রাজশাহী জেলার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়া নিয়ে যে সময় ক্ষোভ-বিক্ষোভ নচলছে সেই সময় রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের এমপি আয়েন উদ্দিনের মোবাইলে কথা বলার একটি অডিও ভা’ইরাল হয়েছে। মোহনপুর উপজেলাধীন রায়ঘাটি ইউনিয়নে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি সুরঞ্জিত সরকারকে। সুরন্জিতের সাথে ঐ সাংসদের কথোপকথনের ২ মিনিট ৩২ সেকেন্ডের একটি অডিওতে দলীয় মনোনয়নের বিষয়টি ফাঁস হয়েছে। এই ঘটনার পর সেখানে নেতাকর্মীদের মাঝে আলোচনা সমালোচনা শুরু হয়েছে। সুরঞ্জিত সরকার মোহনপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের শ্রম সম্পাদক হিসেবে রয়েছেন। তিনি ২০১৬ সালের ইউপি নির্বাচনে দলের মনোনয়ন লাভ করেন।
অডিওতে শোনা যায়, সুরঞ্জিত সরকার ফোনে সংসদ সদস্য আয়েনকে বলছেন, ‘ভাই রাগ কইরেন না। এক মিনিট আমার কথা শোনেন।’ উত্তরে এমপি আয়েন বলছেন, ‘না, না। আমার কিছু করার নেই। কামাল ভাই (এসএম কামাল) সরাসরি রায়ঘাটি ও বড়গাছিতে প্রার্থী দিয়েছেন। কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের মৌখিক নির্দেশনায় করেছি। আপনি পারলে তার সঙ্গে কথা বলেন। আমি দুদু ভাইকে বলে দিয়েছি। আমি কিছু করতে পারব না।’ এরপর সুরঞ্জিত বলেন, ‘আপনি যদি একটু ভূমিকা নেন তাহলে, আমি ভোট করতে পারি ভাই।’ জবাবে এমপি আয়েন বলেন, ‘আমি কোনো ভূমিকা নেব না তো। আমি তো বলেছি।’ সুরঞ্জিত বলেন, ‘ভাই আমাকে ডেকে বলতেন। আমি আপনাকে শ্রদ্ধা করি।’ এমপি আয়েন বলেন, ‘শালা তোদের মতো ক্রিমিনাল আর একটিও নাই। শু’য়োরের বা’/চ্চা তোর এত বড় সাহস তুই এমপির বিরোধিতা করছিস। মেরাজ মোল্লাহ (জেলা আওয়ামী লীগের প্রয়াত সভাপতি) তোর বাপ ছিল, শালা ১৫ আগস্ট করত না।’ সুরঞ্জিত বলতে থাকেন, ‘ভাই আমাকে একটাবার সুযোগ দেন। আমি আপনাকে শ্রদ্ধা করি।’ জবাবে এমপি আয়েন, ‘না, না, না। হি’ন্দুরা তোকে দেখতে পারে না। তোর কোনো কথা আমি শুনব না। আমি কিছু করতে পারব না। তুই নৌকার জন্য কাজ কর, ভালো চাহিস তো।’
কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামালের নির্দেশে রায়ঘাটি ও বড়গাছিতে নির্দিষ্ট প্রার্থীর নাম পাঠানোর বিষয়ে জানতে চাইলে সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিন একটি সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, আমি কার সঙ্গে কী কথা বলেছি এখন মনে নেই। প্রার্থী মনোনয়ন দিয়েছে কেন্দ্র। আমি কোনো প্রার্থীর জন্য কাউকে কিছু বলিনি।
রোববার রাজশাহীতে এক সংবাদ সম্মেলনে সুরঞ্জিত সরকার বলেন, ২০১৬ সালে দল আমাকে মনোনয়ন দিয়েছিল। ইউনিয়ন সভাপতি খলিলুর রহমান আমার বিরু’দ্ধে বি’/দ্রো’হ করে ভোট করেন সেই সময়। এবার খলিল নিজে প্রার্থী না হয়ে তার কলেজ ছাত্র ছেলে বাবুল হোসেনকে মনোনয়ন দিয়েছেন। তবে তিনি আওয়ামী লীগ বা এর কোনো সহযোগী সংগঠনের কর্মী বা সদস্য নন।
সুরঞ্জিত ঐ বিষয়ে অভিযোগ করে বলেন, উপজেলা ও জেলা হতে রায়ঘাটি ইউনিয়ন পরিষদে প্রার্থী তালিকায় বাবুল হোসেনের নাম সর্বপ্রথমে রাখা হয়েছিল। এবং আমার নাম রাখা হয়েছে একদম শেষে, এসবই করার একটাই কারন আর সেটা হলো মনোনয়ন বাণিজ্যে। সুরঞ্জিত অশ্রুশিক্ত নয়নে বলেন, ‘রাজনৈতিক কারণে ৩ বার জেলে গিয়েছি। এলাকার যারা সাংসদ এবং নেতা রয়েছেন তারা শুধু টাকার জন্য দলের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই এমন ২৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে মনোনয়ন দিয়েছেন।