দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক করতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) শুরু হওয়া সংলাপের ধারাবাহিকতা গতকাল শেষ হয়েছে জাতীয় পার্টি ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণে। তবে বিএনপিসহ সমমনা নয় দল ইসির সংলাপে অংশ নেয়নি। আনুষ্ঠানিক সংলাপ শেষ হলেও সময়ের আবেদন করেছে আরও দুটি রাজনৈতিক দল।
সমালোচনা আর বিতর্কের ঊর্ধ্বে থেকে আগামী নির্বাচন করতে চান প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি)। শেষ দিন আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংলাপে এ কথা বলেন তিনি। ক্ষমতাসীনরা সব কটি আসনে ইভিএম চাইলেও সিএসই বলেন, এ নিয়ে মতভেদ আছে, তাই সিদ্ধান্ত নিতে সময় লাগবে। আওয়ামী লীগের পক্ষে দলের সাধারণ সম্পাদক জানিয়েছেন, আসছে নির্বাচন সরকারের অধীন নয়, হবে ইসির অধীন। দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কমিশনের সংলাপের শেষ দিনের শেষ বৈঠকে অংশ নেয় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে ১৩ সদস্যের প্রতিনিধিদল সংলাপে অংশ নেয়। সিইসির স্বাগত বক্তব্যের পর প্রতিনিধিদলের সদস্যরা তুলে ধরেন নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের ভাবনা। আলোচনার একপর্যায়ে নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা বলেন, নির্বাচন নিয়ে মানুষের আগ্রহ কমে গেছে। এতে আস্থাহীনতায় পড়েছে কমিশন। তার পাল্টা জবাবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচনে ৭০ শতাংশ ভোট প্রমাণ করে ভোটে আস্থা হারায়নি ভোটাররা।
পরে ওবায়দুল কাদের জানান, আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে নির্বাচন কমিশনের অধীন, সরকারের অধীন নয়। তবে আওয়ামী লীগ সরকার তাদের পূর্ণ সহায়তা করবে। এবারের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) করার প্রত্যাশা আবারও জানায় আওয়ামী লীগ।এদিকে, হাওয়া ভবন থেকে নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তারা এখনো কমিশনে সক্রিয় বলে অভিযোগ আওয়ামী লীগের। দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন তুলনামূলক সমালোচিত উল্লেখ করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, আসছে নির্বাচন সব সমালোচনার ঊর্ধ্বে থেকে পরিচালনা করতে চায় এ কমিশন। এর আগে শেষ দিনের সকালের সংলাপে জাতীয় পার্টি নির্বাচনী ব্যবস্থা পরিবর্তনের তাগিদ দেয়। ৩৯টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের মধ্যে সংলাপের অংশ নিয়েছে আটাশটি। দুটি দল পাঠিয়েছে তাদের মতামত। আর বাকি দুটো দল কমিশনের কাছ থেকে পরবর্তী সময়ে বসার জন্য সময় নিয়েছে। সেই হিসাবে সংলাপ বর্জন করেছে সাতটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল।
উল্লেখ্য, সংলাপে বিএনপির অংশগ্রহণ না করা এবং সবকিছু ছাপিয়ে নির্বাচন কমিশনের প্রতি দলটির অনাস্থার বিষয়টি উঠে এসেছে। বিএনপির মতো বড় দল সংলাপে অংশ না নেওয়ায় হতাশ প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি)। সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল আরও বলেন, সব দল নির্বাচনে অংশ না নিলে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না।