বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যকার সর্বদা সুসম্পর্ক রয়েছে তবে বাংলাদেশের শেখ হাসিনার আসন্ন ভারত সফরে দুই দেশের সহযোগিতার নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের জি২০ শীর্ষ সম্মেলন বিষয়ক সমন্বয়ক ও সাবেক পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা।মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) নয়াদিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব ওয়ার্ল্ড অ্যাফেয়ার্স আয়োজিত অনুষ্ঠানে এমন মন্তব্য করেন তিনি।
বক্তৃতার বিষয় ছিল ‘বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি’। হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা আশা করেন, সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারি চুক্তির (সেপা) বিষয়ে নির্দেশনা আসতে পারে প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে।
শ্রিংলা বলেন, যৌথ সমীক্ষায় দেখা গেছে যে সেপা বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশ থেকে ভারতে রপ্তানি প্রায় শতভাগ বাড়বে। এতে বাংলাদেশের জিডিপি বাড়বে ১.৭২ শতাংশ। ভারতও এই চুক্তি থেকে উপকৃত হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন ভারত সফর করেন তখন উভয় পক্ষ সম্পর্ক পর্যালোচনা করার এবং একে আরো কীভাবে এগিয়ে নেওয়া যায় তা নিয়ে আলোচনার সুযোগ পায়।
ভারতের সাবেক পররাষ্ট্র সচিব বলেন, বিশ্বের খুব কম দেশই আছে যেখানে বাংলাদেশ ও ভারতের মতো দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নিয়ে অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি এবং অন্যদের জন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত আছে। গত দশকে আমরা এই সম্পর্কের অগ্রগতির ধারা দেখেছি। ২০১৫ সালে যখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঢাকা সফর করেছেন এবং ঐতিহাসিক স্থলসীমান্ত চুক্তি ও যৌথ ঘোষণা ‘নতুন প্রজন্ম-নয়া দিশা’ স্বাক্ষরিত হয়েছে, তখন আমাদের ভবিষ্যৎ সম্পর্কের রূপরেখা রচিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন ২০১৭ সালে ভারত সফর করেন তখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এ সম্পর্ককে ‘সোনালি অধ্যায়’ হিসেবে বর্ণনা করেন।
১৯৬৫ সালে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে যে কানেক্টিভিটি (যোগাযোগ) ছিল তা পুনঃপ্রতিষ্ঠার বিষয়টি বর্ণনা দেন শ্রিংলা। তিনি বলেন, ঢাকা ও নিউ-জলপাইগুড়ির মধ্যে সংযোগ স্থাপনকারী ‘মিতালি এক্সপ্রেস’ নতুন মাইলফলক সৃষ্টি করেছে।
হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক বাড়ছে। কিন্তু এ বিষয়টি খুব বেশি আলোচনায় আসে না। বাংলাদেশ ভারতের পঞ্চম বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার। বাংলাদেশ থেকে ভারতের বাণিজ্যের পরিমাণ এরই মধ্যে ২০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হয়েছে। এটি আরো বাড়বে।
বক্তৃতা অনুষ্ঠানে সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ও দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু চেয়ার এম শহিদুল হক বলেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক অসাধারণ ও চিরন্তন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যেও চমৎকার সম্পর্ক আছে। আমার কোনো সন্দেহ নেই যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন ভারত সফর অত্যন্ত ইতিবাচক ফল আনবে।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন ভারত সফরকে কে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে নানা আলোচনা শুরু হয়েছে। এই সফরের মধ্য দিয়ে নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে এবং পররাষ্টনীনতির বিভিন্ন দিক উঠে আসবে এই সফরে।