সমগ্র দেশে আজ হতে আরম্ভ হয়েছে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট ও সমমানের পরীক্ষা। এই পরীক্ষায় এবার অনেক শিক্ষার্থী ঝরে পড়েছে বলে জানা গেছে। এদিকে বর্তমান বছরে স্কুল সার্টিফিকেট ও সমমানের পরীক্ষায সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থী ঝরেছে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ছয় জেলায় এমনটাই মনে করা হচ্ছ। এই বোর্ডে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল দুই লাখ ৫০ হাজার। তবে বোর্ডটিতে ৩৭ হাজার শিক্ষার্থী রেজিস্ট্রেশন করেও পরীক্ষার ফরম পূরণ করেননি, এমনটি জানা গেছে।
শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালী, চাঁদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও লক্ষ্মীপুর জেলার ২ লাখ ২০ হাজার ২৮৮ জন শিক্ষার্থী কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে রেজিস্ট্রেশন করেছে। কিন্তু ফরম পূরণ করেছেন ১ লাখ ৮৩ হাজার ৩৪৩ জন। রেজিস্ট্রেশন করেও ৩৭ হাজার শিক্ষার্থী পরীক্ষা কার্যক্রম থেকে সরে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে ছাত্রীর সংখ্যা ২৫ হাজারের অধিক। ঝরে পড়াদের হার ১৯ দশমিক ৭ শতাংশ ছাত্রী এবং ১২ দশমিক ৪ শতাংশ ছাত্র। আবার শহরের চেয়ে গ্রামের শিক্ষার্থীরা বেশি ঝরে পড়েছে। এ ছাড়া ২০২১ সালের তুলনায় ২০২২ সালে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৩০ হাজার কমেছে।
কেন এত শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেনি এ বিষয়ে বিভিন্ন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, সহকারী শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবারের এসএসসি পরীক্ষায় সবচেয়ে বেশি ফরম পূরণ করেনি মেয়েরা। এসব মেয়ের বেশির ভাগই গ্রামের স্কুলের। বাল্যবিবাহ, শিক্ষায় অমনোযোগী, দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধি, অভিভাবকদের বেহাল অবস্থা।
দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে কুমিল্লার বিভিন্ন উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের অভিভাবকরা মেয়েদেরকে বিয়ে দিচ্ছেন। আর ছেলেদের এই বয়সে রোজগারের জন্য শহরের বিভিন্ন কারখানায় কাজ করতে পাঠানো হয়েছে ।
ড. মো. আসাদুজ্জামান যিনি কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি এ বিষয়ে বলেন, শুধু বাল্যবিবাহের কারণে এমনটি ঘটেছে বললে ভুল হবে, এই কারনে যে শিক্ষার্থীরা ঝরে পড়ছে সেটা সরাসরি বলা ঠিক হবে না। অনেক পরীক্ষার্থী বিদেশে গিয়েছেন রোজগার করার জন্য, বা দেশের মধ্যে কেউ কেউ চাকরি খুঁজছে কিংবা অনেকে ভিন্ন কোনো কাজ বেঁচে নিয়েছে যার কারণে এমনটা হয়েছে।