ফেনীতে নিজেদের ভাড়া বাসায় আগুনে পুড়ে যাওয়া পরিবারের তিন সদস্যের কেউই বেঁচে নেই। ঘটনার ১৩ দিনের মধ্যে গৃহকর্তা আশীষ চন্দ্র সরকার (৪০), তার স্ত্রী টুম্পা রানী সরকার (৩০) এবং তাদের একমাত্র সন্তান রিক সরকার (৯) একে একে মারা যান।
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) নিহত আশীষের ছোট ভাই পরিতোষ চন্দ্র সরকার ফোনে তার হৃদয়বিদারক মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে জানান, ময়মনসিংহ জেলার ধোবাউড়া উপজেলার পারিবারিক শ্মশানে তাদের তিনজনের শেষকৃত্য হয়।
আশীষের বাবা-মা ও ভাইবোনেরা সেখানে থাকেন। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে আশীষ সবার বড়। চাকরির সুবাদে ফেনীর একটি বেসরকারি কোম্পানির হিসাব বিভাগে কর্মরত ছিলেন। তার ছেলে রিক ফেনীর একটি স্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে।
এর আগে তারা রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন ছিলেন। গত সোমবার হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) আশীষের স্ত্রী টুম্পা রানী সরকার মারা যান। এর আগে গত ৫ জানুয়ারি শুক্রবার রাতে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছেলে রিক সরকার (৯) এবং ৩১ ডিসেম্বর হাসপাতালের হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিটে (এইচডিইউ) আশীষ চন্দ্র সরকার মারা যান।
আশীষের ছোট ভাই পরিতোষ চন্দ্র সরকার আরও জানান, সোমবার মৃত টুম্পার অবস্থার অবনতি হলে সন্ধ্যায় তাকে এইচডিইউ থেকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। পরে বেলা ১১টার দিকে টুম্পা মারা যায়।
প্রসঙ্গত, গত ২৬ ডিসেম্বর মঙ্গলবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে ফেনী শহরের শহীদ শহীদুল্লা কায়সার সড়কের ইতালি ভবন-২-এর পঞ্চম তলার বাসায় কম্পেসার বিস্ফোরণ থেকে আগুন লাগে। এ ঘটনায় দগ্ধ হন আশীষ, টুম্পা ও রিক। গ্যাসের চুলায় তিতাসের সংযোগ লাইন থেকে আগুন লাগার ঘটনার কথা স্বজনদের বলেছিলেন আশীষ ও টুম্পা।
অগ্নিদগ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর ২৭ ডিসেম্বর বুধবার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগের আবাসিক সার্জন ডা. তরিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান,আশীষের ৮২ শতাংশ, টুম্পার ৬০ শতাংশের বেশি এবং রিকের ৪০ শতাংশ দগ্ধ হয়। শুরু থেকেই রিককে আইসিইউতে নেওয়া হয়। আর আশীষ ও টুম্পাকে এইচডিইউ ভর্তি করা হয়। তিনজনের অবস্থাই সংকটাপন্ন ছিল।