Wednesday , November 20 2024
Breaking News
Home / Countrywide / শর্টগান হাতে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করলেন চেয়ারম্যানের ড্রাইভার

শর্টগান হাতে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করলেন চেয়ারম্যানের ড্রাইভার

লক্ষ্মীপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও লাঠিপেটা করা হয়েছে। এ সময় সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম সালাহ উদ্দিন টিপুর গাড়িচালক রাসেল শর্টগান নিয়ে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দেয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তার একটি ছবি ছড়িয়ে পড়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চেয়ারম্যানের এক শুভাকাঙ্খী জানিয়েছেন, অস্ত্রটি উপজেলা চেয়ারম্যানের নামে লাইসেন্সকৃত।

শুক্রবার (২ আগস্ট) দুপুর ২টার দিকে লক্ষ্মীপুর শহরের তমিজ মার্কেট এলাকায় উপজেলা চেয়ারম্যান টিপুর বাড়িতে যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া করে। জুমার নামাজের পর চক বাজার এলাকায় শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ঠেকাতে নেতাকর্মীদের নিয়ে অবস্থান নেন টিপু। এরপর তারা শিক্ষার্থীসহ মুসল্লিদের ধাওয়া দেয়। ঘটনার সময় চেয়ারম্যানের সরকারি গাড়ি মসজিদের সামনে ছিল। সেখান থেকে গাড়িটি নিয়ে যাওয়া হয় তমিজ মার্কেট এলাকায় তার বাসায়। সেখানে চালক রাসেল অস্ত্র নিয়ে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করেন। অস্ত্র হাতে ধাওয়ার বিষয়ে জানতে গাড়িচালক রাসেলের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি।

টিপু জেলা আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি। ২০২১ সালের ৩ অক্টোবর যুবলীগের কমিটি বিলুপ্ত হওয়ার পর লক্ষ্মীপুর জেলায় নতুন কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। যুবলীগের বিভিন্ন ইউনিটের দায়িত্বে এখনো তার অনুসারীরা রয়েছেন। এ বিষয়ে সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম সালাহ উদ্দিন টিপু বলেন, আমরা আন্দোলনে মাঠে থাকলেও দোষ, না থাকলেও দোষ। স্থানীয় প্রশাসনের অনুরোধে আমরা মাঠে ছিলাম। লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়াছিন ফারুক মজুমদার বলেন, ঘটনার সময় অস্ত্রহাতে কাউকে চোখে পড়েনি। এখন ফেসবুকে দেখছি। তার নাম-পরিচয় জানা নেই। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, উপজেলা চেয়ারম্যান টিপু চক বাজার জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে তিনি নেতাকর্মীদের নিয়ে নামাজ পড়তে আসে। নামাজ শেষে তিনি নেতাকর্মীদের নিয়ে বের হয়ে মুসল্লিদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন এবং দ্রুত বাসায় চলে যেতে বলেন। এ সময় তার সঙ্গে থাকা যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। স্লোগান দিতে দিতে তারা সাধারণ মুসল্লি ও শিক্ষার্থীদের মসজিদের সামনে থেকে বাজারের বিভিন্ন সড়ক পর্যন্ত ধাওয়া করে। পরে তারা মিছিল নিয়ে তমিজ মার্কেট এলাকায় টিপুর বাড়ির ভেতরে অবস্থান নেয়। এদিকে যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মিছিল শেষে বাজার ব্রিজ থেকে মিছিল নিয়ে বের হয় বৈষম্যবিরোধী কর্মীরা। মিছিলটি চকবাজার মসজিদের সামনে গেলেই শিক্ষার্থীরা ‘ভুয়া’, ‘ভুয়া’ স্লোগান দিতে থাকে। তারা উপজেলা চেয়ারম্যানের বাড়ির সামনে গেলে মিছিল থেকে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতারা পুলিশের বাধা ভেঙে লাঠিসোঁটা নিয়ে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করে। এসময় তারা শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেলও ছুড়ে মারে। তাদের মধ্যে সাত-আটজন শিক্ষার্থীকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আহত করা হয়। শিক্ষার্থীদের ইটপাটকেলে ছাত্রলীগের দুই সদস্য আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

About Nasimul Islam

Check Also

ট্রাইব্যুনাল থেকে বের হয়ে ‘আয়নাঘর’ নিয়ে মুখ খুললেন জিয়াউল আহসান

জুলাই-আগস্টের গণহত্যায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনসহ আট কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *