সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে দেশে ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে বাংলাদেশ। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিটি) প্রধান প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, শেখ হাসিনাকে দেশে এনে তাঁর বিরুদ্ধে চলমান সহিংসতার অভিযোগের বিচার হবে।
আলজাজিরার প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমন করতে গিয়ে যে সহিংসতা হয়েছিল, তার জন্য তাঁকে বিচারের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে। ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর শেখ হাসিনা সামরিক হেলিকপ্টারে করে ভারতের দিল্লির একটি বিমানঘাঁটিতে আশ্রয় নেন।
ভারতে শেখ হাসিনার অবস্থান নিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে কূটনৈতিক টানাপোড়েনের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভারতের সঙ্গে ২০১৩ সালে স্বাক্ষরিত অপরাধী প্রত্যর্পণ চুক্তির আওতায় তাঁকে ফেরত আনার জন্য আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
আইসিটির প্রধান প্রসিকিউটর বলেন, ‘গণহত্যার প্রধান আসামি হিসেবে শেখ হাসিনাকে ফেরত এনে বিচারের মুখোমুখি করার জন্য আমরা আইনিভাবে সবকিছু করব।’ ১৫ বছরের শাসনামলে মানবাধিকার লঙ্ঘন, রাজনৈতিক বিরোধীদের আটক ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে শেখ হাসিনার সরকার বিতর্কিত ছিল, যা শেষ পর্যন্ত ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে পতনের দিকে নিয়ে যায়।
শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতির সময় হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়, জাতিসংঘের প্রাথমিক রিপোর্টে বলা হয়েছে। তবে প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
৭৬ বছর বয়সী শেখ হাসিনাকে ভারতে পালানোর পর থেকে জনসম্মুখে দেখা যায়নি। তাঁর কূটনৈতিক পাসপোর্ট বাতিল করা হয়েছে। তবে প্রত্যর্পণ চুক্তির ‘রাজনৈতিক’ ধারার কারণে ভারত তাঁকে ফিরিয়ে দিতে অস্বীকৃতি জানাতে পারে। তা সত্ত্বেও বাংলাদেশ সরকার তাঁকে দেশে এনে বিচারের জন্য চাপ দিচ্ছে।
ভারতীয় গণমাধ্যমে ড. মুহাম্মদ ইউনূস জানান, ‘যদি ভারত তাকে আশ্রয় দেয়, তবে শর্ত হলো– তিনি নীরব থাকবেন, যতক্ষণ না বাংলাদেশ তাঁকে ফেরত চায়।’ এরই মধ্যে শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনার জন্য জনসাধারণের চাপ বেড়েছে, যা ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ওপর প্রভাব ফেলছে।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও ভারতের গণমাধ্যমে বলেছেন, শেখ হাসিনাকে দেশে এনে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।