চতুর্থ ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন চলমান বর্তমান বাংলাদেশে। নির্বাচন নিয়ে একেক সময় একেক ধরনের খবর চলে আসছে আলোচনার শীর্ষে। সম্প্রতি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রব্বানীর উপর হামলা হওয়ার পর থেকে খবরটা কে ঘিরে রয়েছে নানান জল্পনা কল্পনা। এক এক সময় একেক ধরনের খবর শোনা যাচ্ছে এই বিষয়কে কেন্দ্র করে। অভিযোগ এসেছে গোলাম রব্বানীকে হত্যার চেষ্টারও। তবে এবার মিলল আরেক খবর, এত বড় সহিংসতার বিরুদ্ধে মামলা করতে গেলে নাকি থানা থেকে মামলা নেওয়া হয়নি।
চতুর্থ ধাপের নির্বাচনে মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার একটি কেন্দ্রে ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর ওপর হামলার ঘটনায় পুলিশ মামলা নেয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।
রাব্বানীর বাবা এম এ রশীদ আজাদ বলেন, হ ত্যাচেষ্টার অভিযোগ মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়নি। তবে পুলিশ বলছে, যাচাই-বাছাই করে অভিযোগ আমলে নেয়া হবে।
এম এ রশীদ আজাদ বলেন, ‘ইশিবপুর ইউনিয়ন নির্বাচনে আমার ছেলে রাব্বানী ৭ নম্বর গাংকান্দি সরকারি বিদ্যালয় গেলে রবিবার তার ওপর হামলা করে মোশারফ মোল্লা, তার ছেলে সোহেলসহ আরও অনেকে।
‘এ ঘটনার বিচার দাবি করে রাত ১০টার দিকে রাজৈর থানায় মোশারফ মোল্লাসহ ৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় ৩০ থেকে ৪০ জনের নামের একটি হ ত্যাচেষ্টার অভিযোগ করি। কিন্তু সোমবার বেলা ১১টা পর্যন্ত অভিযোগটি আমলে নেয়নি পুলিশ।’
এ বিষয়ে রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মো. সাদিক বলেন, ‘রাতে নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত থাকায় থানায় সময় দিতে পারিনি। তবে রাব্বানীর বাবা একটি অভিযোগ দিয়েছেন। সেটি দেখে তদন্ত করে মামলা নেয়া হবে। অন্যায়কারী যেন বিচারের মুখোমুখি হয়, সেটিও দেখতে হবে আবার কেউ বিনা দোষে হয়রানি না হোক, সেটাও দেখতে হবে। তাই বুঝেশুনে মামলা নেয়া হবে।’
মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার ইশিবপুর ইউনিয়নের গাংকান্দি সরকারি বিদ্যালয় কেন্দ্রে রবিবার বেলা পৌনে ৩টার দিকে হামলার শিকার হন গোলাম রাব্বানী।
গোলাম রাব্বানী সাংবাদিকদের বলেন, ‘নির্বাচনে মোশারফ মোল্লার লোকজন প্রকাশ্যে ভোট কেটে নেয়ার চেষ্টা করছিল। পরে আমিসহ কিছু লোক গিয়ে বিষয়টি জানার চেষ্টা করলে আমাকে অস্ত্র দিয়ে কোপ দেয়া হয়।’
তবে এ বিষয়ে মোশারফ মোল্লা বলেন, ‘গোলাম রাব্বানী কেন্দ্র দখল করতে এসেছিল। পরে তাকে প্রতিহত করেছে স্থানীয়রা।’
উল্লেখ্য, গোলাম রাব্বানীর বাড়ি মাদারীপুর জেলার রাজৈর উপজেলার বদরপাশা গ্রামে। প্রায় এক সপ্তাহ যাবৎ সেখানে তাঁর মামা চেয়ারম্যান প্রার্থী সালাউদ্দিনের পক্ষে প্রচারণায় অংশ নিচ্ছিলেন। তবে নির্বাচনে হেরে গেছেন তারা মামা।
জানা যায়, মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার ইশিবপুর ইউনিয়নে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে লড়েছেন গোলাম রাব্বানীর মামা সালাহ উদ্দিন আহমেদ। সেখানে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী মোশারফ মোল্লা।
রাজৈর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা নাননী খান রোববার (২৬ ডিসেম্বর) রাত ১০টার দিকে ফল ঘোষণা করেন। ফলাফল অনুযায়ী, মোশারফ মোল্লা পেয়েছেন ৩ হাজার ২৬২ ভোট, আর সালাউদ্দিন পান ২ হাজার ৫০৫ ভোট।
যদিও গোলাম রব্বানীকে ঘিরে এক একজনের একেক ধরনের মতবাদ। কেউ বলছে সে কেন্দ্র দখল করতে গিয়েছিল তাকে প্রতিহত করা হয়েছে, কেউবা বলছে তাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। যেটা নিয়ে পুলিশ ও এখন চিন্তায় পড়েছে, পারছেনা সরাসরি কোনো সিদ্ধান্ত নিতে। হয়তো সেই কারণেই এখন মামলা নেওয়া হয়নি। তবে দরকার সুষ্ঠু তদন্তের তাহলে আসল রহস্য বেরিয়ে আসবে। এখন দেখার বিষয় প্রশাসন কি পদক্ষেপ নেয়।