সিলেটে হযরত শাহজালাল (রহ.) এর মাজারে হাফপ্যান্ট পরা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
সম্প্রতি এমন নিষেধাজ্ঞা দিয়ে মাজার এলাকার সাইনবোর্ড টানা হয়। ৭০০ বছরের পুরনো এই দরগায় এই প্রথম এমন নিষেধাজ্ঞা জারি হল।
হযরত শাহজালাল ১৩০৩ সালে সুলতান শামসুদ্দিন ফিরোজ শাহের শাসনামলে ইয়েমেন থেকে ৩৬০ জন সঙ্গী নিয়ে সিলেটে আসেন। তিনি ১৩৪০ সালে মারা যান। পরে তাকে যেখানে সমাহিত করা হয় সেটি শাহজালালের দরগাহ নামে পরিচিত।
শাহজালালের দরগাহ সব ধর্মের মানুষের কাছে পবিত্র স্থান হিসেবে পরিচিত। এই দরগায় প্রতিদিনই বিভিন্ন ধর্মের বিপুল সংখ্যক মানুষ মঙ্গল কামনায় আসেন। এছাড়াও এটি পর্যটকদের জন্য একটি আকর্ষণীয় স্থান। সিলেটে আসা পর্যটকরা শাহজালালের দরগায় যান।
শাহজালালের দরগায় আকস্মিকভাবে হাফপ্যান্টের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে অনেকেই একে সাধুবাদ জানিয়েছেন। তবে কেউ কেউ এই নিষেধাজ্ঞার সমালোচনা করেছেন কারণ এটি একটি পর্যটক আকর্ষণ।
এ বিষয়ে হযরত শাহজালাল (র.) মাজার মোতওয়াল্লী সারেকুম ফতেহ উল্লাহ আল আমান বলেন, শাহজালালের মাজার জিয়ারত করতে সব ধর্মের মানুষ আসেন। বিদেশি পর্যটকরাও আসেন। তবে সাম্প্রতিক সময়ে অনেক পর্যটক হাফপ্যান্ট পরে মাজারে আসছেন। এতে মাজারের পবিত্রতা নষ্ট হচ্ছে। এটা কখনোই কাম্য নয় কারণ এটি একটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। তাই মাজার এলাকায় হাফপ্যান্ট না পরার জন্য নিষেধাজ্ঞামূলক সাইনবোর্ড লাগানো হয়েছে।
মঙ্গলবার রাতে শাহজালাল মাজারে গিয়ে দেখা যায়, মাজারের গেটে টানানো সাইনবোর্ডে লেখা রয়েছে ‘হাফপ্যান্ট পরে মাজারের গেটে প্রবেশ করা যাবে না’। আদেশে, কর্তৃপক্ষ। এক ঘণ্টা এলাকায় অবস্থান করার পরও হাফপ্যান্ট পরে কাউকে মাজারে প্রবেশ করতে দেখা যায়নি।
এ বিষয়ে সিলেটের নাগরিক সংগঠক আব্দুল করিম কম বলেন, শাহজালাল মাজার সাধারণ পর্যটন এলাকা নয়। এটি একটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। বিশ্বের সব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের কিছু বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এটি সমস্ত পর্যটকদের অনুসরণ করা উচিত। শাহজালাল মাজারের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। এর পবিত্রতা এবং ধর্মীয় অনুভূতির প্রতি শ্রদ্ধা রেখে মাজারটি পরিদর্শন করা উচিত।
তবে পর্যটক রাহাত আমিন মাজার কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, শাহজালাল মাজার দেশি-বিদেশি পর্যটকদের জন্য একটি আকর্ষণীয় স্থান। সিলেটে আসা পর্যটকদের বেশির ভাগই আসেন এই মাজারে। অনেক বিদেশী পর্যটকও এখানে আসেন। ড্রেস কোড আরোপ করলে এখানে পর্যটক কমবে। এর মাধ্যমে বিদেশি ও ধর্মীয় পর্যটকদেরও নিরুৎসাহিত করা হবে। এটা কখনোই কাম্য নয়।