Friday , November 15 2024
Breaking News
Home / Countrywide / শিক্ষকতো না যেনো টাকার কুমির, শেষমেষ ধরা পড়লেন দুদকের জালে

শিক্ষকতো না যেনো টাকার কুমির, শেষমেষ ধরা পড়লেন দুদকের জালে

একজন শিক্ষক হলো শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যত গড়ার কারিগড়। শিক্ষকররা তাদের শিক্ষা শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিলিয়ে দিয়ে তাদের মানুষের মত মানুষ করে তোলে। শিক্ষার্থীরা সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে দেশ ও জাতির নাম উজ্জল করে থাকে। তবে একজন শিক্ষক যদি অসাধু উপায়ে কোটো কোটি টাকার মালিক হয় তাহলে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যত পড়বে হুমকির মুখে। সম্প্রতি জানা গেছে একজন সহকারী শিক্ষক সনদ বাণিজ্যে কোটিপতি বনে গেছেন।

সনদ বাণিজ্যে কোটিপতি হয়েছেন রাজশাহীর সাবেক সহকারী শিক্ষক আবুল হাসনাত। কামরুজ্জামান মুকুল (৪৬)। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) জালে ধরা পড়েন তিনি।

গত ২৫ আগস্ট তার বিরুদ্ধে ১ কোটি ৮৪ লাখ ৫৩ হাজার ৯৮৪ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করে দুদক। এ মামলাটি দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে নথিভুক্ত করা হয়েছে। মামলা নম্বর-১১। মামলার বাদী জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আমির হোসেন।

অভিযুক্ত আবুল হাসনাত মোঃ কামরুজ্জামান রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার নন্দনগাছি জোতকার্তিক এলাকার মৃত আবুল হোসেনের ছেলে। বর্তমানে তিনি সপরিবারে রাজশাহী নগরীর দড়িখারবোনা এলাকায় থাকেন। মোঃ কামরুজ্জামান চারঘাটের জোতকার্তিক বিএন উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ছিলেন।

রোববার (২৮ আগস্ট) সকালে মামলার বাদী আমির হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, সাবেক সহকারী শিক্ষক মো. কামরুজ্জামান মুকুলের বিরুদ্ধে রাজশাহী মহানগরীতে সনদ বাণিজ্য করে এক দশকে শত শত কোটি টাকার মালিক হওয়ার অভিযোগ ওঠে।

তদন্ত শেষে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সাবেক উপ-সহকারী পরিচালক সুদীপ কুমার চৌধুরী তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। গত বছরের ৪ জানুয়ারি দুদকে জমা দেওয়া সম্পদের বিবরণীতে ওই শিক্ষক উল্লেখ করেন, তার স্থাবর সম্পদ রয়েছে ৪৬ লাখ ৫০ হাজার ৯০০ টাকা এবং অস্থাবর সম্পদ রয়েছে ১৬ লাখ ৩৩ হাজার ৫০ টাকা।

কিন্তু তার দাখিল করা সম্পদ বিবরণী যাচাই-বাছাই করে ওই শিক্ষকের নামে ১ কোটি ৭২ লাখ ১২ হাজার ৪৪৭ টাকার স্থাবর ও ৪২ লাখ ৩৫ হাজার ৫০২ টাকার স্থাবর সম্পদের সন্ধান পায় দুদক।

১ কোটি ৫১ লাখ ৬৩ হাজার ৯৯৯ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেন ওই শিক্ষক। তিনি জেনেশুনে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য প্রদান করেছেন, যা দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ধারা ২৬(২) এর অধীনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

অন্যদিকে মো. কামরুজ্জামান মুকুলের আয়কর নথি ও অন্যান্য নথি অনুযায়ী তার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের মোট মূল্য ২ কোটি ১৪ লাখ ৪৭ হাজার ৯৪৯ টাকা। তবে ঋণের পরিমাণ ১৩ লাখ ৭২ হাজার ৩৯৯ টাকা। ঋণ বাদে তার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের মূল্য দাঁড়ায় ২ কোটি ৭৫ হাজার ৫৫০ টাকা।

যদিও ওই শিক্ষকের বৈধ আয় ২৯ লাখ ৫৯ হাজার ৩৭২ টাকা। পারিবারিক ব্যয় ১৩ লাখ ৩৭ হাজার ৮০৬ টাকা বাদে তার বৈধ সঞ্চয়ের পরিমাণ মাত্র ১৬ লাখ ২১ হাজার ৫৬৬ টাকা। তার 1 কোটি ৮৪ লাখ ৫৩ হাজার ৯৮৪ টাকার সম্পদ অর্জন করা আয়ের জ্ঞাত উৎসের সাথে অসামঞ্জস্যপূর্ণ, যা দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ধারা ২৭(1) এর অধীনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এদিকে একই অপরাধে তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে পৃথক মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে মামলার বাদী জানান।

প্রসঙ্গত, বাবা-মায়ের পরেই হলো শিক্ষকের স্থান। একজন শিক্ষকের আদর্শেই আদর্শিত হয় শিক্ষার্থীরা। তবে তারা যদি শিক্ষকদের এমন দুর্নীতিমূলক কাজ করতে দেখে তাহলে তাদের মনবোল ও আত্মবিশ্বাসও খুব খারাপভাবে প্রভাবিত হয়ে থাকে।

About Shafique Hasan

Check Also

উপদেষ্টা পরিষদেই বৈষম্য

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে আঞ্চলিক বৈষম্যের অভিযোগ উঠেছে। ২৪ সদস্যের এই পরিষদে ১৩ জনই চট্টগ্রাম …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *