইঞ্জিনরুমের আগুন সর্বোচ্চ দোতলা পর্যন্ত ওঠার কথা। ইঞ্জিনরুমে অনেক সময় অগ্নিকাণ্ড ঘটে। লঞ্চের লোকজন এসব আগুন নিয়ন্ত্রণ করে ফেলে। অনেক সময় ইঞ্জিনে বিস্ম্ফোরণ ঘটে। অগ্নিকাণ্ড ঘটলে ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যায়। লঞ্চ চলাচল বন্ধ হয়। কিন্তু কেবিন পর্যন্ত কখনও আগুন যায় না।
বিক্রমপুরের বাসিন্দা হামজালাল শেখ দাবি করেন, তার লঞ্চটি নতুন। মাত্র ছয় মাস আগে নামিয়েছেন। লঞ্চে আগুনের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, সরকার নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করুক। এটা অবশ্যই নাশকতা হিসেবে প্রমাণিত হবে।
যদিও অনেকের কাছ থেকে অনেক ধরনের তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। তবে লঞ্চ মালিক এর এসব তথ্যের সাথে ওনার যুক্তির অনেক মিল আছে। যেটা ভাবিয়ে তুলছে মানুষকে। এখন অপেক্ষার বিষয় তদন্ত কমিটি কি বলে! আইনি তদন্তের মাধ্যমে শেষমেশ কি দেখা যায়? আসলেই কি এটা একটা দুর্ঘটনা ছিল নাকি নাশকতা ছিল।