শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণের চিঠি পাওয়ার পর যা জানালো ভারত

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর ভারতে আশ্রয় নেওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়ে বাংলাদেশের পাঠানো কূটনৈতিক চিঠি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ভারত। সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল এ তথ্য জানান।

এক ব্রিফিংয়ে রণধীর জয়সওয়াল বলেন, “আমরা আজ বাংলাদেশ হাইকমিশনের কাছ থেকে শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের অনুরোধ সংবলিত একটি কূটনৈতিক চিঠি পেয়েছি। তবে এ মুহূর্তে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে পারছি না।”

ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে এক প্রতিবেদনে জানায়, নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে ভারতের কাছে শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের আনুষ্ঠানিক চিঠি পাঠানো হয়েছে।

এর আগে, সোমবার বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন সাংবাদিকদের জানান, “ভারতকে কূটনৈতিক পত্রের মাধ্যমে জানিয়েছি, শেখ হাসিনাকে বিচার প্রক্রিয়ার আওতায় আনার জন্য ফেরত চাই।” একই দিন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, “শেখ হাসিনাকে ফেরানোর বিষয়ে বন্দি বিনিময় চুক্তির আওতায় আলোচনা চলছে।”

উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশের গণ-অভ্যুত্থানের ফলে ক্ষমতাচ্যুত হন শেখ হাসিনা। এরপর তিনি ভারতে পালিয়ে যান, যা দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন সৃষ্টি করেছে।

এর আগে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ছাত্র আন্দোলনের সময় সংঘটিত গণহত্যার অভিযোগে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। তবে তিনি ভারতে থেকে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন।

গত মাসে অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিন পূর্তি উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “প্রত্যেক হত্যাকাণ্ডের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। আমরা ভারতকে অনুরোধ করব, স্বৈরাচারী শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠাতে।”

এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের আনুষ্ঠানিক অনুরোধ নিয়ে ভারতের অবস্থান এখনো পরিষ্কার নয়।


ডিবি পরিচয়ে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে ধরা পড়লেন এসআই ও ছাত্রদল নেতা

বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার মাধবপাশা ইউনিয়নের চন্দ্রপাড়া এলাকায় জুয়ার আসর থেকে ডিবি পরিচয়ে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে জনতার হাতে ধরা পড়েছেন এক উপপরিদর্শক (এসআই) ও ছাত্রদল নেতা। পরে তাদের গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।

আটক ব্যক্তিরা হলেন বরিশাল মহানগর ছাত্রদলের সহসভাপতি রাসেল আকন ও বরিশালের কাজিরহাট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রেদোয়ান।

সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) সকালে তাদের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলায় আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিমানবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকির শিকদার।

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার রুনা লায়লা স্থানীয়দের বরাত দিয়ে জানান, রবিবার (২২ ডিসেম্বর) রাতে বাবুগঞ্জের চন্দ্রপাড়া গ্রামে একটি ঘরে জুয়া খেলা চলছিল। ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযুক্ত দুই ব্যক্তি ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে খেলায় অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের কাছ থেকে টাকা ও মোবাইল ছিনিয়ে নেন। বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হলে স্থানীয়রা বিমানবন্দর থানার ওসিকে অবহিত করেন।

ওসি নিশ্চিত করেন যে, সেখানে কোনও ডিবি পুলিশের দল যায়নি। এরপর গ্রামবাসী অভিযুক্ত দুজনকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করে।

এ ঘটনায় দায়ের করা মামলার পাশাপাশি এসআই রেদোয়ানের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান উপপুলিশ কমিশনার।

কাজিরহাট থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, “গ্রেফতারকৃত এসআই রেদোয়ান আমার থানায় কর্মরত ছিলেন। তার বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।”

মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি রেজাউল করিম রনি জানান, রাসেলের কর্মকাণ্ডের দায়ভার দল নেবে না। বিষয়টি কেন্দ্রীয় নেতাদের জানানো হয়েছে, তারা সিদ্ধান্ত নেবেন।

বিমানবন্দর থানা সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের ২১ আগস্ট র‌্যাব-৮ রাসেল আকনকে ইয়াবাসহ গ্রেফতার করেছিল। এছাড়া তার বিরুদ্ধে বরিশালসহ বিভিন্ন থানায় ছিনতাই ও মাদকসহ একাধিক মামলা রয়েছে।