প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের গুঞ্জন শুনেছেন, তবে এর সপক্ষে কোনো দালিলিক প্রমাণ বা নথিপত্র তার কাছে নেই বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন। মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেন। সাক্ষাৎকারটি শনিবার পত্রিকার রাজনৈতিক ম্যাগাজিন ‘জনতার চোখ’-এ প্রকাশিত হয়।
মতিউর রহমান চৌধুরী উল্লেখ করেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র যদি সত্যিই জমা দেওয়া হয়ে থাকে, তাহলে তার অনুলিপি কারও কাছে থাকার কথা। কিন্তু তিন সপ্তাহের অনুসন্ধানে কেউ তার খোঁজ দিতে পারেনি। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগেও খোঁজ নেওয়া হয়েছে, যেখানে সাধারণত প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীদের পদত্যাগপত্র সংরক্ষিত থাকে, কিন্তু সেখানেও কিছু পাওয়া যায়নি।
রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন জানান, শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র তার কাছে জমা পড়েনি। তিনি বলেন, ‘আমি বহুবার পদত্যাগপত্র সংগ্রহের চেষ্টা করেছি, কিন্তু ব্যর্থ হয়েছি।হয়ত তার সময় হয়নি’। কথোপকথনের সময় রাষ্ট্রপতি বলেন, ৫ আগস্ট সকাল সাড়ে ১০টায় প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন থেকে বঙ্গভবনে ফোন আসে, যেখানে বলা হয়েছিল যে প্রধানমন্ত্রী প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য আসবেন। এরপরই বঙ্গভবনে প্রস্তুতি শুরু হয়। কিন্তু এক ঘণ্টার মধ্যে আরেকটি ফোন আসে যে তিনি (শেখ হাসিনা) আসছেন না।
রাষ্ট্রপতি আরও জানান, ‘চারদিকে অস্থিরতার খবর। কী হতে যাচ্ছে জানি না। আমি তো গুজবের ওপর নির্ভর করে বসে থাকতে পারি না। তাই সামরিক সচিব জেনারেল আদিলকে বললাম খোঁজ নিতে। তার কাছেও কোনো খবর নেই। আমরা অপেক্ষা করছি। টেলিভিশনের স্ক্রলও দেখছি। কোথাও কোনো খবর নেই। এক পর্যায়ে শুনলাম, তিনি দেশ ছেড়ে চলে গেছেন। আমাকে কিছুই বলে গেলেন না।’ রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার যখন বঙ্গভবনে এলেন তখন জানার চেষ্টা করেছি প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন কি না? একই জবাব। শুনেছি তিনি পদত্যাগ করেছেন। মনে হয় সে সময় পাননি জানানোর।’
রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, মন্ত্রিপরিষদ সচিব পদত্যাগপত্রের কপি চাইতে এলেও, তার কাছেও কিছুই ছিল না। তিনি জানান, এ নিয়ে আর বিতর্ক না থাকলেও, তিনি সুপ্রিম কোর্টের মতামত চেয়েছেন, যাতে এ বিষয়ে প্রশ্ন আর না ওঠে।