শেখ হাসিনার যুক্তরাজ্যে রাজনৈতিক আশ্রয় গ্রহণের সম্ভাবনা নিয়ে গুঞ্জনের মধ্যে দেশটির ব্রিটিশ-বাংলাদেশি সংসদ সদস্য রুপা হক বলেছেন, তার সরকারের এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া সমীচীন হবে না।
ব্রিটিশ সংবাদপত্র দ্য স্ট্যান্ডার্ডে এক নিবন্ধে তিনি তার অভিমত ব্যক্ত করেন। বৃহস্পতিবার দ্য স্ট্যান্ডার্ড পত্রিকায় লেবার এমপি রুপা হকের নিবন্ধটি প্রকাশিত হয়েছে।
তিনি লিখেছেন, বাংলাদেশ কতটা ‘বিশৃঙ্খল’ ছিল তা নিয়ে গেয়েছিলেন জর্জ হ্যারিসন। গত সপ্তাহে তিনি আবার সঠিক প্রমাণিত হলেন। সাদ্দাম হোসেনের ক্ষমতাচ্যুতির মত ঘটনার প্রতিফলন দেখা গেল, জাতির পিতার ভাস্কর্য গুঁড়িয়ে দেওয়া হল, কুশপুতুল পোড়ানো হল, যা ঢাকা থেকে টাওয়ার হ্যামলেট (যুক্তরাজ্যের একটি পৌরসভা) পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছিল।
ছাত্র আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনার পতনকে তিয়ানআনমেন স্কয়ারের সঙ্গে তুলনা করে রুপা হক লিখেছেন, ’স্বৈরাচারী’ কন্যা শেখ হাসিনা দেশটির আয়ুষ্কালের বড় অংশই শাসন করেছেন (সর্বত্র তার বাবার ভাস্কর্য ও চিত্রকর্ম স্থাপন নিশ্চিত করে)।
রুপা হক লিখেছেন, বেশিরভাগ মানুষ মনে করেন শেখ হাসিনা শুধু শাড়ি পরা একজন সপ্ততিপরবৃদ্ধাই নন, ’বর্বর’ শাসকও। সারাদেশে জ্বালাও-পোড়াওয়ের মধ্যে তিনি ভারতে নির্বাসিত হন।
শেখ হাসিনা, তার ছোট বোন শেখ রেহানার সাথে, গণবিক্ষোভের মুখে ৫ আগস্ট দেশ ত্যাগ করেন। তারপর থেকে তারা ভারতে রয়েছেন।
শেখ হাসিনা ভারত থেকে যুক্তরাজ্যে যেতে পারেন বলে ভারতীয় গণমাধ্যমে খবর আসতে শুরু করেছে। শেখ হাসিনা যুক্তরাজ্যে রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়েছেন বলেও খবর পাওয়া গেছে। তবে এ বিষয়ে প্রকাশ্যে কেউ কোনো তথ্য দেননি।
আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, তার ব্যাপক অজনপ্রিয় শাসনামল ও অভিবাসনসংক্রান্ত রাজনৈতিক স্পর্শকাতরতার নিরিখে যুক্তরাজ্য সরকারের এমন একজনকে আশ্রয় দেওয়া সমীচীন হবে না, যার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে বিচারের দাবি রয়েছে। অনেক বাংলাদেশি মনে করে, তাকে দেশে ফিরিয়ে বিচারের মুখোমুখি করা উচিত।
শেষে রুপা হক লিখেছেন, স্বস্তি ফিরে এসেছে আমার বাংলাদেশি ভাই-বোনদের কাছে। সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলার জন্য নিপীড়নের ভয়ের সংস্কৃতি এখন আর নেই। তবে ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে: আশা করি সেখানে গণতন্ত্র ফিরবে। তবে পতিত শিবির বলছে, তারা স্থিতিশীলতা এনে দিয়েছিল।
উল্লেখ্য, শিক্ষার্থীদের ২৩ দিনের দেশ কাঁপানো আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। শিক্ষার্থীদের বিদ্রোহের মুখে গত ৫ আগস্ট রাষ্ট্রপতি মো.সাহাবুদ্দিনের কাছে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগপত্র জমা দেন শেখ হাসিনা। এরপর গণভবন থেকে হেলিকপ্টারে করে দেশ ছাড়েন তিনি। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন তার বোন শেখ রেহানা। বর্তমানে তিনি ভারতে রয়েছেন।