আবার বরিশালে খুজে পাওয়া গেল একটি আয়রণ ব্রিজ। যেটি রিতিমত আলোড়ন সৃষ্টি করে দিয়েছে সারা দেশে। বিশেষ করে এই ব্রিজটির নির্মানে খরচ হওয়া টাকা নিয়েই হচ্ছে নানা ধরনের আলোড়ন।যেখানে শুধু চারটি লোহার খুটি পুঁতে রাখা হয়েছে। তার ওপরে স্থানীয়রা কাঠ, বাঁশ, সুপারি গাছ দিয়ে চলাচল করেছেন। তবে ওই ব্রিজের সামনেই বসানো ছিল উদ্বোধন ফলক। যেখানে ব্রিজটির নির্মাণ ব্যয় এক লাখ টাকা উল্লেখ করা হয়েছে।
উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নের গরদ্বার গ্রামের খলিল মোল্লার বাড়ির সামনের খালে এমন আয়রন ব্রিজের খোঁজ মেলে। এর আগে, গতকাল মঙ্গলবার উপজেলার পূর্ব উদয়কাঠি গ্রামে মুন্সি বাড়ির সামনের খালে আয়রন ব্রিজের স্থলে সুপারি গাছের সাঁকো নির্মাণের অভিযোগ পাওয়া যায়। বিষয়টি নিয়ে কালের কণ্ঠে ‘এটিই লাখ টাকার ব্রিজ’ শিরোনামে সংবাদ প্রাকাশ হয়।
গরদ্বার গ্রামের বাসিন্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য খলিল মোল্লা অভিযোগ করেন, তার বাড়ির সামনের খালে এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে বরিশাল জেলা পরিষদ থেকে ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে একটি আয়রন ব্রিজ নির্মাণের জন্য এক লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু ঠিকাদার শুধু মাত্র চারটি লোহার খুঁটি বসিয়েই বরাদ্দের লাখ টাকা উত্তোলন করে নিয়েছেন। পরে স্থানীয়রা ওই চার লোহার খুঁটির পাশে মেহেগিনি, বাঁশ, কাঠ, সুপারি গাছ দিয়ে সাঁকো সংস্কার করে চলাচল করছেন।
এদিকে, পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বিষয়টি প্রকাশ পাওয়ার পরে দুর্বৃত্তরা রাতের আধাঁরে ভিত্তিপ্রস্তর নামফলক দুটি ভেঙে ফেলেছে।
জেলা পরিষদের তৎকালীন প্রকৌশলী গোলাম মোস্তফা বদলি হয়ে বর্তমানে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) ঝালকাঠীর রাজাপুর উপজেলা প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত। এ বিষয়ে তিনি বলেন, কয়েক বছর আগের কথা। ঠিকমতো সব কিছু মনে নেই। যতদূর মনে পড়ে বরিশাল জেলা পরিষদ থেকে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ওই দুই স্থানে আয়রন ব্রিজ নির্মাণের জন্য এক লাখ টাকা করে বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল। এরপর যথাযথ নিয়ম মেনে দরপত্র আহ্বান করা হয়। লটারির মাধ্যমে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ওই কাজ পায়। তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বা ঠিকাদারের নাম মনে নেই।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) বানারীপাড়া উপজেলা প্রকৌশলী হুমায়ুন কবির জানান, নির্মাণকাজটির তদারকির দায়িত্ব পালন করেছেন জেলা পরিষদের একজন প্রকৌশলী। এখানে তার (উপজেলা প্রকৌশলী) কোনো দায়িত্ব ছিল না। তবে ছোট খালে একটি আয়রন ব্রিজ লোহার খুঁটি, ভিম ও রড-সিমেন্টের ঢালাই স্লাব দিয়ে এক লাখ টাকা বরাদ্দে নির্মাণ করা সম্ভব।
এ দিকে এই ঘটনায় রিতিমত সমালোচনা শুরু হয়েছে সারা দেশে। আর এই কারনে এ নিয়ে এখন বেশ খোজ খবর করা হচ্ছে সেখানে। খোজ নিয়ে জানা গেছে, বরিশাল জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার শাখার উপপরিচালক (ডিডিএলজি) মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, ব্রিজ-সংক্রান্ত কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। তবে কাজে কোনো অনিয়ম হয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।