ন্যায্যমূল্যে গরুর মাংস বিক্রি করায় রাজশাহীর বাঘার ব্যবসায়ী মামুনকে কুপিয়ে হত্যা করেছে আরেক ব্যবসায়ী। মিজানুর রহমান ওরফে খোকন (৩৫)। আসামিদের গ্রেপ্তারের পর এমন দাবি করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর কাওরান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ দাবি জানান। রোববার রাতে মাদারীপুরের শিবচর থেকে আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। নিহত মামুন গ্রেফতারকৃত খোকনের আত্মীয়।
খন্দকার আল মঈন জানান, বাঘার আড়ানী মার্কেটে সরকার নির্ধারিত মূল্যে ৬৫০ টাকা কেজি দরে গরুর মাংস বিক্রি করায় ২০ জানুয়ারি সকালে মামুনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তার মৃত্যু হয়। ওই ঘটনায় মামুনের ছোট ভাই বাদী হয়ে বাঘা থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। জড়িতদের ধরতে র্যাব গোয়েন্দা নজরদারি বাড়িয়েছে।
তিনি বলেন, ‘মামুনকে হত্যার পর আত্মগোপন করেন খোকন। তথ্যপ্রযুক্তি ও র্যাবের গোয়েন্দাদের তদন্তে র্যাব-৫ ও র্যাব-৮ এর অভিযান দল রোববার রাতে শিবচর থেকে খোকনকে গ্রেপ্তার করে।
আটক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদের কথা উল্লেখ করে র্যাব জানায়, মামুনের আত্মীয় খোকন। তারা বাঘার আদানি বাজারে একসঙ্গে মাংস বিক্রি করতেন। ভোক্তা বিষয়ক অধিদপ্তর, মাংস ব্যবসায়ী সমিতি ও বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশনের যৌথ সভায় গরুর মাংস ৬৫০ টাকায় বিক্রির সিদ্ধান্ত হয়। নির্ধারিত দামেই মাংস বিক্রি করেন মামুন। এই ঘটনার ভিত্তিতে তাদের মধ্যে মতপার্থক্য দেখা দেয়। গত বছরের শেষ দিকে মামুন নির্ধারিত দামে মাংস বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়ে আলাদা ব্যবসা শুরু করেন। ফলে তার দোকানে বিক্রি বেড়েছে এবং খোকনের দোকানে বিক্রি কমেছে।
র্যাবের এই মুখপাত্র জানান, ঘটনার দিন তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হলে খোকন উত্তেজিত হয়ে প্রকাশ্যে মাংস কাটার ছুরি দিয়ে মামুনের পেটে ও বুকে আঘাত করে। পরে সে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। গ্রেফতার এড়াতে তিনি প্রথমে রাজশাহীর তাহিরপুরে এক আত্মীয়ের বাড়িতে আত্মগোপন করেন। পরে স্থায়ীভাবে লুকিয়ে থাকতে চেয়েছিলেন শিবচরের কুতুবপুরে। সেই উদ্দেশ্যে এক বন্ধুর মাধ্যমে সেখানে ড্রেজার শ্রমিক হিসেবে কাজ শুরু করেন।
খোকন মাদক ব্যবসার পাশাপাশি মাংস ব্যবসাসহ নানা ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িত। তার বিরুদ্ধে বাঘা থানায় মাদক মামলাসহ বিভিন্ন অপরাধে চারটি মামলা রয়েছে। এসব মামলায় তিনি বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ভোগ করেছেন বলে র্যাব জানিয়েছে।