বাংলাদেশের ( Bangladesh ) আয়তন ছোট হলেও জনসংখ্যার দিক থেকে বিশ্বের অনেক দেশের তুলনায় ঘনত্ব অনেক বেশি। বাংলাদেশ বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে এখন শীর্ষে রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ( Sheikh Hasina ) দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশের ( Bangladesh ) উন্নয়নের ধারা দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে। অর্থনৈতিক দিক দিয়ে বাংলাদেশ অনেক এগিয়েছে। দেশকে এবার বিভাগ সৃষ্টি করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনা ( Sheikh Hasina. Sheikh Hasina ) প্রশাসনিক বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে বিকেন্দ্রীকরণের বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়েছেন এখানে।
ঢাকা বিভাগ ভেঙে পদ্মা নদীর নাম অনুসারে বৃহত্তর ফরিদপুরের পাঁচটি জেলা নিয়ে ‘পদ্মা’ নামে একটি নতুন বিভাগ গঠন করা হচ্ছে। একইভাবে চট্টগ্রাম বিভাগ ভেঙ্গে মেঘনা নদীর নাম অনুসারে বৃহত্তর কুমিল্লা ও নোয়াখালীর নতুন ছয়টি জেলার ‘মেঘনা’ নামে অন্য একটি নতুন বিভাগ করা হচ্ছে। এই প্রথম পদ্মা-মেঘনা নামে দেশের বড় দুটি বিভাগ হতে যাচ্ছে। প্রস্তাবিত পদ্মা বিভাগের সদর দপ্তর হবে ফরিদপুরে এবং মেঘনা বিভাগের সদর দপ্তর হবে কুমিল্লায়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আগামীকাল সকাল ১০টায় তার কার্যালয়ে প্রশাসনিক পুনর্গঠন সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির (নিকার) সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।সেখানে এ বিভাগ দুটির অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করার কথা। এছাড়াও, একটি নতুন পৌরসভার সীমানা নির্ধারণ এবং অন্য পৌরসভার সীমানা নির্ধারণসহ মোট ছয়টি এজেন্ডা সভায় উপস্থাপন করা হতে পারে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা বিভাগ ভেঙে প্রস্তাবিত বৃহত্তর ফরিদপুরের পাঁচ জেলা ফরিদপুর, শরীয়তপুর, রাজবাড়ী, গোপালগঞ্জ ও মাদারীপুর নিয়ে পদ্মা নদীর নামানুসারে এ বিভাগ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। আর এর সদর দফতর হবে ফরিদপুরে। ফরিদপুর জেলার আয়তন ২ হাজার ৭৩ বর্গকিলোমিটার। জনসংখ্যা ১৯ লাখ ৮৮ হাজার ৬৯৭। গোপালগঞ্জ জেলার আয়তন ১ হাজার ৪৬৮ দশমিক ৭৪ বর্গকিলোমিটার। জনসংখ্যা ১১ লাখ ৭২ হাজার ৪১৫। রাজবাড়ীর আয়তন ১ হাজার ১১৮ দশমিক ৮০ বর্গকিলোমিটার। জনসংখ্যা ১০ লাখ ১৫ হাজার ৫১৯। শরীয়তপুরের আয়তন ১ হাজার ৩৬৩ দশমিক ৭৬ বর্গকিলোমিটার। জনসংখ্যা ১১ লাখ ৫৫ হাজার ৮২৪। মাদারীপুরের আয়তন ১ হাজার ১২৫ দশমিক ৬৯ বর্গকিলোমিটার। জনসংখ্যা ১২ লাখ ১২ হাজার ১৯৮। ফলে পদ্মা বিভাগের মোট আয়তন হবে ৭ হাজার ১৪৯ দশমিক ৯৯ বর্গকিলোমিটার। মোট জনসংখ্যা ৬৫ লাখ ৪৪ হাজার ৬৫৩। সাক্ষরতার হার ৪৮ দশমিক ৯ ভাগ।
বৃহত্তর কুমিল্লার তিনটি জেলাকে কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও চাঁদপুর এবং বৃহত্তর নোয়াখালীর তিনটি জেলা নোয়াখালী, ফেনী ও লক্ষ্মীপুরসহ মোট ছয়টি জেলা নিয়ে মেঘনা নদীর নামে ‘মেঘনা’ বিভাগ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এর সদর দপ্তর হবে কুমিল্লায়। তবে বিভাগ নিয়ে গণশুনানিতে নোয়াখালীর নেতারা প্রস্তাবিত মেঘনা বিভাগ নিয়ে আপত্তি জানান। অন্যদিকে কুমিল্লার সর্বস্তরের মানুষ তাদের বিভাগের নাম কুমিল্লার নামে রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে বারবার অনুরোধ করেছেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাতে রাজি হননি। গত বছরের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ-একনেকের নির্বাহী কমিটির সর্বশেষ বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, নতুন দুটি বিভাগের নাম পদ্মা ও মেঘনা নদীর নামে করা হবে, কোনো জেলার নামে নয়। একনেক সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এ তথ্য জানান।
জানা গেছে, বর্তমানে বৃহত্তর কুমিল্লা ও বৃহত্তর নোয়াখালীর ছয় জেলায় প্রায় দুই কোটি জনসংখ্যা রয়েছে। ওই ছয় জেলার আয়তন প্রায় ১৩,০০০ বর্গ কিমি, যা ইতিমধ্যে প্রতিষ্ঠিত সিলেট, বরিশাল ও রংপুর বিভাগের জনসংখ্যা ও আয়তনের প্রায় দ্বিগুণ। কুমিল্লায় প্রায় সব ধরনের সরকারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। প্রশাসনের বিকেন্দ্রীকরণের লক্ষ্যে কুমিল্লাকে ভাগ করা হলে ঢাকা ও চট্টগ্রামের ওপর জনগণের চাপ কমবে। ঢাকা শহরে অতিরিক্ত মানুষের চাপ থাকবে না। সেখানে যানজটও কমবে।
কুমিল্লা ঢাকা ও চট্টগ্রামের মধ্যে অবস্থিত। পূর্ণাঙ্গ আবাসিক জেলা হিসেবে কুমিল্লার সুনাম রয়েছে। রাজধানী ও বন্দরনগরীর ওপর চাপ কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এ নগরী। কুমিল্লাও বৃহত্তর কুমিল্লা এবং নোয়াখালীর ছয় জেলার মধ্যে অবস্থিত। ভৌগলিক ও উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে কুমিল্লা একটি অত্যন্ত সমৃদ্ধ জনপদ। এই ছয় জেলার মানুষের সঙ্গে সড়ক, রেল ও নদীপথে যোগাযোগ খুবই মসৃণ। বেশিরভাগ দাপ্তরিক কাজে ছয় জেলার মানুষ কুমিল্লায় জড়ো হয়। সারাদিন কাজ করে বাসায় ফিরে আসা সম্ভব। ছয় জেলার মানুষের আঞ্চলিক ভাষাও কাছাকাছি।
প্রধানমন্ত্রীর নতুন বিভাগ সৃষ্টির উদ্যোগকে সাধুবাদ জানালেন ওই এলাকার নেতারা। কিন্তু নামকরণ নিয়ে কিছুটা আপত্তি জানান তারা। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়ে দিয়েছেন তার নির্ধারিত নামে নামকরণ করা হবে। পদ্মা ও মেঘনা যেহেতু নদীর নাম সেহেতু একই নামে বিভাগের নাম হলে অনেকের দ্বিমত রয়েছে বলে জানান ওই নেতারা।