ঢাকার সাভারের আশুলিয়া এলাকায় গত সপ্তাহে এক ছাত্রের হাতে এক শিক্ষক প্রয়ানের ঘটনায় ক্লাস এক সপ্তাহ বন্ধ থাকার পর আবার শুরু হয়েছে। হাজী ইউনুস আলী কলেজ একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেখানে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের পড়ানো হয়। গত শনিবার এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রের হামলায় এক শিক্ষক প্রয়াত হন।
সাভারের আশুলিয়ায় হাজী ইউনুস আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারের প্রাণনাশের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বোর্ড। অনুমতি ছাড়া নিম্ন-মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক স্তরে পাঠদানের বিষয়ে সাত কার্যদিবসের মধ্যে অধ্যক্ষের কাছে স্পষ্ট ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। বুধবার (৬ জুলাই) ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক অধ্যাপক আবু তালেব। মোয়াজ্জেম হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। গত ৩০ জুন সংগঠনের অধ্যক্ষ সাইফুল হাসানকে নোটিশ পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।অধ্যক্ষ সাইফুল হাসান বলেন, ঈদের ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে এসেছি। ঢাকা শিক্ষা বোর্ড আমাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠিয়েছে। কলেজের এক শিক্ষক তার মোবাইল ফোনে বিষয়টি আমাকে জানান। তাকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। এর আগে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড থেকে একটি তদন্ত দল আসে। তারা এ বিষয়ে রিপোর্ট করেছেন।
তিনি আরও বলেন, উৎপল স্যারের বিচারকে ভিন্ন খাতে নিয়ে যাওয়ার জন্য বড় ধরনের ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। উপজেলার অনুমতি সাপেক্ষে সকল বিদ্যালয় পরিচালিত হয়। এতদিন আমরা শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে আসছি, উপবৃত্তি পাচ্ছি। এখন পর্যন্ত শিক্ষা বোর্ড আমাদের থামতে বলেনি। মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, আমরা হাজী ইউনুস আলী কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছি। নিম্ন ও মাধ্যমিক স্তরে তিনি কোথায় এবং কীভাবে পাঠদানের অনুমতি পেয়েছেন তার ব্যাখ্যা আমরা চেয়েছিলাম। কারণ সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রদর্শনীর সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২৫ জুন কলেজ চত্বরে মেয়েদের ক্রিকেট খেলার সময় শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারকে পিটিয়ে আহত করে দশম শ্রেণির ছাত্র আশরাফুল ইসলাম জিতু। সোমবার সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার প্রয়ান হয়। ঘটনার দিনই প্রয়ানের বড় ভাই অসীম কুমার সরকার বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় একটি প্রাণনাশের মামলা করেন। গত ২৯ জুন কুষ্টিয়ার কুমারখালী থেকে জিতুর বাবা উজ্জ্বল হোসেনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। একই রাতে গাজীপুর থেকে জিতুকেও গ্রেপ্তার করা হয়। পরে আদালত উভয়ের ৫ থেকে ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড শেষে গত ৬ জুলাই আদালতে উৎপলকে প্রাণনাশের কথা স্বীকার করেন ওই শিক্ষক।