সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে ভ্রমণের ট্রাভেল ডকুমেন্ট দিয়েছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। বুধবার (৯ অক্টোবর) শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানা পরিবারের ঘনিষ্ঠ ও যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের একজন প্রভাবশালী নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেন। আওয়ামী লীগের এই নেতা সাংবাদিকদের বলেন, ভারত সরকারের দেওয়া ট্রাভেল ডকুমেন্ট নিয়ে তিনি বিশ্বের যে কোনো দেশে যেতে পারেন।
তিনি বলেন, ভারতে শেখ হাসিনাকে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে। তার বোন শেখ রেহানাও সেখানে অবস্থান করছেন। তবে সফরের কাগজপত্র পেলেও ভারতেই থাকবেন শেখ হাসিনা। অদূর ভবিষ্যতে ভারতের বাইরে যাওয়ার কোনো পরিকল্পনা নেই তার।” শেখ হাসিনা ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়েছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, শেখ হাসিনার গুরুত্ব বিবেচনা করে ভারত বিশেষ ব্যবস্থা করেছে।
এদিকে শেখ হাসিনাকে ভারত ‘ট্রাভেল ডকুমেন্ট’ ইস্যু করা হয়েছে কি না, সে বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ভারত সরকার এখনো কিছু জানায়নি। তবে ভারতের পররাষ্ট্র দপ্তরের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা বলেছেন, ‘এ বিষয়ে আমাদের মন্ত্রণালয়ের পরবর্তী ব্রিফিংয়ের জন্য অপেক্ষা করুন। সেখানে প্রশ্ন করে দেখুন, মুখপাত্র কী বলেন!’ তবে ভারতের সাবেক এক শীর্ষ কূটনীতিবিদ সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘ভারত যদি শেখ হাসিনাকে ট্রাভেল ডকুমেন্ট সত্যিই দিয়ে থাকে, আমি তাতে এতটুকুও অবাক হবো না। কারণ এই পরিস্থিতিতে এটাই সবচেয়ে স্বাভাবিক ও প্রত্যাশিত পদক্ষেপ।’
তিনি আরও ব্যাখ্যা করছেন, “লক্ষ-হাজার তিব্বতি শরণার্থী যারা ভারতের ম্যাকলিওডগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থানে বসবাস করে, কিন্তু তাদের অধিকাংশেরই ভারতীয় পাসপোর্ট নেই।” পরিবর্তে, তারা এই ধরণের ভ্রমণ নথি (সংক্ষেপে ‘TD’) নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভ্রমণ করে। সাবেক এই রাষ্ট্রদূত বলেন, ভারত শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনাকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেবে কি না, আমি জানি না। কিন্তু গত দুই মাসের ঘটনা যেভাবে ফুটে উঠেছে তাতে দালাই লামার মামলার সঙ্গে শেখ হাসিনার মামলার অনেক মিল দেখতে পাচ্ছি।
ভারতে যত দিনই থাকুক, শেখ হাসিনা হাত গুটিয়ে নিষ্ক্রিয় হয়ে বসে থাকবেন, এটা তো আর হতে পারে না। দালাই লামাও তাই করেছেন, রাজনীতি ও কূটনীতি চালিয়ে গেছেন এবং পৃথিবীর বহু দেশে সফর করেছেন।’তিনি আরো বলেন, ‘একইভাবে রাজনৈতিক প্রয়োজনে, বিশ্বময় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে দেখা করতে শেখ হাসিনাকেও ভারতের বাইরে যেতে হবে, এটাই স্বাভাবিক। সেই বাস্তবতা অনুধাবন করে ভারত যদি তাকে টিডি বা আইসি দিয়ে থাকে, সেটাতে তাই অবাক হওয়ার কিছু নেই।’