আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশের নির্বাচনী পরিবেশ নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি বলছে, বাংলাদেশে বাংলাদেশিরা যা চায় যুক্তরাষ্ট্র তাই চায়।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ব্রিফিং থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এছাড়া ওয়াশিংটনের এই ব্রিফিংয়ে বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে সংলাপের বিষয়টিও উঠে এসেছে।
একই সঙ্গে বাংলাদেশে সহিংসতার ঘটনাকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এসব কথা বলেন। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ব্রিফিংয়ের বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে একজন সাংবাদিক ম্যাথিউ মিলারকে বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন করেন। তিনি বলেন, আমেরিকা ও ইউরোপীয়রা বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দাবি করেছে এবং বর্তমান শাসক শেখ হাসিনা ২০০৯ সাল থেকে ক্ষমতায় রয়েছেন। আমেরিকা কি জানে যে ভারতের প্রভাবের কারণে আওয়ামী লীগ ও হাসিনাকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সমর্থন রয়েছে? এমতাবস্থায় বাংলাদেশের জনগণের ভোটাধিকার এবং একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করা সম্পূর্ণ অসম্ভব।
আর আমার দ্বিতীয় প্রশ্ন হলো, হাসিনা শেখ গতকাল রাতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। সেখানে তিনি মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের নিরাপত্তা নিয়ে কিছু উস্কানিমূলক ও অপমানজনক মন্তব্য করেন। ৪ আগস্ট, ২০১৮ -এ তৎকালীন মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্সিয়া বার্নিকাটের গাড়িতে হামলার পরেও তিনি একই কাজ করেছিলেন। তিনি একটি সংবাদ সম্মেলনে বসে মজা করেছিলেন—
জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, আমার মনে হয় আমি আপনার প্রশ্ন বুঝতে পেরেছি। আমি শুধু বলে রাখি যে, আমরা স্পষ্ট করে বলেছি যে, আমরা আশা করি বাংলাদেশ সরকার কূটনীতিকদের যথাযথ নিরাপত্তার জন্য ভিয়েনা কনভেনশনের অধীনে তাদের দায়িত্ব পালন করবে। আমরা সব দেশের সরকারের কাছে এটাই আশা করি।
তিনি আরও বলেন, আপনার প্রথম প্রশ্নের জবাবে আমি আগেই বলেছি, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের দায়িত্ব সবার। সব রাজনৈতিক দল, ভোটার, সরকার, সুশীল সমাজ ও গণমাধ্যমের দায়িত্ব অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের। আর আমরা বাংলাদেশে যা চাই তাই বাংলাদেশের মানুষ চায়। বাংলাদেশে একটি শান্তিপূর্ণ, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হোক।
পরে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বাংলাদেশে ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধী দলের মধ্যে সংলাপের আহ্বান জানিয়েছেন। তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যদি সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সংলাপ করেন, তাহলে তিনি বিরোধী দলের সঙ্গে সংলাপ করবেন। মূলত শেখ হাসিনা রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কোনো সংলাপ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। বিরোধীদের ওপর তার প্রশাসন খুবই আগ্রাসী। আজ পুলিশের গুলিতে দুই বিরোধী নেতা নিহত হয়েছেন এবং ঢাকায় ইতিমধ্যে দুই শীর্ষ বিরোধী নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রতিদিনই তারা বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করছে, তাহলে বাংলাদেশে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক (অংশগ্রহণমূলক) হবে এটা আপনি কীভাবে বিশ্বাস করবেন?
জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের এই মুখপাত্র বলেছেন, আপনার প্রশ্নের প্রথম অংশের (বিডেন-ট্রাম্প সংলাপ) উত্তরে আমি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আগে যা বলেছি তা ছাড়া অন্য কোনো মন্তব্য করব না। আমরা বিশ্বাস করি, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্য অর্জনে সংলাপ গুরুত্বপূর্ণ।