Friday , December 27 2024
Breaking News
Home / National / শেখ হাসিনাই দুটি শর্তে খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত রেখে মুক্তি দেন, বললেন আনিসুল হক

শেখ হাসিনাই দুটি শর্তে খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত রেখে মুক্তি দেন, বললেন আনিসুল হক

এই মুহুর্তে রাজধানী ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি বিএনপি চেয়ারপারসন ও তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। বিএনপি নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, দেশে বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসা হওয়া সম্ভব নয়, আর সেহেতু তাকে বিদেশে নেওয়ার জন্য ক্ষমতাসীন সরকারের নিকট আবেদন করেছেন তারা। তারা আশাবাদি ছিলেন, এবার এ আবেদনে সাড়া দেবে সরকার। কিন্তু না, এরই মধ্যে প্রশাসন জানিয়ে দিয়েছে আইনে খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

আর এদিকে এবার আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, আইনে আছে শর্তযুক্ত, শর্তমুক্ত। খালেদা জিয়ার দরখাস্ত শর্তযুক্ত শর্তে নিষ্পত্তি হয়ে গেছে। সরকারকে আইনের মধ্যে থেকে কাজ করতে হয়। আইনে পুনর্বিবেচনা করার ক্ষমতা আমার নাই। প্রধানমন্ত্রী দুটি বিশেষ শর্তে খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত রেখে মুক্তি দেন বলেও জানান তিনি।

বুধবার ২৯ ডিসেম্বর দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের(ক্র্যাব) বার্ষিক সাধারণ সভায়-২০২১ তিনি একথা বলেন।

ক্র্যাব সভাপতি মিজান মালিকের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন আরিফের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ”অনেকে বলছেন, ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারা কারো বিদেশ যাওয়া বন্ধ করে না। কিন্তু আমি কখনো বলি নাই যে খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানো যাবে না। কিন্তু একবার নিষ্পত্তিকৃত দরখাস্ত আবার পুনর্বিবেচনা সুযোগ ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারায় নাই।”

‘খালেদা জিয়া যখন সাজা ভোগ করছিলেন, তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই মানবিক দৃষ্টিকোন থেকে দুটি বিশেষ শর্তে সাজা স্থগিত রেখে মুক্তি দেন।’

আইনমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়ার বরখাস্ত নিষ্পত্তি হয়ে গেছে। সরকারকে আইনের মধ্যে থেকে কাজ করতে হয়। এই যেটা দরখাস্ত সেটি নিষ্পত্তি হয়ে গেছে। আমার কথা হলো আমি যেটা বারবার বলে আসছি, একটা নিষ্পত্তি করা দরখাস্ত, আইনে পুনর্বিবেচনা করার ক্ষমতা আমার নাই।

তবে মন্ত্রী বলেন, পুনরায় যদি একটি দরখাস্ত করা হয় সেটি নিয়ে আলোচনা হতে পারে। আমি এখানেও বলছি, সংসদেও বলেছি। শর্তযুক্ত শর্তে তিনি সাজা স্থগিতে যে মুক্তি পেয়েছেন সেটি যদি না মেনে পুনরায় জেলের যেতে চান সেটাও হতে পারে। কিন্তু এই অবস্থায় ফৌজদারি কার্যবিধির কোথাও নাই, যে তাকে আমরা আগের দরখাস্ত বিবেচনা করে বিদেশ যাবার সুবিধা করে দিতে পারি, সেটা নাই।

খালেদা জিয়ার চিকিৎসা সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, এভারকেয়ার হাসপাতাল খালেদা জিয়ার প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, সব ধরনের চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। তারা সম্প্রতি তারা সর্বশেষ টেকনোলজির একটি ক্যাপসুল আমদানি করেছেন। যেটা খেয়ে ফেললে ভেতরে গিয়ে ক্যামেরা কাজ করবে। ভেতরের সব অবস্থান ক্যামেরাবন্দি হবে। আমি তার সর্বশেষ অবস্থা জানি না, তবে যতটুকু জানি তার শারীরিক অবস্থা আগের চাইতে কিছুটা উন্নতি হয়েছে। এখানে তিনি যতোটুকু সম্ভব সুচিকিৎসা পাচ্ছেন। সেখানে সরকারের কোনো হাত নেই, তারা যেভাবে চান সেভাবে তার চিকিৎসা হচ্ছে।

নির্বাচন কমিশন গঠন সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদে বলা আছে যে, নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন মহামান্য রাষ্ট্রপতি। গত দুইবার নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে একটা সিদ্ধান্তে এসেছিলেন যে, সার্চ কমিটির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠন হবে। দলগুলো নামগুলো দিতে পারবেন।

১০টি নাম সার্চ কমিটির সুপারিশ করতে পারবে, সেই দশটি নাম থেকে পাঁচজনকে রাষ্ট্রপতি প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ নিয়োগ দেবেন। এটা অ্যাক্টের ওপরে হয়েছে, এটা আইন না। এটার ওপরে দুটি নির্বাচন হয়েছে।

তবে আমিও মনে করি, আইন হওয়া উচিত। সুজনের প্রতিনিধিও গিয়েছিল। আমি বলেছি পরিস্কার, বলেছি নির্বাচন কমিশন সংক্রান্ত আইন হওয়া দরকার। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে সব সংসদ সদস্যকে সংসদে পাচ্ছিলাম না। তাই সংসদ সদস্যদের পাশ কাটিয়ে কোনো অর্ডিন্যান্স করবো না।

মহামান্য রাষ্ট্রপতি ইতোমধ্যে সংলাপ শুরু করেছেন। ১৫ ফেব্রুয়ারি এই নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। এরমধ্যে যেহেতু সংসদ আইন করতে পারবে না। আগে যে পদ্ধতিতে হয়েছে সেই নিয়মে হতে পারে, অথবা ছয় সদস্যের সার্চ কমিটি রয়েছে। এই কমিটি নির্বাচন কমিশন ১০ জনকে নির্বাচন করে রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাতে পারেন। সব নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল নাম পাঠাতে পারেন আমি মনে করি নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে কোন বিতর্কের অবকাশ নেই।

বিচারপতি নিয়োগে কোন বিষয় প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে কিনা প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, বিচারপতি নিয়োগে রাষ্ট্রপতি তার সুবিবেচনা ও আইন অনুযাযী ক্ষমতার প্রয়োগ করে যা ভাল মনে হবে তাই সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে আমি মনে করি, আপিল বিভাগে অনেকেই প্রধান বিচারপতি হবার যোগ্যতা রয়েছে। আর সরকারে এসব নিয়ে কোনো চিন্তায় নেই।

এদিকে এর আগে টানা ২৬ দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থেকে বাড়ি ফিরেছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। কিন্তু এর এক সপ্তাহ যেতে না যেতেই আবারও শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয় তাকে। আর সেই থেকে হাসপাতালে রয়েছেন তিনি।

About

Check Also

মারা যায়নি আবু সাঈদ, আছেন ফ্রান্সে রনির এমন মন্তব্যে নিয়ে যা জানা গেল

সম্প্রতি টিকটকে পটুয়াখালী-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনির একটি ভিডিও শেয়ার করা হয়। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *