Thursday , November 14 2024
Breaking News
Home / Countrywide / শাহজালাল বিমানবন্দরের কর্মকর্তা কর্মচারীদের তালিকা করে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ বিমান প্রতিমন্ত্রীর

শাহজালাল বিমানবন্দরের কর্মকর্তা কর্মচারীদের তালিকা করে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ বিমান প্রতিমন্ত্রীর

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্যক্রম নিয়ে বর্তমান সময়ে ব্যপকভাবে সমালোচনা শুরু হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে বিমানবন্দরে যাত্রীরা ইদানিং অতিমাত্রায় হয়রানির শিকার হচ্ছেন যার কারনে বাংলাদেশের এই প্রধান বিমানবন্দরের সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে। এই হয়রানি পরিস্থিতি অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে এবং এই পরিস্থিতি ঠেকাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে বিমানের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং বিভাগ। বিমানবন্দরে বিমান চলাচলে দেখা দিয়েছে নানা ধরনের অনিয়ম। বর্তমান সময়ে বিমানবন্দর থেকে ফ্লাইটগুলো ছেড়ে যেতে অনেক বিলম্ব করছে। ফিরতি যে সকল ফ্লাইটে যাত্রীরা দেশে ফিরছেন তাদের লাগেজ পাওয়ার জন্য বিমানবন্দরে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে। দীর্ঘক্ষন অপেক্ষা করার পরেও জটিলতায় পড়ছেন যাত্রীরা। এক বেল্টের লাগেজ স্থানান্তর হচ্ছে অন্য এক বোল্টে। যে এয়ারলাইন্স ব্যবহার করে যাত্রীরা আসছে সেটার বেল্ট থেকে লাগেজ স্থানান্তর হচ্ছে অন্য বেল্টে।

পর্যাপ্ত ট্রলি থাকলেও প্রয়োজনের সময় পাওয়া যাচ্ছে না। যাত্রীদের বোডিং কার্ড ইস্যু নিয়ে চলছে অব্যবস্থাপনা। সব মিলে প্রতিদিনই যাত্রীসেবার মানের অবনতি হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, পুরো অব্যবস্থাপনার জন্য দায়ী বিমানের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং বিভাগ। এ বিভাগের কর্মীদের অভিযোগ পর্যাপ্ত জনবলের অভাবে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। পুরো অচলাবস্থার জন্য তারা বিমানের প্রশাসন বিভাগের এক শীর্ষ কর্মকর্তাকে দায়ী করেছেন। তাদের অভিযোগ, বিষয়টি নিয়ে তারা ২ মাস আগে প্রশাসন বিভাগের ওই কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেন। শাহজালালে রাতের ফ্লাইট বন্ধ হয়ে গেলে পরিস্থিতি সামলানো কঠিন হবে বলেও তাকে সতর্ক করা হয়েছিল। কিন্তু ওই কর্মকর্তা বিষয়টি আমলেই নেননি।

অভিযোগ আছে, তিনি ব্যস্ত ছিলেন বিমানের নিয়োগ, পদোন্নতি আর কর্মীদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ও বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণে। যার কারণে পুরো গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সার্ভিস লেজেগোবরে অবস্থায় পরিণত হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, দ্রুত এই পরিস্থিতি উত্তরণের তেমন উপায় নেই।

বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলোর অভিযোগ, বিমানের অব্যবস্থাপনার কারণে ফ্লাইট ছাড়তে দেরি হওয়ায় প্রতিদিনই তাদের জরিমানা করছে সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ। তারা বলছেন, এভাবে কোনো কারণ ছাড়া বিলম্ব চার্জ নেওয়া হলে ফ্লাইট গুটিয়ে ফেলতে বাধ্য হবেন। একই সঙ্গে তারা বলেছেন, বোর্ডিং কার্ড ইস্যু করার কথা বিমানকর্মীদের। কিন্তু তারা নিজস্ব জনবল দিয়ে এ সার্ভিস দিচ্ছেন। অথচ এজন্য বিমানকে টাকা দিতে হচ্ছে।

এদিকে বিমানবন্দরের পরিস্থিতি দেখতে বুধবার বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী ছুটে যান হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। তিনি সেখানে দায়িত্বরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেন। যাত্রীদের সঙ্গেও তিনি কথা বলেন। পরিদর্শন শেষে এক ব্রিফিংয়ে তিনি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কর্মরতদের মধ্যে যারাই দায়িত্বে অবহেলা করবেন তাদের তালিকা তৈরি করে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এজন্য বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে নির্দেশ দিয়েছেন।

দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে বিকাল পৌনে ৩টা পর্যন্ত ব্যাগেজ এরিয়া, কাস্টমস ও ইমিগ্রেশনসহ বিমানবন্দরের সার্বিক কার্যক্রম পরিদর্শনকালে তিনি এ নির্দেশনা দেন। এ সময় তিনি বিমানবন্দরের আগত যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেন। বিমানবন্দরে যাত্রীসেবা নিয়ে কোনো অভিযোগ আছে কিনা তাও জানতে চান।

যাত্রীদের ট্রলির তথ্য দেওয়ার জন্য প্রতিমন্ত্রী ব্যাগেজ এরিয়ার প্রত্যেকটি বেল্টে একজন করে ট্রলিম্যানকে দায়িত্ব দেওয়ার বিষয়ে বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালককে নির্দেশনা দেন। কাস্টমস ও ইমিগ্রেশনে কর্মরতদের দ্রুত এবং পেশাদারিত্বের সঙ্গে সেবা দেওয়ার নির্দেশ দেন।

তিনি জানিয়েছেন, যাত্রীরা যাতে করে দ্রুত সেবা পায়, সেটার দিকে লক্ষ্য দেওয়াটা এখন জরুরী হয়ে পড়েছে। কোনোক্রমেই সেবা যাতে বিঘ্নিত না হয় সে ব্যাপারে সমাধানে ব্যবস্থা নিতে হবে। যাত্রীদের যাতে দ্রুত সেবা প্রদান করা যায় সে বিষয়টি নিশ্চিত করার মাধ্যমে বিমানবন্দরে নিয়োজিত কর্মকর্তা এবং সকল সংস্থাকে এক হয়ে কাজ করতে হবে। চেকইন কাউন্টারে যে সকল দায়িত্বপ্রাপ্ত বিমান কর্মকর্তারা রয়েছেন তারা ঠিকঠা মতো তাদের দায়িত্ব পালন করছেন কিনা সেটার নিয়মিত তথ্য নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী।

তিনি আরো বলেন, যদি দায়িত্ব পালনে কেউ কোনো অনিয়ম কিংবা অবহেলা করে তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সময়মতো যদি দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা কর্মচারীরা কাউন্টারে না আসেন তাহলে তাদের আর চাকরি থাকবে না। যাত্রী সেবায় অবহেলা কোনোভাবে মেনে নেওয়া হবে না। কোনো অজুহাত মেনে নেওয়া হবে না।

About

Check Also

উপদেষ্টা পরিষদেই বৈষম্য

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে আঞ্চলিক বৈষম্যের অভিযোগ উঠেছে। ২৪ সদস্যের এই পরিষদে ১৩ জনই চট্টগ্রাম …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *